1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
মৌলভীবাজার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণ খোলামেলা তবে গোপনে - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন

মৌলভীবাজার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণ খোলামেলা তবে গোপনে

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি॥
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২
  • ৬৮১ পড়া হয়েছে

 

ভেঁঙ্গে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা

এটা খুবই গর্হিত কাজ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

-জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতাহার বিল্লাহ’র ঘুষ বাণিজ্যে ভেঁঙ্গে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষার মানোন্নয়নের চেয়ে ঘুষ গ্রহণই ওই কর্মকর্তার মুখ্য কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়রানির ভয়ে শিক্ষকরা প্রতিবাদ করতে পারছেন না। তবে শতাধিক শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। শিক্ষা কর্মকর্তার এমন কান্ডে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।


কমিশন দিতে হয়

শিক্ষকদের দেয়া লিখিত অভিযোগ এবং একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্লিপ ফান্ড, ক্ষুদ্র মেরামত ও দৈনন্দিন রক্ষনাবেক্ষনের বরাদ্দ থেকে কমিশন দিতে হয় ওই কর্মকর্তাকে। বিদ্যালয় পরিদর্শন, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বিদেশগমন এবং লোনের প্রত্যয়নেও ঘুষ গ্রহণ করেন মোহাম্মদ মোতাহার বিল্লাহ। ঘুষ গ্রহণ তার কাছে অনেকটা খোলামেলাই তবে একটু গোপনে।একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে অফিস মেরামতের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। নামরক্ষামাত্র কিছু কাজ করে টাকা আত্মসাৎ করেন ওই কর্মকর্তা। এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ টাকা থেকে অফিসের আয়ার বেতন দেয়া হয়েছে। অফিসের ১টি নতুন টেবিল আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয় করার কথা থাকলেও এখন কিভাবে নতুন টেবিল কেনা হয়েছে এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করাই ওই কর্মকর্তার মূল উদ্দেশ্য

অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা শিক্ষকদের। সকাল ৯টার সাথে সাথে পরিদর্শনের নামে যেকোনো বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন ওই কর্মকর্তা। এসময় কোনো শিক্ষককে উপস্থিত না পেলে বিকেলে দেখা করার কথা বলে দ্রুত চলে আসেন। বিকেলে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেরিতে আসা শিক্ষক কিংবা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেখা করে টাকা দেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করাই ওই কর্মকর্তার মূল উদ্দেশ্য।টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করে নাম গোপন রাখার শর্তে এক সহকারী শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ে আসতে আমার ২মিনিট দেরি হয়। আমার বিদ্যালয়ের একজন ম্যাডামের ৩০মিনিট দেরি হয়। এসময় টিও বিদ্যালয়ে ছিলেন। আমাদের না পেয়ে বিকেলে অফিসে দেখা করার কথা বলে চলে যান। পরবর্তীতে আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দেখা করে ২ হাজার টাকা দেন। আদপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস কান্তি পাল ঘুষ দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ১০নভেম্বর ছুটিতে ছিলাম। পরবর্তীতে বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম না। তবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে ১৫মিনিট দেরি হয়। দেরির জন্য আমি লিখিত কারণ দর্শীয়েছি।

ঘুষের দৌরাত্ম থেকে দপ্তরীও রেহাই পায় না।

নাম গোপন রাখার শর্তে এক দপ্তরি বলেন, ৫মাস আগে জনতা ব্যাংক মৌলভীবাজার আঞ্চলিক শাখা থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ নেয়ার সময় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে একটি কাগজের প্রয়োজন হয়। তখন ৫’শত টাকা দিয়ে ওই কাগজ আনতে হয়েছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে এক সহকারী শিক্ষক বলেন, বেতন ভাতা বিবরণী থেকে শুরু করে অফিসে প্রত্যেকটি কাজে ঘুষ দিতে হয়। আমার বেতন ভাতা বিবরণী আনতে টাকা দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, পরিদর্শনের নামে প্রতিনিয়ত শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করছেন ওই কর্মকর্তা। এক প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমার বিদ্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক শরীফ উদ্দিনের মাধ্যমে স্লিপ ফান্ড হতে টিও অফিসে ৩হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এভাবে প্রত্যেক বিদ্যালয় থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে।এদিকে সম্প্রতি উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে দাওয়াত দেয়া হয় ওই কর্মকর্তা’কে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক খাওয়া দাওয়ারও ব্যবস্থা করেন। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তাকে কোনো উপঢৌকন না দেয়ায় অফিসে এসে রেগে যান। পরবর্তীতে ওই শিক্ষক অফিসে এসে নগদ টাকা দিয়ে খুশি করেন শিক্ষা কর্মকর্তাকে। এবিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুষ্ঠানের কথা স্বীকার করেন এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নগদ টাকা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

পরিদর্শনের নামে প্রকাশ্যে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন

নাম গোপন রাখার শর্তে এক শিক্ষক নেতা বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রীতিমতো বাণিজ্য শুরু করেছেন। বিদ্যালয় পরিদর্শনের নামে প্রকাশ্যে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। ‘স্লিপ ফান্ড’, ক্ষুদ্র মেরামত ও দৈনন্দিন রক্ষনাবেক্ষন বরাদ্দ থেকেও শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়। বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের মোটরসাইকেল দিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে যান। প্রায় দিন তিনি দিশালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি শেফুলকে সাথে নিয়ে কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে টাকা আদায় করেন। এবিষয়ে দপ্তরি শেফুল তার মোটরসাইকেলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “আমি সরকারি চাকুরি করি, শিক্ষা অফিসার ফোন দিলে বাধ্য হয়ে যেতে হয়। সাইকেলের তেল খরচ কে দেয় জানতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতাহার বিল্লাহ বলেন, আপনারা যাছাই বাছাই করে দেখেন অভিযোগ গুলো সত্য না মিথ্যা। বিদ্যালয়ে দেরিতে আসায় চলতি বছর কতজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২/৪ জন হতে পারে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামসুর রহমান বলেন, এটা খুবই গর্হিত কাজ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT