অনেকেই জানেন আবার বহুজনই জানেন না বিষয়টি। অবশ্য এমন কোন জরুরী বিষয় নয় যে সকলকে জানতেই হবে। তবে অত্যাধুনিক এই তথ্যপ্রবাহের যুগে যার যত বেশী তথ্যের মওজুদ আছে তিনি ততই বড় সম্পদশালী। এই একবিংশ শতাব্দিতে তথ্যকে জ্ঞানের সমার্থক ধরা হয় আর বস্তুতঃ তাই-ই। টাকা-পয়সার পাশাপাশি তথ্যজ্ঞানও তড়িৎ ধনবান হতে প্রথম কাতারের সহায়ক একটা সূত্র। এ যুগে যার তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ তার ধনভাণ্ডারও সমভাবে সমৃদ্ধ। তাইতো এখনকার সময়ে গণমাধ্যমের এতো রমরমা ব্যবসা।
দুনিয়াতে একজন মানুষের পাসপোর্ট লাগে না। কার এতো বড় সৌভাগ্য যে বিনা পাসপোর্টে দুনিয়া ঘুরতে পারেন! সৌদি বাদশা না-কি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট? ভারতের রাষ্ট্রপতি না-কি চীনের প্রেসিডেন্ট? জাপানের রাজা না-কি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট? রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট না-কি বৃটেনের রাণী? মনে নিশ্চয়ই কৌতুক উপলব্দি হচ্ছে, এক্ষুনি জেনে নিতে মন আনচান করছে।
তিনি হলেন বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার বিদেশ ভ্রমণে কোন পাসপোর্ট লাগেনা। যুক্তি হলো, যেহেতু মহামাণ্য রাণীর নামে বৃটিশ পাসপোর্টের ঘোষণা থাকে অর্থাৎ পাসপোর্টের অনুমোদনদাতা মহামাণ্য রাণী স্বয়ং অতএব তার নিজের কোন পাসপোর্টের আর প্রয়োজন নেই। বৃটিশ রাজকীয় ওয়েবসাইট এভাবেই বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছে। আমেরিকার পাসপোর্ট ছাপার সময় লিখা হয়-“We the people of the United States….”(মিনতি ও বিনয়ের সাথে গণতান্ত্রিক আদর্শ ও শক্তির উল্লেখ করে… ইত্যাদি)। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির নামে ছাপা হয়না। তেমনি ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলোর বেলায়ও একই নমুনার লিখা নিয়ে পাসপোর্ট বাজারে ছাড়া হয়। ফলে রাণী ছাড়া আর সকলের ভ্রমণেই নিজ নিজ পাসপোর্টের প্রয়োজন হয়।
বৃটেনের রাণী কমনওয়েলথভুক্ত ৫৩টি দেশের মধ্যে এখনও ১৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। ভারত আমেরিকায় রাজতন্ত্র বাতিল হয়েছে সে অনেক আগে। প্রেসিডেন্ট এসব দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি। ফলে তাদের পাসপোর্ট বহন করতে হয়। যা করতে হয়না কেবল মাত্র বৃটেনের রাণীকে।
আরো জেনে রাখা ভাল যে বৃটেনের রাজপরিবারের আর কোন সদস্য এ সুযোগ ভোগ করতে পারেন না। এমনকি বর্তমান রাণী ২য় এলিজাবেতের স্বামী, যিনি রাজা নন, তাকেও পাসপোর্ট বহন করতে হয়। বহন করতে হয় আর সবাইকে।
অতএব এ বিশ্বে একমাত্র বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেতই একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি পাসপোর্ট ছাড়া ভ্রমণ করে থাকেন। তার কোনরূপ পাসপোর্ট লাগে না।