সেলফি তুলতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনইঞ্জিনের ধাক্কায়
একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু!
মৃত অপরজন ছিলেন নামাজ পড়ায়
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বন এলাকায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেন ইঞ্জিনের ধাক্কায় একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে! গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লাউয়াছড়া বনের রেল লাইনের লেভেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় সাম্য দে(১৬) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। সে শ্রীমঙ্গল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ক্লার্ক রিতা দে ও শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার প্রবাসী সুব্রত দে’র একমাত্র সন্তান এবং শ্রীমঙ্গলের ভিক্টোরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনরা এখন বাকরুদ্ধ।
শ্রীমঙ্গল রেলপথ থানার দায়ীত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, শুনেছি ছেলেটি লাউয়াছড়া বনে ট্রেনের সাথে সেলফি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনা হয়েছে। রেলপুলিশ মৃতকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছে।
শ্রীমঙ্গল রেলপথ স্টেশনের মাস্টার মো: সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সিলেট-চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা ট্রেনের ইঞ্জিন সিলেট রেল স্টেশনে বিকল হয়ে পড়ে। আখাউড়া থেকে একটি ইঞ্জিন সিলেট যাওয়ার পথে লাউয়াছড়ায় এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কমলগঞ্জের এক মসজিদে নামাজরত অবস্থায় বশির মিয়া(৬০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ার সময় তিনি মারা যান। পরে দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বশির মিয়া কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলাইরপার গ্রামের মৃত সফিক মিয়ার ছেলে।
মৃত বশির মিয়ার ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম মিয়া জানান, শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করতে বাড়ির পাশে দক্ষিণ ধলাইরপাড় জামে মসজিদে যান। মসজিদে সুন্নত নামাজ পরা অবস্থায় হঠাৎ তিনি ঢলে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, বশির মিয়া অত্যন্ত দরিদ্র ঘরের সন্তান। তবে তিনি সৎ ও প্রতিবাদী ছিলেন। কখনো নামাজ কাজা করতেন না। সততার পথে ছিলেন তিনি। বশির মিয়ার নয় সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী লোক ছিলেন।
বশির মিয়ার বড় ছেলে রকিব মিয়া বলেন, বাবা মসজিদে প্রতিদিনের মতো নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ তিনি ঢলে পড়েন। তবে আমার বাবার ভাগ্যটাই ভালো। এমন মৃত্যু সবার হয় না। আল্লাহ যেন বাবাকে বেহেশত নসিব করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজেদুল কবির জানান, বশির মিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা গেছেন।