হামহাম জলপ্রপাতে বেড়েছে দর্শনার্থী কিন্তু যোগাযোগ খুবই ঝুঁকিময়
৪ কিলোমিটার টিলা বেয়ে পায়ে হেঁটে যেতে হয় হামহামে
মৌলভীবাজারের হামহাম জলপ্রপাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পর্যটকদের পদচারনায় মূখরিত হয়েছে। সম্পতি সরেজমিনে গেলে এমন চিত্র ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পায়ে হেঁটে চার কিলোমিটার টিলা বেয়ে যেতে দর্শনার্থীরা যেন ক্লান্ত হন না। হামহামকে ছুঁয়ে দেখতে চান স্বশরীরে।
পাাহাড়ি টিলার আঁকাবাঁকা পথে পথে দেখা হয় বহু পর্যটকদের সাথে। তারা জানান, চার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে বিক্ষিপ্ত পাথর,কাটা বাঁশ, জোঁকের আক্রমন আর উঁচু-নিচু টিলা বেয়ে রীতিমত যুদ্ধ করে জলপ্রপাতে পৌছাতে হয়। দেড় ঘণ্টা পথ হেঁেট কাঙ্খিত স্থানে পৌছালে সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। বন্ধু-বান্ধবসহ ব্রাম্মনবাড়িয়া জেলা থেকে হামহামে আসা পর্যটক সামছুদ্দিন খান জানান, দেড় ঘন্টা পায়ে হেঁটে ঝর্ণায় পৌছেছি। কষ্ট হলেও প্রকৃতি ও ঝর্ণাধারা দেখে খুব ভালো লেগেছে। আরেক পর্যটক বলেন, “এখানকার পাহাড়ে উঠানামা খুবই কষ্টের। কিন্তু ঝর্ণার কাছাকাছি টিলার যে সোজাসুজি উচুঁ-নিচু যে একটা অবস্থা। এটা খুব কষ্টের। খারা উচু টিলায় মন ভরেনি”।
কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীবাড়ি এলাকা থেকে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আসা পর্যটক সেপালি দাশ বলেন, পাহাড়ে আসা যাওয়ায় আমাদের চার ঘন্টা লেগেছে। খুবই কষ্টকর। জয়পুরহাট জেলার শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ,সিরাজগঞ্জের এক ছাত্র বলেন, “যারা ট্রাকিং করতে ভালো বাসেন তাদের জন্য হামহামে আসা মজার। আর যারা পায়ে হাটাকে কষ্ট মনে করেন তাদের এখানে না আসাই ভালো”। কুরমা চা বাগানের শ্রমিক চন্দন পরজাপতি ও সন্তুষ কুমার দাশ বলেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছেন্ন থাকায় হামহামে এসে অনেক পর্যটক আহত ও নিহত হয়েছেন। এখানকার সড়কপথ সংস্কার করা,নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ,পাহাড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক দেয়া খুবই জরুরী। কমলগঞ্জ উপজেলার এক কর্মকর্তা এক প্রশ্নের জবাবে জানান, হামহামের সড়কটি সংস্কার করতে চাই। কিন্তু জায়গাটি বনবিভাগের। তাদের সাথে আলোচনা করে গহীন বনের এই সড়কটি সংস্কার করা হবে। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন বলেন, হামহাম জল প্রপাত সস্কার’র বিষয়টি আমাদেও পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। আগামী মে মাসে ঢাকায় যে প্রজেক্ট পাঠানো হবে এটাতে হামহাম থাকবে।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কুরমা বনভিট এলাকায় অবস্থিত হামহাম জলপ্রপাত। শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও কমলগঞ্জের শমসেরনগর হয়ে হামহামে যেতে হয়। পাহাড়ের এক কিনারায় গাড়ি রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা টিলা বেয়ে গন্তব্যের উদ্যেশ্যে পাড়ি জমান পর্যটকরা। ২০১০ সালে একদল পর্যটক এটি আবিষ্কার করেন। এর পর থেকেই এখানে বাহিরের মানুষের যাওয়া-আসা শুরু।