অতীতের দাস ব্যবসায় বৃটেনের ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য ক্ষতিপূরণ স্বরূপ ১৮ ট্রিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা আদায় করার প্রচেষ্টা। |
গত শুক্রবার ২৫ অক্টোবর দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়াতে আয়োজিত ৫৬ সদস্য রাষ্ট্রের কমনওয়েলথের এক বর্ণাঢ্য শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েগেলো। এ সম্মেলনে ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শার্লি আয়োরকর বোচওয়েকে সংস্থাটির নতুন মহাসচিব ঘোষণা করা হয়েছে। গত শনিবার এই শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়।
উল্লেখ্য, সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশের বেশিরভাগ স্বাধীন দেশ নিয়ে কমনওয়েলথ গঠিত। এ সম্মেলনে অনেক আফ্রিকান, ক্যারিবিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ ব্রিটেন ও অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিগুলোর কাছ থেকে উপনিবেশ আমলের ‘দাসত্বের’ জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ চায়। রাজনৈতিক সংশোধন করতে চায়। তারা চায় যুক্তরাজ্যের নেতারা যেন ন্যায়বিচার নিয়ে আলোচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। তারা ব্রিটেনের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে অর্থপূর্ণ, খোলামেলা ও সম্মানজনক আলোচনায় মিলিত হয়েছেন। তারা এ বিষয়ে এক পৃথক বিবৃতি দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু লন্ডনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিবিড় আলোচনার পর তারা আপাতত এই সম্মেলনের সমাপনী বিবৃতিতে এ সংক্রান্ত একটি ধারা বা অনুচ্ছেদ যোগ করাকেই যথেষ্ট মনে করছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চলের সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশভুক্ত বহু দেশ এমন কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে যাতে ব্রিটেনের অতীত আধিপত্য ও লুণ্ঠনের বিষয়ে মামলা দায়ের করা যায়। বিশেষ করে ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ও ‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও মূল্যবান’ শীর্ষক আন্দোলনসহ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী আন্দোলনগুলো জোরদারের প্রেক্ষাপটে এইসব প্রচেষ্টা নতুন করে জেগে উঠছে।
তবে অনুমান করা হচ্ছে যে, আফ্রিকার ও ক্যারিবিয় অঞ্চলের দেশগুলো এমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে যাতে দাস ব্যবসা নিয়ে ব্রিটেনের নিন্দনীয় ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণে দেশটির কাছ থেকে প্রায় ১৮ ট্রিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা আদায় করা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চলের সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশভুক্ত বহু দেশ এ নমুনারই কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে যাতে ব্রিটেনের অতীত আধিপত্য ও লুণ্ঠনের বিষয়ে মামলা দায়ের করা যায়।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সামোয়াতে বলেছেন, দাসপ্রথার ইতিহাসের বিষয়ে সম্মেলনে শরিকদের শক্তিশালী অনুভূতির বিষয়টি তিনি অনুভব করছেন, কিন্তু বাস্তবতা ও অভিন্ন অতীত মেনে নেয়া উচিত।
ব্রিটেন এ পর্যন্ত দাসপ্রথার ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবিগুলোর বিষয়ে কৌশলে বিরুধীতা করে আসছে এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরও সামোয়া সম্মেলনের আগে বলেছেন যে, ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আলোচ্যসূচীতে নেই।