একসময়ের সিপিবি নেতা কমরেড অপূর্ব কান্তি ধর মারা গেলেন। তিনি গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ২ ঘটিকার সময় ঢাকাস্থ স্কয়ার হসপিটালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৪৫ সালের ১ এপ্রিল তৎকালীন মৌলভীবাজার(বর্তমানে জেলা) মহকুমার বড়লেখা থানার অন্তর্গত জুড়ী(বর্তমানে জুড়ী উপজেলা) এলাকার উত্তর ভবানীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন উদয় চাঁদ ধর জুড়ী হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ।
তিনি ছিলেন বিরল নির্মোহ জীবন যাপনে অভ্যস্ত এক সত্যিকারের বিপ্লবী আদর্শে বিশ্বাসী সাম্যবাদী মানুষ। জেলার সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনে তিনি ছিলেন অগ্রপথিক। তার জ্ঞান, মেধা ও প্রজ্ঞার কারণে তাঁকে অনুপ্রেরণার বাতিঘরও বলা হতো। অশীতিপর এই রাজনীতিবিদ সবসময়ই হাসিখুশী ও প্রাণবন্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জেলার সর্বত্র নেমে আসে শোকের ছায়া। ৩ সেপ্টেম্বর’২৪ মঙ্গলবার বিকাল ৫ টায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
ছাত্রজীবনে তিনি প্রচন্ড মেধাবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন। দেশ ও মানুষের সেবার চিন্তা থেকে রাজনীতিকে জীবনের ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। দেশের কমিউনিস্ট রাজনীতিতে তিনি একজন প্রথম সারির নেতা ছিলেন।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। ভারতে বিভিন্ন ক্যাম্পে তিনি বক্তব্য দিয়ে তরুণদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠাতে উৎসাহ উদ্দীপনা দিতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ, কমিউনিস্ট ও ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত দলীয় গেরিলা বাহিনীতে কাজ করেছেন।
স্বাধীনতার পর থেকেই তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমা(বর্তমানে জেলা) কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছেন দীর্ঘদিন। নব্বইয়ের দশকে কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙ্গনের পর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগের মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহসভাপতির পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘৯৭এর দিকে আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও তিনি সকলের কাছেই সিপিবির ‘অপূর্বদা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।