জেলায় বন্যাক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫ জন
মোট ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৮৫৬১জন
সারা জেলায় প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা ২১২টি
সাহায্যের পরিমান ২৮৫ মেট্রিক টন চাল ও ৪৫লাখ টাকা।
ধীরে ধীরে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও মৌলভীবাজার জেলার নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি মানুষের খাবার, শিশু খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দেওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে দ্বিগুণ। বিশেষ করে এ জেলার নদী ও হাওর তীরের মানুষজনের দুর্ভোগে সীমাহীন। মৌলভীবাজার সদরসহ জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। তাদের দুর্ভোগে চরমে পৌছাচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ক্ষেত-কৃষি সবকিছুই বানের জলগ্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত।তারা আরো জানান, গত বুধবার বিকাল থেকেই তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। সঙ্গে গবাদিপশুও রয়েছে। নিজের ও গবাদি পশুগুলোর খাবার নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায়। সবকিছু মিলিয়ে এখন পানি কমলেও সময়ের সাথে সাথে দুর্গতিও বাড়ছে।
জেলার হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওরের তীরবর্তী এলাকার বন্যা অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে। মনু, ধলাই, জুড়ি ও ফানাই নদের প্রায় ২০/২২টি স্পটে বাঁধ ভেঙে ও উপচে নদীর পানি প্রবেশ করে ফলে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
পাউবো জানিয়েছে, রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চাঁদনীঘাটে মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (ভবানীপুরে জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা কর্মকর্তার অফিস থেকে জানা যায়, সাত উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫ জন এবং ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৮৫৬১ জন। পৌরসভা ও ইউনিয়ন মিলে ৫০টি এলাকায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ২১২টি গ্রাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮৫ মেট্রিক টন চাল ও সাতটি উপজেলায় নগদ বরাদ্দ ৪৫ লাখ টাকা, এরমধ্যে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মেডিকেল টিম রয়েছে ৬২টি। মজুত করা ত্রাণের পরিমাণ নগদ ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চাল ১০৩৪ মেট্রিক টন।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। যেসব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে সেগুলোতে কাজ চলছে।’