মোহাম্মদ রহমান নিউইয়র্ক থেকে।। নিউইয়র্কে রহস্যজনকভাবে খুন হলেন বাংলাদেশি তরুণ আইটি ব্যবসায়ী ফাহিম সালেহ। খুনী সন্দেহে তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশের ‘রাইড শেয়ারিং অ্যাপ’ “পাঠাও”এর এই সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে নিজ এ্যাপার্টমেন্টে খুন হয়েছেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ ফাহিমের নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে মঙ্গলবার বিকালে ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। হত্যাকান্ডের খবর প্রচার হওয়ার পর নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে গভীরভাবে শোক-দুঃখের পাশাপাশি কিছুটা আতংকও নেমে আসে। কেনো এবং কেমন করে এমন হত্যাকান্ড সংগঠিত হলো তা নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
বামদিকে G অংকিত গেঞ্জি পরিহিত নিহত ফাহিম সালেহ। ডানে সন্দেহমূলক হত্যাকারী টাইরিস ডেভন হাসপিল। ছবি: সংগৃহীত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খুন হয়ে যাওয়া বাংলাদেশী যুবক ফাহিম সালেহ ছিলেন “পাঠাও” নামক গৃহে যেকোন মালামাল পৌঁছে দেয়ার একটি সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। নিউইয়র্ক পুলিশ সন্দেহজনক কারণে তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ওই তরুণ নিহত ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী। তার নাম ‘টাইরিস ডেভন হাসপিল। বয়স ২১ বছর। ব্যবসা নিয়ে বিরোধ এবং কয়েক লাখ ডলার চুরির কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে পুলিশ অনুমান করছে।
উল্লেখ্য গত ১৫ জুলাই ম্যানহাটনে নিজের অভিজাত এ্যাপার্টমেন্টে খুন হন ৩৩বছর বয়সী ফাহিম সালেহ। জানা যায়, ঘটনার আগে ফাহিমের সঙ্গেই এ্যাপার্টমেন্টের লিফ্টে প্রবেশ করেছিল পুরো কালো পোষাক পরিহিত হত্যাকারী। লিফ্ট থেকে বের হওয়ার পর ফাহিমের পেছনে আসা হত্যাকারী তার হাত উঁচু করে। এর পরই ফাহিম মেঝেতে পড়ে যান। পরে তাকে এ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। পুলিশের মতে, মৃতদেহের রক্ত জমাট বাঁধা অবদি অপেক্ষা করেছিল হত্যাকারী। শুধু তাই নয়, এ হত্যা সংগঠনের জন্য হত্যাকারী ফাহিমের এ্যাপার্টমেন্টে সারারাত অবস্থান করেছিল। খুন করার পরে হত্যাকারী ফাহিমের মৃতদেহ বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে খণ্ড-বিখণ্ড করে। অনুমান, হত্যার পর পরের দিন তার দেহ কয়েক খণ্ড করা হয়।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায় যে, বিপুল পরিমান টাকা চুরি করার পরও ফাহিম তার সহকারীর বিরুদ্ধে পুলিশী ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাকে চুরির টাকা কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দিয়েছিল। এতে করে পুলিশেরই ধারণা ফাহিমের ব্যবসার পাশাপাশি মানুষের কল্যাণের একটি ধারণাও স্পষ্টভাবে কাজ করতো।
হত্যাকারী ধরা পড়ার পর নতুন করে যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো হত্যাকারী ‘টাইরিস ডেভন হাসপিল’ একাই কি এ খুন করেছে না-কি তার পেছনে আরো খুনিদের হাত রয়েছে?