হারুনূর রশীদ।।
খবরটি বেশ পুরনো হয়ে গেছে। গত দু’সপ্তাহ আগের খবর। পুরনো হয়ে গেলেও এর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ব্যাপক এবং নির্দিষ্ট কোন সময়ের মধ্যে থেকেই শেষ হয়ে যাবার নয়।
এই অরিন্দমগুলো আর কেউ নন আসামের আন্তঃরাষ্ট্রীয় হিন্দু পরিষদের স্বয়ং সভাপতি প্রবীণ তগাদিয়া এবং তেলেঙ্গানার একজন বিজেপি’র এমএলএ মিঃ টি রাজা সিং লোদ।
মিঃ তগাদিয়া বুধবার ১৮ই জুলাই ২০১৮ তারিখে গৌহাটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি জোটের সরকারকে দোষারূপ করে নিচে দেয়া বেআইনী অনৈতিক মন্তব্যটি করেন। সংবাদ সম্মেলনে মিঃ তগাদিয়া বলেন বাংলাদেশের ভুমি দখল করে ৫০লাখ অবৈধ অভিবাসনকারীদের সেখানে বসতি গড়তে দেন। অপরদিকে গত ৩১শে জুলাই, টি রাজা সিং লোদ নামে তেলেঙ্গানার বিজেপি’র এক এমএলএ হায়দেরাবাদে বলেছেন, ফেরৎ না গেলে বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা অভিবাসীদের গুলি করতে হবে। দি ইকোনমিক টাইমস খবরটি প্রকাশ করে।
মিঃ তগাদিয়া বিজেপি সরকারকে এ জন্য দায়ী করে বলেন সরকার এসব বাংলাদেশী বেআইনী অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
শুধু কি তাই, ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেছেন, যদি বাংলাদেশ এই ৫০লাখ অবৈধ অভিবাসীদের নিতে না চায় তা’হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশের কিছু জমি দখলে নিয়ে এদের সেখানে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। হায়রে মনের অভিলাষ!
সত্যই আশ্চর্য্য লাগে! এরা বাংলাদেশকে কোন মন নিয়ে ভাবেন। বাংলাদেশকে এরা বন্ধু রাষ্ট্রের চোখে দেখেন না-কি ভারতেরই একটি রাজ্য মনে করে কথা বলেন? ছবি দেখে স্পষ্টতঃই বুঝা যায় মিঃ তগাদিয়া এবং রাজা সিং দু’জন প্রবীণ রাজনীতিক। এমন বয়োজ্যৈষ্ঠ্য রাজনীতিক এমন বেআইনী অনৈতিক অরাজনৈতিক কথা কেমন করে বলেন?
অবশ্য আসাম পুলিশ তগাদিয়াকে কোন জনসভা করতে দেয়নি। এমনকি তাকে দু’মাস কোন সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকার নিষেধাজ্ঞা আরূপ করেছিল। কিন্তু এ ধরনের নিষেধাজ্ঞাকে অবজ্ঞা করে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সাথে আলাপ করেন।
কথার স্বার্থে যদি ধরেই নেই যে ১৯৭১এর মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছু বাংলাদেশী আসামে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে এখনও রয়ে গেছে তা’হলে এই ৪৭বছরের থেকে যাওয়া কি মামুলি কথা। একটি ভূমিতে একনাগারে ১২ বছর থেকে গেলে দখলি স্বত্ত বলে একটি অধিকার জন্ম নেয়। সে ক্ষেত্রে ওই অধিকার বাদ দিলেও ৪৭ বছর থেকে গিয়ে ভারতের উন্নয়নে তারা যে অবদান রেখেছে তা কড়ায়-গণ্ডায় হিসেব করে তাদের ফিরিয়ে দেয়ার সদ্দ্বিচ্ছা কি এসব নেতৃবৃন্দ দেখাতে পারবেন? যাই বলেন না কেনো, ভিন্ন রাষ্ট্র নিয়ে কথা বলছেন, বিষয়টি মাথায় রেখে বলাই শ্রেয়। নতুবা পাগলের প্রলাপের কি কোন দাম আছে?
লণ্ডন, মঙ্গলবার ৭ই আগষ্ট ২০১৮সাল