1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কমলগঞ্জে বন্যা ॥ হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী - মুক্তকথা
রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন

কমলগঞ্জে বন্যা ॥ হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী

কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি॥
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৪০ পড়া হয়েছে

টানা বর্ষন, পাহাড়ি ঢল ও নদী ভাঙ্গনে কমলগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা
অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী;
নিম্নাঞ্চলে অবনতি

গত তিন দিনের টানা বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর চারটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় উপজেলার প্রায় ১৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় গত সোমবার রাত থেকেই ধলাই, লাঘাটা, ক্ষীরণী নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এরফলে পাহাড়ি ছড়ার পানি উপচে ধলাই নদীতে পড়তে শুরু করে। সোমবার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিকাল থেকে ধলাই নদীতে বাঁধ ভাঙ্গন শুরু হয়। ধলাই নদীর চারটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর, মাধবপুর, কমলগঞ্জ সদর, আলীনগর, শমশেরনগর, পতনঊষার, মুন্সিবাজার, রহিমপুর এবং পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পরে পুরো উপজেলার সব কটি ইউনিয়নে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল। সেগুলোতে এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগি নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠে ঘাটে ক্ষেতে পানি উঠায় চরম গো খাদ্য সংকটে পড়ছেন তারা।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ইসলামপুরে ২০টি, আদমপুরে ২০টি, শমশেরনগরে ২০টি গ্রাম, মুন্সিবাজারে ২৬টি গ্রাম, পতনঊষারে ১৬টি, আলীনগরে ১৬টি, রহিমপুর, সদর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার আরো প্রায় ২৫টি গ্রাম বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। কৃষকদের রোপিত বিস্তীর্ণ আমন ক্ষেত ও শাকসবজি নিমজ্জিত হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটও রয়েছে। নি¤œাঞ্চলের শমশেরনগর, মুন্সিবাজার ও পতনঊষার ইউনিয়নে বন্যার অবনতি হচ্ছে। ফলে পুকুর ও মৎস্য খামার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মাছ চাষীরা। বুধবার উপজেলার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারে নগন্য ছিল। পানিবন্দি থাকায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

 

 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, কমলগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারিভাবে ৬০ মে:টন জিআর চাল ও শুকনো খাবার বিতরণের জন্য নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজনীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার সার্বক্ষনিক নজরদারি রয়েছে। বরাদ্ধ এসেছে, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শুকনো খাবার বিতরণও শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩দিনের টানা বর্ষনে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গত মঙ্গলবার সকালের দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন এর কুরমাঘাট চেক পোস্ট এলাকায় দুটি জায়গায় ভাঙন দেয়, এরপর দুপুরে শামসুর দোকান ও মকাবিল এলাকায় আরো দুটি ভাঙন এবং সন্ধ্যার পর আদমপুর ইউনিয়নের কাটাবিল ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধটি মাধবপুর ইউনিয়ন এলাকা দিয়ে ভাঙ্গন দিয়ে মুহুর্তেই প্রথমে ইসলামপুর, আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ ইউনিয়নগুলোর কিছু কিছু স্থানে মঙ্গলবার বন্যার পানি কিছুটা নেমে গেলেও শমশেরনগর, রহিমপুর ও পতনঊষার ইউনিয়নের নির্মাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।


 

টানা বর্ষনে কমলগঞ্জ কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে
বিধ্বস্ত ৬খানা ঘর; ঝুঁকিপূর্ণ ১০ পরিবার

 

টানা বর্ষনে ও উজানের ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাতের ফলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে সড়কের পাশে ৩টি টিলা ও আদমপুর ইউনিয়নের কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে দু’টি ঘর সম্পূর্ণ ও চারটি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। পাহাড়ি টিলায় বসবাসরত কালেঞ্জি পুঞ্জিতে আরো দশ পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছে। ধ্বসে যাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিনের টানা বর্ষনে পাহাড় টিলা অধ্যূষিত কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সড়ক ঘেষে তিনটি টিলা ধ্বসে পড়ে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে যান চলাচল। অন্যদিকে আদমপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে বসবাসরত এলাকায় পাহাড়ি টিলা ধ্বসে পড়ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালেঞ্জি পুঞ্জিতে পাহাড়ি টিলা ধ্বসে নাঈট কেন্দ্রিয়াম ও লং কাসিয়াম এর স্ত্রীর ঘর সম্পূর্ণ ধ্বসে পড়ে। এছাড়া একই স্থানে আরো চারটি পরিবারের বসতঘর আংশিক ধ্বসে পড়েছে। ওই স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন আরো ১০টি পরিবার।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আবদাল হোসেন জানান, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি টিলা অঞ্চল কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে দু’টি বসতঘর সম্পূর্ণরূপে ধ্বসে পড়েছে। আরো চারটি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। খাসিয়া পুঞ্জির এই এলাকায় আরো ১০টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। সরেজমিনে দুর্গম এই অঞ্চল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাৎক্ষনিকভাবে তাদের কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টিলা ধ্বসে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে বসবাসরত খাসিয়া সম্প্রদায়ের চারটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। তাছাড়া টানা বৃষ্টিপাতের কারনে কমলগঞ্জে ভয়াবহ বন্যারও সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এসব বিষয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছে।


 

বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের
শুকনো খাবার বিতরণ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর, আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও চা বাগানের বন্যার্তদের মাঝে উপজেলা বিএনপি এর অঙ্গসংগঠন ও বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজন প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করেছেন। এসব প্যাকেটে ছিল শুকনো চিড়া, মুড়ি, গুড় প্রভৃতি।

বুধবার সকাল থেকে উপজেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া শফির নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু, ইউপি সদস্য মোতাহের আলী, বিএনপি নেতা মাসুক আহমেদ, শহিদ সিরাজি, আবুল কাসেম, কামাল আহমেদ, সবুর মিয়া, রাজা মিয়া, আছিম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেন তারা। অপরদিকে মঙ্গলবার রাত থেকে আদমপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা ওয়াসির আহমেদের নেতৃত্বে আদমপুর ইউনিয়ন এর বিভিন্ন এলাকায় বন্যাদূর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করছে তাদের সহযোগিতা করছে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজনও। এছাড়া কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, আলীনগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা বুধবার শুকনো খাবার বিতরণ করতে দেখা গেছে।

উপজেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া শফি জানান, আমাদের পক্ষ থেকে সহায়তা অব্যাহত আছে এবং বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT