হারুনূর রশীদ।।
লন্ডন, রবিবার ২৩শে অক্টোবর ২০১৬:
(পরের অংশ) সেই মার্কিন মুল্লুক আমেরিকায় মানুষের দরজার সামনেই নির্বাচন হাজির হয়েছে আবার। শুরু হয়েছে নির্বাচনকে সামনে রেখে লঙ্কাকান্ড। মিথ্যার বেশাতি। বেশাতি এমন নমুনায়ই যে কে হারে কে জিতে আগাম বলা মুষ্কিল। যে দু’জন রথি ট্রাম্প আর হিলারী দাঁড়িয়েছেন তাদের কাউকেই আমার মত কোটি কোটি সাধারণ মানুষ চেনেনা, জানেনা। আমাদের চৌদ্দ পুরুষেও এদের জানার কথা নয়। আমাদের জানার প্রয়োজনও তেমন আছে বলে আমার মনে হয় না। হয়তো কথা আসতেই পারে যে যদি চেনা-জানার কোন প্রয়োজনই নেই তা’হলে স্বয়ংবর হয়ে বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছো কেনো? অর্থাৎ লিখতে যাচ্ছো কেনো? হ্যাঁ, এখানে একটি উত্তর আছে। লিখতে হয় এ কারণেই যে দুনিয়াটা শুধুই তাদের নয়। এসব গুটি কয়েক লোকেরা তাদের ইচ্ছেমত নর্তন-কুর্দন করবে, তাদের সুবিধেমত মিথ্যা বলবে, প্রয়োজনে যুদ্ধ বাঁধাবে, লক্ষ লক্ষ শিশু, কিশোর, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করবে; পরিকল্পিতভাবে জনপদের পর জনপদ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাঁই করে দেবে; তাদের মারণাস্ত্রের ক্ষমতা পরীক্ষা করবে মানুষের উপর আর আমরা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবো, কিছুই বলবো না। তাতো হয় না। এই একটি কারণে লিখতে হয়, প্রতিবাদ করতে হয়। শুধু তাই নয়, এদের মত নরপশুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কোন সুযোগ থাকলে আমি সেই যুদ্ধে সকলের আগে যেতে সদা প্রস্তুত। আমার এ ক্ষুদ্র লিখায় কতটুকু কাজ হবে তা আমি নিজেই জানিনা। তবে এটুকু জানি যে এটিই সুশীল সংবেদনশীল মানুষের কাজ আর এ কাজ চালিয়ে যেতেই হবে।
আমেরিকায় নির্বাচন। তা আমাদের কি হল। ওদের নির্বাচন ওরা করুক। ওদের নেতা ওরা বানাবে। দুনিয়ার অন্য একপ্রান্তে পড়ে থাকা অতীব ক্ষুদ্র এই আমি বা আমার মত অগনিত সাধারণ মানুষের কি আসে যায়? আসে যায়। ব্যক্তি হিসাবে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন ক্ষতি বা লাভ দেখতে পাওয়া না গেলেও সমষ্টি তথা জাতি হিসাবে সর্বোপরি মানুষ হিসেবে এদের ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধাচরণ করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা সুশীল মানুষের দায়ীত্ব। নতুবা দুনিয়ার মানব সমাজ সমতা হারাবে।
আসি সিরিয়ার কথায়ই। কিছুকাল আগে “উইকিলিক্স” নামে যে আমেরিকার গোপন সব দলিলের খবর ফাঁস হয়েছিল সেখানে হিলারী ক্লিন্টনের গোপন একটি ইমেইলের বিষয় তুলে ধরেছে “নিউঅবজারভারঅনলাইন.কম”। ওখানে দেখা যায় ওই ইমেইলে হিলারী ক্লিন্টনকে সামনে নিয়ে ওবামা প্রশাসন সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের বাঁশী বাজিয়েছেন। কেনো সিরিয়ার বিরুদ্ধে এই বাঁশী বাজানো। সিরিয়া কার পাকধান কেটে নিয়েছে! ওই ইমেইলে তৎকালীন “সেক্রেটারী অব ষ্টেট” এর কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে “ইসরাইলকে সহায়তা করার সবচেয়ে উত্তম পথ হল আসাদ সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে সিরিয়ায় যুদ্ধ বাঁধানো।” লিখিত ওই দলিলখানির “ডিপার্টমেন্ট অব ষ্টেট” এর মামলা নং হল- case number F-2014-20439, Doc No. C05794498. ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হিলারী যখন “সেক্রেটারী অব ষ্টেট” হিসেবে দায়ীত্ব পালন করছিলেন, ইমেইল খানা সেই সময়ের। অনেকেরই হয়তো জানা আছে যে এই কিছুদিন আগে হিলারীর “ইন্টারনেট সিস্টম”এ “হ্যাক” হয়েছে, এমনতরো সংবাদে সাংবাদিক মহলে বহুরূপী খবরের ঈদ লেগেছিল। অবশ্য “উইকিলিক্স”এর ওই তথ্যে দেখা যায় ইমেইলটির সন-তারিখ আবার ৩১শে ডিসেম্বর ২০০০ সাল। সত্য যে কোনটি, মিথ্যা থেকে তাকে বের করে নিয়ে আসা খুবই দুষ্কর! (পরে আরো আছে)