ছাতকে প্রচন্ড শীত ও ঘনকুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীত ও তীব্র ঘনকুয়াশার কারনে গত এক সপ্তাহ থেকে এ উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। ঘন কুয়াশায় গ্রামীণ সড়কসহ সড়ক মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। ভোরবেলা থেকে দিনের ৯টা পর্যন্ত দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন মালবাহী যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কনকনে শীতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে শীতে কষ্ট নিবারনে ছুটতে হচ্ছে গরম কাপড়ের দোকানে। স্থানীয়রা জানান, ২০১৮সালের শুরু থেকে এখানে অন্যান্য বছরের চেয়ে একটু বেশি মাত্রায় শীত নেমেছে। প্রচন্ড শীতে সাধারণ কর্মজীবি মানুষ থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী-পেশার কারো সময়ই ভাল যাচ্ছে না। তারা জানান, শীতের তীব্র আবহাওয়ায় নবজাতক শিশুদের শীত জনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো এবং ওষুধের দোকানে শীত জনিত রোগ নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, এজমা, এলার্জীসহ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু সন্তানসহ অভিভাবকদের ভীড় লক্ষনীয়। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার সিরাজগঞ্জ বাজার, জাউয়াবাজার ও গোবিন্দগঞ্জ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার হতদরিদ্র আম-জনতা আসন্ন মাঘের শীতে কাঁপছে। বিশেষকরে বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য শীতের সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না। শীতের তীব্র প্রকোপে কাবু হয়ে দিন কাটছে ওদের অসহায়ত্ব অনুভবের দীর্ঘ নিঃশ্বাসে। গ্রামীণ জনপদের হতদরিদ্র আম-জনতা শীত নিবারনের এক মাত্র অবলম্বন বলতে ধানের খড়-কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপে কিছু সময় শীত নিবারন করছে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, আসন্ন মাঘে হাড় কাঁপানো এ শীতের প্রকোপ আরো বাড়বে। সমাজের হতদরিদ্র মানুষের সাহায্যার্থে সরকারের জনপ্রতিনিধি কিংবা বৃত্তবানদের এখন পর্যন্ত বড় রকমের কোনো ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি। হত-দরিদ্রদের এ দুঃসময়ে যেন দেখার কেউ নেই! স্থানীয় সচেতন মহল সরকারের জনপ্রতিনিধিসহ সকল বিত্তবানদের দ্রুত শীতার্ত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
-সাবিরুল ইসলাম
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘আতাউর রহমান আনসার ট্রাস্ট’ সব সময়েই শীতার্থসহ হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে। তিনি প্রবাসীদের শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার আহবান জানিয়ে বলেন, একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান হলে শত শত বেকারের চাকুরি হবে। এক্ষেত্রে তিনি সব ধরণের সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
মঙ্গলবার ৯ডিসেম্বর উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর পয়েন্টে আতাউর রহমান আনসার ট্রাস্টের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাহাদাত মো. লাহিন, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন, আরজক আলী, ফজর উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আসদ্দর আলী, শাবি ছাত্রলীগ নেতা তায়েফ হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যুবলীগ নেতা আব্দুর রহিম, ছাতক প্রেসকাবের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম হিরণ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাকের রহমান বাবুল, আলা উদ্দিন, আলকাব আলী মেম্বার, ছালিম উল্লাহ প্রমূখ। এসময় ১৫শতাধিক শীতার্থ মানুষে মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।
ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান-আনসার সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং ছাত্রলীগ নেতা নজির হোসেন লাহিন সভা পরিচালনা করেন।
সাবেক রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নজিবুর রহমান মানিক সিনিয়র সচিব ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূখ্য সচিব নিয়োগ পাওয়ায় ইসলামপুর ইউনিয়ন যুব ও সমাজ কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে এক আনন্দ উৎসব ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাতকে মুখ্য সচিবের বাল্যের পাঠশালায় এই আনন্দ উৎসব ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার ৯ডিসেম্বর মুখ্য সচিবের বসত বাড়ি ইসলামপুর ইউনিয়নের গনেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়। নজিবুর রহমানের বাল্যশিক্ষা এ বিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়।
পরে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে আয়োজিত এ আনন্দ উৎসবে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী, ইসলামপুর যুব ও সমাজকল্যাণ সংস্থাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সমাজের সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। নজিবুর রহমান মানিককে মূখ্য সচিব নিয়োগ করায় সভায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ছাতক পৌরসভা মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পুলিন চন্দ্র রায়, সমবায় অফিসার বিজিত রঞ্জন কর, ছাতক বহুমূখি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈনুল হোসেন চৌধুরী, চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রশিদ আহমদ, জেলা পরিষদ সদস্য আজমল হোসেন সজল, ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গনি, গনেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক তাজুল ইসলাম।
এছাড়া অনুষ্টানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজি ইছাক আলী, হাজি আফাজ উদ্দিন, ফারুক আহমদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল আবেদিন আবুল, এডভোকেট বদর উদ্দিন, আশিদ আলী, হাজি দুদু মিয়া, হাজি নিজাম উদ্দিন, মাওলানা জহির উদ্দিন, মূখ্য সচিবের ভাই শামসুর রহমান সাদিক, মাওলানা আবুল খয়ের, মুহিবুর রহমান, আবুল কালামসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন, ক্বারী আব্দুল বাক্বী। জাতীয় সংঙ্গীত পরিবেশন করে গনেশপুর ও জামুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী ও নব নিযুক্ত মূখ্য সচিবের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন, গনেশপুর মাদরাসার মাওলানা শায়খ আব্দুল হান্নান।
ইসলামপুর যুবকল্যাণ সংস্থার সভাপতি মাওলানা আকিক হোসাইনের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন শিক সাব্বির আহমদ।