হারুনূর রশীদ।। লন্ডন: সোমবার, ৩রা পৌষ ১৪২৩।। দিন দিন সকল অপকর্মের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে মানুষের নির্মমতার মাত্রা। আদিতে এই মানুষই একদিন ঘোষণা করেছিল সে ‘সৃষ্টির সেরা জীব’। সেদিন থেকে মানুষ দায়ীত্ব নিয়েছিল এ মহাবিশ্বের দেখাশুনার দায়ীত্ব সে নিজেই করবে। করেও আসছে সে সুদীর্ঘ অনন্তকাল থেকেই। কিন্তু এর পরেও এই মানুষের মাঝেই কিছু প্রাণী আছে যারা ওই দায়ীত্বের ধার ধারেনা। ভুলে যায় সে মানুষ! সামান্য লোভ, লালসার কাছে মানবিক সকল গুণাবলীকে জলাঞ্জলী দিয়ে ওরা হয়ে উঠে দানব অসুরের চেয়েও কঠিন হৃদয়ের প্রানী।
রাইনো! নাকের ডগায় একটি শিং আছে তার। কিম্ভুতকিমাকারের মাঝেও সৃষ্টির সৌন্দর্য্যের এক অনাবিল মাধুর্য্য রয়েছে রাইনোর ওই শিং-এ। অদ্ভুতধর্মী এক নান্দনিক বিনোদনী মায়া সৃজনকর্তা তার শিংএ লাগিয়ে দিয়েছেন। স্রষ্টারূপী এই মানুষেরই হৃদয়বান অংশ এদের নিয়ে আসেন ‘চিড়িয়াখানা’ নামক বন্ধী আবাসে ক্ষনিক বিনোদন লাভের জন্য। ওদেরতো আর প্রতিবাদের ভাষা জানা নেই তাই নির্বিবাদেই জীবন চালিয়ে নেয় বন্দীদশায়ও।উষ্কানী না দিলে খুবই শান্ত নিরীহ প্রাণী এই রাইনো। তৃণভোজী প্রাণী। গভীর জঙ্গলেই মূলতঃ তার বাস। দেখিয়া দেখিয়া ক্ষনিক বিনোদনলাভ ছাড়া ওর শিং আর তেমন উল্লেখযোগ্য কোন কাজে লাগে না। কিন্তু ওই যে পামর, চোর শিকারিরা সম্পূর্ন অন্যায়ভাবে নিরীহ নির্বাক নিরুপদ্রব এই প্রাণীটিকে তার শিং আর চামড়ার জন্য নির্মমভাবে পাশবিক বিভৎসরূপে হত্যা করে। এই রূপের কালো রাইনো সারা দুনিয়ায় মাত্র ৫ হাজারটি টিকে আছে।
ছবির এই রাইনোটি সেসব মানুষরূপী পশুদেরই হত্যাকান্ডের এক আসুরিক নিদর্শন। ছবিটি আফ্রিকার ‘হুলুয়ে-ইমফলজি পার্ক’-এর “Special Investigation:…” নামের ক্রোড়পত্রে এ বছরেরই অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়। (‘ব্রেন্ট স্টিরটন’ নামের আলোকচিত্র শিল্পী দুর্লভ এ ছবিটি তোলেছিলেন।)