1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আফগান বিশেষজ্ঞদের অভিমত - মুক্তকথা
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আফগান বিশেষজ্ঞদের অভিমত

লণ্ডন প্রতিনিধি॥
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১
  • ৪৬০ পড়া হয়েছে

আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতাদখল উপমহাদেশের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকির কারণ হবে

লণ্ডন, শনিবার ৩১ জুলাই ২০২১খৃঃ

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র উদ্যোগে অনলাইনে আফগানিস্তান বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনার বিষয় ছিল: ‘আফগানিস্তানে আসন্ন তালেবান ক্ষমতাদখলের পরিণাম’।

ইউরোপ, আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার ১২টি দেশের বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবী এবং আইন প্রণেতাদের স্বাগত জানিয়ে সম্মেলনের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন, ‘আফগানিস্তান থেকে মার্কিন এবং ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহারের কারণে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমাদের বিশ্বাস, এর ফলে আফগানিস্তানের মানুষের জীবন ও জীবিকার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি বিপন্ন হবে। যদি পশ্চিমা শক্তিগুলো আফগান জনগণের দুর্দশার কথা চিন্তা না করে আফগানিস্তান, পাকিস্তান বা অন্য কোনো দেশে তালেবান-আল-কায়েদার মতো জঙ্গীদের ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অনুমোদন করে তবে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের ৯/১১-এর মতো বহু ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে হতে পারে। সেজন্য আজকের সম্মেলন থেকে আমরা আফগানিস্তানে আসন্ন তালেবান দখলের বিরুদ্ধে বিশ্বের আলোকিত নাগরিক সমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই।

ব্রাসেলসের সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক এবং সাবেক এমইপি পাওলো কাসাকা বলেন, ‘আফগানিস্তানে তালেবান শাসন দেশটির জনগণ, বিশেষ করে আফগান মহিলাদের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। বিশ বছর পরও, তালেবানদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ নেই। মানবাধিকার, বিশেষ করে মহিলাদের অধিকারের ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হয়নি। তারা সব সময় আন্তর্জাতিক জনমত উপেক্ষা করেছে। তালেবানের শাসন আফগানদের জন্য, প্রতিবেশীদের জন্য এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য প্রচণ্ড হুমকি স্বরূপ। মানবাধিকারে বিশ্বাসী সকলের কর্তব্য আফগানদের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য তাদের পাশে থাকা।’

পশতুন নেতা এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিনিধি ফজল-উর রেহমান আফ্রিদি বলেন, ‘আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তালেবানরা একের পর এক এলাকা দখল করে জনসাধারণের সম্পদ বিনষ্ট করছে, আত্মঘাতী হামলা চালাচ্ছে, গাড়িবোমা হামলা করছে, মহিলাদের হত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে এবং যুদ্ধবন্দীদের তাৎক্ষণিক হত্যা করছে।
যদি তালেবানরা পুনরায় কাবুল দখল করে তবে আমি মনে করি, নারীর ক্ষমতায়ন, মানবাধিকার এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা, গণতন্ত্র এবং রাষ্ট্রীয় স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তার সবই বিলুপ্ত হবে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, তালেবানরা যদি পুনরায় কাবুল দখল করে তাহলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এবং এ অঞ্চলে ইসলামি জঙ্গিবাদ ও উগ্রপন্থিদের উত্থান ঘটবে। তারা ভারতীয় কাশ্মীর অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করবে এবং এর ফলে ৯০-এর দশকের মত বাংলাদেশে পুনরায় জঙ্গী সংগঠনগুলির পুনরুত্থান ঘটবে।’

প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক ও ‘এন্ড গেম ইন আফগানিস্তান: ফর হোম দ্যা ডাইস রোলস’ গ্রন্থের লেখক হিরন্ময় কার্লেকার বলেন, ‘তালেবান সম্পর্কে কারও ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয়। তারা ইসলাম সম্পর্কে বিকৃত ধারণা পোষণ করে এবং সারা বিশ্বে শরিয়া আইন কায়েম করার অঙ্গিকারবদ্ধ একটি জেহাদি দল। তাছাড়া, তারা একেবারে ধর্মান্ধ গোঁয়ার যারা তাদের লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত বা বিধ্বস্ত না হওয়া পর্যন্ত থামবে না। অতএব, তালেবানকে আফগানিস্তান থেকে মূলোৎপাটন করার বিকল্প নেই।’

