ঢাকা, মঙ্গলবার
২৫শে অক্টোবর ২০১৬
আমি স্বপ্ন দেখি আমাদের কুটির শিল্প ছড়িয়ে পড়বে দুনিয়ার প্রতিটি প্রান্তে
২০০৯ এর দিকের কথা। জেনারেল মটরস, আমেরিকার অন্যতম বড় গাড়ির কোম্পানি। অনেক মানুষ এর সাথে জড়িত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে। হঠাৎ করে তারা দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম। অনেক মানুষ পথে বসবার মুখে। আমেরিকার সরকার এগিয়ে এলো। নিজে তহবিল দিয়ে একটা অংশ কিনে কোম্পানিকে বাঁচালো। বেঁচে গেল অনেকগুলো মানুষ আর তাদের গর্বের একটি বিষয়।
আমাদের দেশ। ১৯৭১ এর পরের কাহিনী। যুদ্ধের পুর্বে আমাদের অর্থনীতির বেশির ভাগ অংশ আসতো পাট, কৃষি, হস্তশিল্প বা কুটিরশিল্প থেকে। যুদ্ধের পরে খুবই স্বাভাবিক কারণে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রই সমস্যায় পড়ে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল বিশ্বব্যাংক। তাদের সহায়তায় আমাদের অনেক প্রকল্প এগিয়ে যেতে থাকলো। মানুষ চাকরী পাচ্ছিল। পাচ্ছিল নতুন জীবিকায় বেঁচে থাকার সপ্নের সুখ। সরকার খুশি, দেশের মানুষও খুশি। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে সরকার অনেক প্রকল্পে হাত দিলেও চোখ দিতে পারেনি আমাদের কুটির শিল্পতে। আস্তে আস্তে কুটির শিল্প গুলো ধংস হয়ে গেল। কিন্তু সামান্য কিছু সহযোগিতা হয়তো টিকিয়ে রাখতো এই শিল্প। আজ আমাদের দেশের মানুষ যেমন একটা বার্মিজ, ইন্ডিয়ান বা জাপানী ‘ইউনিক’ পন্যকে আহামরি পর্যায়ে নিয়ে গেছে হয়তো আমরাও পারতাম আমাদের এসব শিল্পকে একটা ‘ইউনিক’ স্থান করে দিতে বিশ্ব দরবারে। আমাদের কোন গহনার ‘ব্রান্ড’ হয়তো পৃথিবীতে ‘লিড’ দিত, আমাদের নকশী কাঁথা হয়তো থাকতো বিশ্বের অনেক মানুষের ঘরে বা আমাদের বেতের দোলনায় বা চেয়ারেই হয়তো অনেক মানুষ নিজেদের ঘর সাজাতো।
আমাদের ‘ইউনিক’ জিনিষগুলো আমরা ধরে রাখতে পারি নি। কেনো জানিনা আমরা চেষ্টাও করি নি। তাই আজ হয়তো শুনতে হয় জামদানী শাড়ি ‘ইন্ডিয়ার’ পন্য। অনেক সময় মনে হয় এখানে একটা ব্যর্থতা সকলের অজান্তে সক্রিয় রয়েছে।
এখন আমাদের এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে দরকার নিজেদের পন্য ব্যবহারের মানষিকতা আর সরকারের আরেকটু দৃষ্টিগোচর হওয়া এই ‘সেক্টর’গুলো। এমনকি পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া যায় কিনা তাও দেখার বিষয়। সেটা হতে পারে কোন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহন করে বা এর সঠিক ‘এডভারটাইজমেন্ট’ করে। আমি সপ্ন দেখি এসব একসময় ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বব্যাপী।