আমিনূররশিদ বাবর।। আজ ২০ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারবাসীর কাছে মর্মন্তুদ এক শোকের দিন। ‘৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার হানাদার মুক্ত হয়েছিল। যৌথবাহিনীর অবিরাম গোলাবর্ষণের চোটে হানাদাররা রাতে পায়ে হেঁটে পলায়ন করে সিলেটে আশ্রয় নিয়েছিল। ১৬ ডিসেম্বর সমগ্র দেশ মুক্ত হয়ে যায়। মুক্ত দেশে মুক্তিবাহিনীর হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা হয় মৌলবিবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এদিন এখানে বিভিন্ন সেক্টর থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধারা জড়ো হতে থাকেন, সেই সাথে গোলা-বারুদ, অস্ত্রশস্ত্র ও ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মাইনের বাক্স এনে রাখা হয়।
ঘটনার এদিন ২০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারের আয়োজন চলছিল। এমন সময় হটাৎ করেই বিকট শব্দে চার দিক প্রকম্পিত হয়ে উঠে। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই অজস্র ট্যাঙ্কবিধ্বংসী মাইন বিস্ফোরিত হতে থাকে। স্কুলের দেয়াল, টিনের চালা তুলার মতো উড়তে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের দেহ টুকরো টুকরো হয়ে চারদিকে ছিটকে পড়ে।
কিছু বুঝে উঠার আগেই শহরের মানুষ আবারও শহর ছেড়ে পালাইতে থাকে। পরিস্থিতি শান্ত হলে বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ছিন্নভিন্ন দেহ কুড়িয়ে এক স্থানে স্তুপ করে রাখা হয়। পরে স্তুপীকৃত দেহাবশেষ সমাধিস্থ করা হয় সরকারী বিদ্যালয়ের মাঠের এক কোনে। বর্তমানে ওই নিহতদের সমাধির পাশেই নির্মান করা হয়েছে একটি শহীদ মিনার। এখানে আনুমানিক ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সমাধিস্থ করা হয়েছে। সমাধির পাশেই নিহতদের একটি নামফলকও স্থাপন করা আছে। উল্লেখ্য, এই মাইন বিস্ফোরনের রহস্য আজও উদঘাটিত হয় নাই।