চান মিয়া, ছাতক, সুনামগঞ্জ।। ছাতকের সিংচাপইড়ে মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের কালিপুর ও খাসগাঁও এলাকায় এঘটনা ঘটে। জানা যায়, সিংচাপইড় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মো. সাহেলের বিরুদ্ধে ইউনিয়নের ২, ৫ ও ৮নং ওয়ার্ড সদস্যের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ উন্নয়ন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির আনীত অভিযোগে বুধবার ৩টি ওয়ার্ডবাসির ব্যানারে খাসগাঁও বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে ইউপি চেয়ারম্যান সাহেল ও ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান শান্ত পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কালিপুর ও খাসগাঁও এলাকায় রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় পুলিশ ১৩রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও ১৩রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। ঘটনায় শাহাব উদ্দিন মো. সাহেল পক্ষের গুলিবিদ্ধসহ সেলিম(৩০), লিটন(২২), জয়নুল(২৩), হামজা (১৬) ও তাজমুল(১৭), রহমত(৭০) ও লুৎফুর(৬০) ৭ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও নিজাম(৫৫), সেলিম(৩২), জুবেদ(২৫), সুজন(২৫), আনোয়ার(৩০), রাজু(২৫), নিরাজুল(২৬), বাবুল(৩০), সামছ উদ্দিন(৫০), আব্দুল খালিক(৪০), সুমন আহমদ(৩০), রুবেল(২২), আজিজুর(৪৪৩), রুবেল মিয়া(২৪), তারিক মিয়া(২৫), আলিম(২০), বুলবুল(২০), জীবন(৩৫), মিজানুর(২৫), ফজর আলী(৩৫), জয়নুল(৫৫), সৈয়দ আলী(৮০), হুমায়ূন(২৫), ওসমান(৪০), রজব আলী(৪০), কাদির(৫০), মুক্তার(৩০), শুকুর আলী(৭০), হয়া আলী(২০), ছায়াদ মিয়া(৩৫), আব্দুল কাইয়ূম (৩০), শাহজাহান(৩৫), হেলাল(২০), মনসুর(১৮), রাবেজ(১৬), মাহমুদ আলী(৫০)সহ অর্ধশতাধিক ও ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান শান্তর পক্ষে নূর উদ্দিন(৪০), মাসুক মিয়া মেম্বার(৪৫), আমিনুর রহমান (৪০), ইসরাকুল(২৮), ফয়ছল(৩০), জহিরুল(২৫), আয়নাল হক বাচ্চু(৩৫), আমির উদ্দিন(৩২), পারভেজ(৪০), রোকেশ(৪২), রইছ উদ্দিন(৩৫), সাজু(২৫) সহ দু’পক্ষে কমপক্ষে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এদেরকে কৈতক হাসপাতালে ভর্তি ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে মেম্বার পক্ষের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লোকদের নাম জানা যায়নি।
জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ চত্বরে আ’লীগ সমর্থিত সিংচাপইড় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মো. সাহেল ও উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে একপক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। হাতাহাতির বিষয়ে, বিল্লাল আহমদ বাদি হয়ে শাহাব উদ্দিন মো. সাহেলকে প্রধান আসামি করে থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করলে এক আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
একপক্ষ সাহেল চেয়ারম্যানের গ্রেফতার ও অপর পক্ষে চেয়ারম্যানের উপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করে এসব প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অব্যাহত চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় খোদ চেয়ারম্যান সাহেল বাড়ির পার্শ্ববর্তী খাসগাঁও বাজারে পরিষদের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার আজিজুর রহমান শান্ত ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার করম আলী ও ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার মাসুক মিয়ার নেতৃত্বে কয়েকমাস পূর্বের একটি ঘটনা নিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
জানা গেছে, ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের সমর্থক ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মো. সাহেল ছাতক পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর সমর্থক থাকায় বিষয়টি বিবদমান দু’গ্রুপের নেতাকর্মিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দু’পক্ষের কর্মি সমর্থকরা রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ঘন্টাব্যাপী এসংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হয়। খবর পেয়ে জাউয়া পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান শান্ত তার বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করেছে বলে অভিযোগ করলে অপর পক্ষে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে দাবি করেছেন।