সিলেটবাসীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরন
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
খাতায় আছে গোয়ালে নেই
গত ১৪ অক্টোবর সোমবার “ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে ফর ফুলি ফান্কশনাল ওসমানী ইন্টারন্যাশনেল এয়ার পোর্টে”র উদ্যোগে পূর্ব লণ্ডনের লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় যে-২০০২ সালে ওসমানী বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের পর লণ্ডন-সিলেট আকাশপথে সরাসরি উড়াল চালু করা হয়। অনেকবার সরাসরি উড়াল বন্ধ হয়েছে। আন্দোলন করার পর আবার চালু হয়েছে।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নামে আন্তর্জাতিক হলেও কাজে এখনো আন্তর্জাতিক হয়নি। একমাত্র বিমান ছাড়া অন্য কোন এয়ারলাইন্সকে ওসমানীতে নামতে দেওয়া হচ্ছেনা। অথচ চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রতি সপ্তাহে বিমান ছাড়াও ৭টি বিদেশী এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট উঠানামা করছে।
ওসমানী বিমান বন্দরে প্রবাসী বিমান যাত্রীদের হয়রানী এখনো কমেনি। আন্তর্জাতিক মানের কোন সেবা নেই। বিমানের চেক ইন কাউন্টারে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা হয়রানীর শিকার হোন।
বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারী বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সিলেটবাসীর সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে এ বৈষম্যমূলক আচরন করছে। বাংলাদেশ বিমানের শতকরা ৯৫ ভাগ যাত্রী সিলেট অঞ্চলের। বিমানের বেশীরভাগ যাত্রী সিলেটী হওয়ায় সিলেটীদের জিম্মী করে বিমানের ফেরৎভাড়া সিলেট পর্যন্ত কখনো ১৫০০, কখনো ১২০০, কখনো ১৮০০ পাউণ্ড পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অথচ সমান ফ্লাইটে ঢাকার যাত্রীদের জন্য ৮০০ পাউণ্ড ভাড়া নেওয়া হয়। এটা প্রবাসী সিলেটবাসীর প্রতি আরেক বৈষম্য। যার ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটীরা ছেলে মেয়েসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে দেশে যেতে পারেন না।
সম্মেলনে আরো বলা হয় যে, ওসমানী বিমান বন্দরে নতুন টারমিনাল নির্মাণের কাজ তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়েছিল ২০২০সালের অক্টোবর মাসে। বিগত চার বছরে কাজ হয়েছে মাত্র শতকরা ২২ভাগ। অথচ ঢাকার শাহজালাল বিমান বন্দরের কাজ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়ে তা শেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। এটাও সিলেটবাসীর প্রতি আরেকটি বৈষম্যমূলক আচরন।
বলা হয় যে-এক শ্রেণীর সিলেট বিদ্বেষী কুচক্রিমহল সিণ্ডিকেট তৈরি করে সিলেটবাসীকে হয়রানী করছে। অতীতের সব সরকার সিলেটবাসীর উপরোক্ত সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। প্রবাসে বেড়ে উঠা আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানরা বাংলাদেশে না গিয়ে তুরস্ক, মরক্কো, মিশর ও ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বিনোদনে যাচ্ছে। ফলে আমাদের সন্তানরা দেশমুখী হচ্ছেনা এবং বাংলাদেশ বিরাট অংকের আয় থেকে বন্চিত হচ্ছে। এ সমূহ কারণে সংগঠণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিম্নরূপ দাবী পেশ করা হয়েছে।
দাবী সমূহঃ-
১)ওসমানী বিমান বন্দরকে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর করতে হবে।
২) বাংলাদেশের জাতীয় এয়ার লাইন বিমান বাংলাদেশের পাশাপাশি বৃটিশ, তুরস্ক, কাতার, আমিরাত, দুবাই, ওমান, সৌদিআরব সহ অন্যান্য দেশের ফ্লাইট চালু করতে হবে।
৩) ওসমানী বিমান বন্দরের নতুন টারমিনালের কাজ দ্রূত সম্পন্ন করতে হবে।
৪) বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া হ্রাস করতে হবে এবং ঢাকা ও সিলেটের মধ্যে বিমানের ভাড়ার পার্থক্য দূর করতে হবে।
৫) ওসমানী ও শাহজালাল বিমান বন্দরে কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন সেকশনে প্রবাসী যাত্রীদের অহেতুক হয়রানী
বন্ধ করতে হবে।
সংগঠণের আহ্বায়ক কে এম আবুতাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠণের অর্থ সচিব সলিসিটর মোহাম্মদ ইয়াওর উদ্দিন। সংগঠণের পক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন -সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রব, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মো: মফিজুর রহমান, কাউন্সিলার ফারুক চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহবাব হোসেন চৌধুরী, শাহ মুনিম, জামান আহমদ সিদ্দিকী, মাহবুবুর রহমান কোরেশী, খন্দকার সাইদুজ্জামান সুমন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, আজম আলী, শাহ সেরওয়ান কামালী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, শেখ ফারুক আহমদ ও আনোয়ার জাকারিয়া খান প্রমুখ।