শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের বিজয়
শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী ভানু লাল রায় নৌকা প্রতিক নিয়ে ৫৮ হাজার ৩শ’ ৫ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদন্ধী আ’লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রেম সাগর হাজরা আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ২শ’ ৮৩ ভোট।
কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে কারচুপি ও ভোট কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দিয়েছেন।
নির্বাচনে অপর দুই প্রার্থী উপজেলা কৃষক লীগের আফজল হকের প্রাপ্ত ভোট ১২ হাজার ৪শ’ ৪৬ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙ্গল প্রতিকে মো. মিজানুর রব পেয়েছেন ৭শ ৯৪ ভোট।
বিজয়ী প্রার্থী ভানুলাল রায়। ছবি: মুক্তকথা
বৃহস্পাতিবার(৭ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত উপজেলার ৮০টি কেন্দ্রের ৫শ’ ৭৯টি বুথে এ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।
সরেজমিনে উপজেলার কালাপুর, ভুনবীর , আশিদ্রোন, মির্জাপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে নারী পুরুষ ভোটারদের ভোট দিতে দেখা গেছে। তবে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম।
অন্যদিকে, চা বাগান অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দুপুর ১টার দিকে উপজেলার কালাপুর ইউপির কাসিমপুর প্রাথমিক স্কুল ভোট কেন্দ্রে রেবের সাথে জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোট কেন্দ্রের পাশে প্রার্থী সমর্থকদের ক্যাম্পেইন সেন্টার ও অস্থায়ী দোকান পাট সরিয়ে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক রেব সদস্য আহত হন। পরে রেব সদস্যরা বাধ্য হয়ে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। এসময় আতংকিত লোকজন ছোটাছুটি করতে থাকে। এঘটনায় কিছু সময়ের জন্য ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহন বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর ১২টার দিকে শহরতলীর আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে কর্মী ও এজেন্টকে মারধর করে বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন আনারস মার্কার প্রার্থী প্রেম সাগর হাজরা।
এদিকে, নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নৌকার প্রধান প্রতিদন্ধী প্রার্থী প্রেম সাগর হাজরা নির্বাচন বর্জনের ডাক দেন। তিনি কেন্দ্র দখল, কর্মী সমর্থকদের মারপিট ও এজেন্টদের বুথ থেকে জোর করে বের করে দেয়ার অভিযোগ আনেন। এসময় তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান ও কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ এর নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র দখল ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেন। এর পরপরই ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী আফজল হকও একই অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
বিজয়ী প্রার্থী ভানু লাল রায় এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। জনগন জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছেন’। এজন্য তিনি উপজেলার সকল ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিদন্ধী প্রার্থীরা নির্বাচনে ভরাডুবি জেনে মিথ্যা অভিযোগে শেষ সময়ে এসে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন’।
উপজেলায় ভোট ২লক্ষ ৩৩ হাজার ৯শ’ ১৬ জন ভোটারের মধ্যে ১ লক্ষ – হাজার- ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব’এর মৃত্যুতে পদটি শূণ্য হয়।
|