-ইউএনও
আব্দুল ওয়াদুদ, মৌলভীবাজার।। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় সরকারি বালু বহাল থেকে চলছে অবাধে বালুলুট। এসব বালু ছড়া থেকে প্রায় ৮/৯ বছর ধরে প্রতিনিয়ত স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের মারুয়াছড়া বালু মহালে গেলে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমজীবী মাথায় করে বালু তুলে পাশের সড়কে স্তুপ তৈরি করছে। জানতে চাইলে লালাপুর গ্রামের জসীম পরিচয়ধারী ওই যুবক জানায়, পাশের বাড়ির শিমুল ঘরের কাজের জন্য বালু উঠাচ্ছে। এসময় ছড়ার বালু উত্তোলনের ছবি উঠাতে গেলে লোকগুলো সরে গিয়ে পাশের বাঁশঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানিশাইল গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, লালাপুর গ্রামের রয়েল মিয়া ও জিতেন দাশ দীর্ঘ ৯ বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এই মারুয়াছড়া থেকে। তিনি আরো জানান, এই ছড়ায় বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বালু বিক্রি হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নের ধামাইছড়া ও কালামুয়া থেকে বড়দল এলাকার খালেদ মিয়াসহ আরো কয়েকজন মিলে অবৈধপন্থায় বালু উত্তোলন করে আসছে।
যারা এ বালু উত্তোলন করেছে তারা সরকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছড়াও উপজেলার জমিলা ছড়া, হারছড়া, পুরানলি ছড়া, উদনা ছড়া বালুমহাল থেকে এভাবে অবৈধভাবে স্থানীয় সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা বালু বিক্রি করে আসছে।
এ কয়েক বছর যাবৎ এসব বালু মহাল ইজারা না দেয়াতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। এদিকে এসব বালু মহাল থেকে লুটপাট বন্ধ করতে রাজনগর উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে আটকসহ জরিমানা করলেও নতুন করে আবারো শুরু হয়েছে বালু লুটপাট।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী আক্তারের সাথে বালু মহালের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলাপ হয় গত শনিবার, ১লা জুন। তিনি বলেন, এসব বালুচুরদের আমরা ইতিপূর্বে ধরেছি এখনো ধরছি। কিন্তু আমরা উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে ওরা পালিয়ে যায়। ওদের একটা সোর্স আছে যাদের মাধ্যমে ওরা খবর পায়। ফলে আমরা যাবার আগেই ওরা গায়েব হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, বালুর স্তুপ দেখলে মনে হয় এখনি জমানো হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু অভিযান করেছি, লাখ টাকা জরিমানা করলেও ওদের গায়ে লাগেনা। ইজারা প্রদান দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে মামলা হয়েছে। পরিবেশের ক্ষতির কথা চিন্তা করে ইজারা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। এ মামলার কারণে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইজারা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এখন খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে এটার ব্যবস্থা নেয়া হবে এরকম এক নির্দেশনা এসেছে। তিনি বলেন, মামলা নিস্পত্তি হয়ে গেছে। এখন মন্ত্রনালয় যা করার করবে। কিছুই আমাদের এখতিয়ারে নেই।