শ্রীমঙ্গলে ৮ দফা দাবীতে
রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি
সারা দেশের ন্যায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮ দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বৃহত্তর সিলেটবাসীর বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে সিলেট থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে আয়োজিত কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শ্রীমঙ্গলেও কর্মসূচী পালন করেন আন্দোলনকারীরা।
৮ দফা দাবী বাস্তবায়ন পরিষদ শ্রীমঙ্গল সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মোঃ কাওছার ইকবালের পরিচালনায় ও সদস্য সচিব মোঃ সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগীত শিল্পী তারেক ইকবাল চৌধুরী, সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদ, আনহার আহমেদ সমশাদ, সালেহ এলাহী কুটি, আমজাদ হোসেন বাচ্চু, এহসান বিন মুজাহির, ব্যবসায়ী নেতা হাফিজ আহমেদ, আকতার হোসেন, শাহীন আহমেদ, সমাজকর্মী মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান দিপু, হারুন অর রশিদ, ফারহান তানভীর ফাহিম, মোঃ শহজাহান আহমেদ, মোঃ নাঈম হাসান, শাহেদ আহমেদ রানাসহ অনেকে। এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, সিলেট থেকে ঢাকা ও কক্সবাজার রুটে দুটি নতুন ট্রেন চালু, আখাউড়া–সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডুয়েল গেজে রূপান্তর, বন্ধ স্টেশনগুলো পুনরায় চালু এবং নতুন ইঞ্জিন সংযোজনসহ ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সরকার ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সিলেট বিভাগের উন্নয়নকে উপেক্ষা করছে। বক্তারা বলেন, ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের ধীরগতির কাজের কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এখন মানুষের একমাত্র ভরসা রেলপথ, তাই এর দ্রুত সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রয়োজন।
বক্তারা আরও বলেন, সিলেটের প্রতি বৈষম্য কোনো নতুন বিষয় নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এ অঞ্চলের উন্নয়ন ধারাবাহিকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রেলপথ থেকে সড়কপথ—সবখানেই অবকাঠামোগত উন্নয়ন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তারা প্রশ্ন তোলেন—সিলেটবাসীর সঙ্গে এই বৈষম্য ও ষড়যন্ত্র কেন?
তিন দশক ধরে নানা অজুহাতে সিলেট বিভাগের রেলপথ ও সড়ক-মহাসড়কের যৌক্তিক উন্নয়ন বন্ধ কেন? তুলনামূলকভাবে অন্যান্য অঞ্চলে একের পর এক মেডিকেল, কৃষি, বিজ্ঞান ও কারিগরি কলেজ স্থাপিত হলেও সিলেট বিভাগে তা হচ্ছে না কেন?
বক্তারা আরও বলেন, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী চা শিল্প আজ অবহেলার শিকার। দেশের ধানক্ষেতেও এখন চা উৎপাদন হচ্ছে, অথচ আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্র সিলেট আজ আঞ্চলিক নিলাম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এটি সিলেটবাসীর জন্য এক বড় অবমাননা।
আন্দোলনকারীরা জানান, এই আন্দোলন কেবল রেলপথ উন্নয়নের দাবি নয়, এটি বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। তারা বলেন, সিলেটবাসীর ন্যায্য দাবিগুলোর বাস্তবায়নের জন্য সবাই এখন একত্রিত, এবং এই ঐক্যই আগামী দিনের পরিবর্তনের শক্তি হবে।
বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, রেল ও সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার আধুনিকায়নের মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটন খাতের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।