মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধ পথে বালু উত্তোলনকারীরা ফের বেপরোয়া হয়ে নতুন সিন্ডিকেট তৈরি করে ৮দিন যাবৎ আবারও বালু তুলছে। এসব সিন্ডিকেট চক্র প্রভাবশালী থাকায় এখানকার স্থানীয় কুশিয়ারা নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ মুখ খুলে কথা বলতে পারছেন না। এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, কুশিয়ারায় বালু তোলার জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি।
সরেজমিনে শনিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের চড়াঞ্চলের নির্জন একটি এলাকায় বালু সিন্ডিকেটরা তাদের আস্তানা গড়ে তুলেছে। এখানে পাহাড়া দিতে কাপড় দিয়ে ছোট একটি বাসা তৈরি করা হয়েছে। জানা যায়, এখানকার স্থানীয় শনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে নদীর এই স্থানটিকে নিরাপদ ভেবে ড্রেজার মেশিন রাখা হয়েছিলো। সকাল সাড়ে ১০টায় নদী পাড়ে গেলে দেখা যায় ড্রেজার মেশিন উপজেলার আব্দুল্লাহপুরস্থ চড় এলাকা থেকে সরিয়ে নদীর ওপাড়ের বালাগঞ্জ উপজেলায় রাখা হয়েছে। জানতে চাইলে ওখানে অবস্থানকারী আব্দুল্লাহপুর গ্রামের রিপন বলেন, ৮ দিন যাবৎ এখানে ওই ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আপনাদের আসার খবর পেয়ে এখান থেকে ড্রেজার সরিয়ে নদীর ওপাড়ে রেখেছে তারা। ওই বালু সিন্ডিকেটের সাথে কারা জড়িত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি উনাদের চিনি কিন্তু নাম বললে আমার বাড়িতে থাকা মুশকিল হয়ে যাবে। আব্দুল্লাহপুর বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডজন খানেক ব্যক্তি জানান, এখানে প্রশাসনের জ্ঞাতসারে চলছে প্রতিনিয়ত অবৈধ পথে বালু উত্তোলন। নদীর তীরবর্তী আব্দুল্লাহপুর বাজারের পূর্বে ওয়াপধা সড়ক এলাকায় গেলে দেখা যায় নদী থেকে পাইপযোগে একটি বাড়িতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন এক-এক নৌকা বোঝাই বালুর দর ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। রাজনগরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) বাবলু সূত্রধর বলেন, কুশিয়ারায় বালু উত্তোলন হচ্ছে বিষয়টি আমার জানা নাই। খোজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান জানান, “কুশিয়ারা নদীতে বালু তোলার কোন অনুমতি নেই। কেউ যদি বালু উত্তোলন করে থাকে এবং তা আমাদের জ্ঞাতসারে আসে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব”।