ব্রিটিশ মানবাধিকার নেতা কলামিস্ট জুলিয়ান ফ্রান্সিস বলেন, ‘৯/১১-এর ধ্বংসযজ্ঞের পর, গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, বিশেষত মেয়ে এবং নারীদের সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে। তালেবানি পশ্চাৎপদ শক্তিসমূহ যদি আফগানিস্তানে পুনরায় আধিপত্য বিস্তার করে, তবে অন্যান্য দেশগুলিতে, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ায় আরও বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী এ থেকে উৎসাহিত হতে পারে। রক্তপিপাসু তালেবান ও আল কায়েদাকে দাঙ্গা চালানোর সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত গুরুত্বের সাথে পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ। কারণ, এতে নিশ্চিতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন হবে।’

পাকিস্তানের মানবাধিকার নেত্রী, অর্থনৈতিক উন্নয়ন গবেষক-পরিকল্পক তাহিরা আবদুল্লাহ বলেন, ‘আফগানিস্তান ও আফগান তালেবানকে পুরনো কৌশলগত কারণে পাকিস্তানের সমর্থন না দেয়ার ধারণা প্রতিষ্ঠিত করার এটাই প্রকৃত সময়।’তিনি পাকিস্তানকে শুধুমাত্র আফগান পশতুন গোষ্ঠীর সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন বন্ধ করে আফগানিস্তানের সমস্ত রাজনৈতিক দল, মোর্চা, নৃগোষ্ঠী, ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন ও মুক্ত গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সমর্থন করার আহ্বান জানান। তিনি ন্যায়বিচারের পাশাপাশি শান্তি- বিশেষত দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া জুড়ে ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল আদর্শ প্রচারের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জনাব ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, ‘পাকিস্তানের ভেতরে তালেবানদের যে অবস্থান, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। রক্তাক্ত ইরাক যেমন মধ্যপ্রাচ্য হয়ে এশিয়া পর্যন্ত প্রভাব ফেলেছিল, তেমনি সংঘাতময় আফগানিস্তান প্রকৃতপক্ষে পুরো দক্ষিণ এশিয়াকেই অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। মনে রাখতে হবে, সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রশ্নে পারস্পরিক সহায়তা তৈরির মাধ্যমেই শুধু দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি রাষ্ট্র অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এশিয়ার সকল দেশকে শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানের পথ অন্বেষণের পন্থা খুঁজে বের করতে হবে।’

সভায় সকল বক্তা আফগানিস্তানে সম্ভাব্য তালেবান দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ সহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত সংগঠনে নির্মূল কমিটিকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক, চলচ্চিত্রনির্মাতা শাহরিয়ার কবির এবং বক্তব্য প্রদান করেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আফগান ইন্টেলেকচুয়ালস গ্লোবাল কমিউনিটি’র সভাপতি, আফগান বিশেষজ্ঞ লেখক ড. শাহী সাদাত, ব্রাসেলসের সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রাক্তন সদস্য মানবাধিকার নেতা পাওলো কাসাকা, সুইডেনের উপসালা ইউনাইটেড নেশনস অ্যাসোসিয়েশন-এর অ্যাটর্নি মোনা স্ট্রিন্ডবার্গ, প্যারিসের ইনস্টিটিউট ডি রিসার্চ এট ডিটিউডস স্ট্র্যাটেজিকস ডি খাইবার (আইআরইএসকে)-এর সভাপতি, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিনিধি পশতুন নেতা ফজল-উর রেহমান আফ্রিদি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাজনীতিবিদ ফজলে হোসেন হোসেন বাদশা এমপি, ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অব. মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, ব্রিটিশ মানবাধিকার নেতা কলামিস্ট জুলিয়ান ফ্রান্সিস, ভারতের দৈনিক পাইওনিয়ার-এর উপদেষ্টা সম্পাদক লেখক সাংবাদিক হিরন্ময় কার্লেকার, পাকিস্তানের মানবাধিকার নেত্রী, অর্থনৈতিক উন্নয়ন গবেষক-পরিকল্পক ও শান্তিরক্ষা কর্মী তাহিরা আবদুল্লাহ, যুক্তরাজ্যের ওয়ার্ল্ড সিন্ধি কংগ্রেস-এর সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকার নেতা ড. লাকুমাল লুহানা, যুক্তরাজ্যের রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, নির্মূল কমিটির সর্ব ইউরোপীয় শাখার সভাপতি তরুণ কান্তি চৌধুরী, নির্মূল কমিটির সর্বইউরোপীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আনসার আহমদ উল্লাহ ও জাতিসংঘের শিশু অধিকার সম্পর্কিত কমিটির সদস্য ফয়সাল হাসান তানভীর।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT