মৌলভীবাজারের জুড়িতে চাষকৃত রসালো কমলা। ছবি: মুক্তকথা
আব্দুল ওয়াদুদ।। পর্যটন জেলা,চায়ের রাজধানীখ্যাত ও পাহাড়ি অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে কমলা চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কমলাচাষী ও কমলা বাগানগুলোকে আরো উন্নতকরণ,আধুনিক জাতে পরিবর্তন ও ফলন বৃদ্ধিতে সরকারি দফতরের সঠিক তত্বাবধান না থাকায় ফলন ব্যাহত হচ্ছে। জেলার জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় “খাসি জাতের” রসালো কমলা
বানিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হলেও পাহাড়ি অঞ্চলখ্যাত শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে কমলা চাষাবাদ। শ্রীমঙ্গল উপজেলাকে কমলাবাগান এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি এখনো। মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, জেলায় বর্তমানে ১শ ৭৫ হেক্টর জমিতে কমলা চাষাবাদ হয়ে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৩শ ৫০ মেঃটন। ২০১৬ সালের এক জরীপে জেলায় বাগানের সংখ্যা ১শ ৪৬টির তালিকা থাকলেও ২০১৯ সালের বাগানের পরিসংখ্যানসহ আপ-ডেট তালিকা নেই ওই দফতরে। তাদের আগের হিসেবে জেলাজুড়ে প্রায় ১৫শ কৃষক কমলা চাষ করছেন। তাদের সেই হিসেবে জুড়ী উপজেলায় ৮৫ ও বড়লেখা উপজেলায় আরো ৩০টি কমলা বাগান রয়েছে। জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়েনের লালছড়া, শুকনাছড়া, ডুমাবারই, লাঠিটিলা, লাঠিছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুল। সাগরনাল ইউনিয়নের পুটিছড়া ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের কালাছড়া, টালিয়াউরা এবং জায়ফরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর সহ অন্যান্য গ্রামের টিলা বাড়িগুলোতে প্রায় ৪ বিঘা এলাকাজুড়ে ওই জাতের কমলা সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়।
গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের লালছড়া গ্রামের কমলা চাষি মুরশেদ মিয়া বলেন, কমলা একবছর ফলন বেশি হলে অন্য বছর কম হয়। বছরে তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকার খাসি জাতের কমলা বিক্রি করে। তবে ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উন্নত জাতের কমলার চারা রূপণ করে চাষাবাদ করলে বৃদ্ধির পরিমান আরো কয়েকগুন বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এ ক্ষেত্রে তিনি সরকারি সহযোগীতা চেয়েছেন।
সম্প্রতি মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ’র উদ্যোগে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর’র ব্যবস্থাপনায় পাহাড়-টিলা বেষ্টিত জুড়ী’র গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের লালছড়া এলাকায় ৫০জন কমলাচাষীদের মাঝে চাষের উপকরণ বিতরণ করা হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর’র উপ-পরিচালক কাজী জাহাঙ্গির কবীর বলেন, “এই এলাকায় কমলা চাষের অবস্থা তেমন একটা ভাল না”। তবে সরকার চাচ্ছে কৃষকরো কমলা চাষের সাথে সম্পৃক্ত থাকুক। তিনি বলেন,জুড়ী’র লাঠিটিলা এলাকায় আমরা পরিদর্শনে দেখেছি যারা সরাসরি কমলা চাষ করেন তাদের অবস্থা ভাল। ওই এলাকায় এখনো আদী জাতের কমলা চাষ হয়। তবে কমলা চাষীদের কারীগরি প্রশিক্ষনের আওতায় নিয়ে আসা হলে ফলন বৃদ্ধি পাবে।