হারুনূর রশীদ।।
কোথায় কে বলেছিলেন, এ মূহুর্তে তার নাম আর মনে করতে পারছিনা। তবে তার কথাটি কেনো জানি আজও বিভিন্ন কাজে স্মরণে পরে যায়। তিনি বলেছিলেন-“বিজনেস, দাই নেইম ইজ করাপশন…”। অর্থাৎ ব্যবসা মানেই তো অসাধুতা। আমি বুঝি কথাটা সর্বাংশেই সত্য। ব্যবসা মানেই তো ১ টাকার জিনিষ ৫ টাকায় বিক্রি করা। এই যে বাড়তি ৪টাকা মুনাফা হিসেবে ব্যবসায়ীরা খদ্দেরদের কাছ থেকে নিয়ে থাকেন তার কোন কৈফিয়ৎ, কোন ব্যবসায়ী কোন দিন কোন খদ্দেরকে দেয়? না দেয় না। দেয়ার প্রয়োজনও মনে করেনা। এখানেই- ব্যবসা অর্থই হলো অসাধুতা। যাক গে, এ বিষয় নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্য নয়। অন্য কোন দিন সময় সুযোগ হলে আলোচনা করা যাবে।
আজ হঠাৎ করেই ঘুম থেকে উঠে লিখতে বসে এ কথাটি মনে পড়ে গেল, ‘Hot Weather Takes @ paulythegun’ এ টুইটারটি দেখে। টুইটারে ‘পলিদিগান’ লিখেছেন-‘OH MY GOD! hahahaha….He stole this line!!!’। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত কালের বক্তব্যের কথা স্মরণ করে এই মন্তব্যটি করেছেন।
‘পলি দি গান’ ওয়াশিংটনের একজন বয়োবৃদ্ধ রাজনৈতিক বক্তব্যের বিশ্লেষক বলেই বুঝতে পেরেছি। তিনি তার টুইটারে বলতে চেয়েছেন যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এনিমেটেড কৌতুকধর্মী চলচ্চিত্র “বি মুভি”র সার কথাগুলি ট্রাম্প তার ভাষণে বলতে গেলে হুবহু নকল করেছেন।
“বি মুভি” নামে ২০০৭ সালে একটি পারিবারিকভাবে দেখার, ব্যঙ্গ কৌতুক ও হাস্যরসাত্মক অংকিত চিত্রমালার(এনিমেটেড) ছবি ‘ড্রিম ওয়ার্কস এনিমেশন’ কোম্পানী বাজারে এনেছিল। “বি মুভি” ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছিলেন সাইমন জে স্মীথ ও স্টিভ হিকনার। বিশ্বের প্রথম ‘এনিমেটেড মশন পিকচার্স’ ওই ছবিতে প্রখ্যাত ‘স্ক্রিপ্ট’ লিখক Seinfeld মৌমাছিকে দিয়ে বলিয়েছিলেন- “We are one colony – – and their pain is our pain. Their dreams are our dreams; and their success will be our success. We share one heart, one hive, and one glorious destiny.” ট্রাম্পও তার বক্তব্যে ওই কথাগুলোর পুনঃরোচ্চারণ করেছেন। “পলি দি গান” এর আসল কথা মনে হয় এই যে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এতো মর্যাদার মানুষ, তিনি কি-না একটি ছবির কথা নির্দ্বিধায় নিজের মত করে চালিয়ে দিলেন। একবার হলেও বলার প্রয়োজন মনে করলেন না লেখকের নাম বলার। আর এখানেই আমাদেরও কথা। একজন ব্যবসায়ীর স্বভাবগতভাবেই এই ‘লিখক স্বত্তাধিকারটি’ বুঝার কথা নয়। ব্যবসায়ী তো সবকিছুকেই অর্থের বিনিময়ে দেখেন। ট্রাম্প সাহেব হয়তো সেভাবেই দেখেছেন।
তিনি তো তার বক্তব্যে আরো বলেছেন- ‘এতোদিন আমরা অন্য দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে নিজের সামরিক বাহিনী দিয়ে পাহাড়া দিয়েছি। সাহায্য সহায়তা দিয়ে অন্য দেশের শিল্প কারখানা গড়ে দিয়েছি। আর নয়। এখন থেকে আমরা আমাদেরটা দেখবো। আগে আমেরিকা।’ তিনি অবশ্য বলেননি এ পর্যন্ত আমেরিকা দুনিয়ার দেশে দেশে কত মানুষকে হত্যা করেছে? কত লক্ষকোটী মানুষকে ঘরছাড়া শ্মরণার্থী বানিয়েছে? আমাদের বঙ্গবন্ধুসহ দুনিয়ার কত রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করিয়েছে? তিনি বলেননি পাতানো যুদ্ধের নামে কত দেশকে আগামী শতবর্ষের জন্য এ বিশ্বে ভিখেরী বানিয়ে দেয়া হয়েছে? তার শুধু মনে রাখা উচিৎ, এতো অঘটন ঘটন পটিয়সী হয়ে, দুনিয়ার এক তৃতীয়াংশ মানুষকে পথে বসিয়ে ওতো সহজে আমেরিকাকে মানুষ ছাড় দেবেনা। কড়ায়-গন্ডায় সব হিসেব দিয়ে তার পর ঘরে উঠতে হবে।
Yesterday’s anti trump women’s march in London pic.twitter.com/FS3aNzVmU3
— Harunur Rashid Khan (@Muktokotha) January 22, 2017
লন্ডন: রোববার, ৮ই মাঘ ১৪২৩ বাংলা