রঙ্গপীঠ নাট্যদলের দুইযুগ পূর্তিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আলোচনার সভা, রঙ্গপীঠ সম্মাননা, নৃত্য, আবৃত্তি ও নাট্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
“নতুন কিছু কর নতুন কিছু গড়” এই স্লোগানকে ধারন করে সময়ের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে রঙ্গপীঠ নাট্যদল, দলটির দুইযুগ পূর্তি উপলক্ষে গতকাল রবিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আয়োজন করে আলোচনার সভা, রঙ্গপীঠ সম্মাননা ও নাটকের প্রদর্শনী।
আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লেখক-গবেষক গোলাম কুদ্দুছ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মোঃ আউয়াল হোসেন, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল চন্দন রেজা, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারন সম্পাদক আহম্মেদ গিয়াস, আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মানস বোস বাবুরাম, বাংলাদেশ শিশু সংগঠন ঐক্যজোটের সাধারন সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ। রঙ্গপীঠ নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি গোলাম জিলানীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ লিপন। আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন জান্নাতুল ফেরদৌস জুনাইবা ও মোঃ ফজলে রাব্বী।
উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যপট, সুকুমার রায়ের ‘কাজের লোক’ ও কাজী দিনার সুলতানা বিনতীর ‘স্বাধীনতার গল্প’ কবিতার দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে রঙ্গপীঠ শিশুদল। মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘দি প্রপোজাল (অংশ বিশেষ) রচনা আন্তন চেখভ, রূপান্তর নির্দেশনায় গোলাম জিলানী ও ‘শাদিপয়গাম’ (অংশ বিশেষ)গল্প আন্তন চেখভ, রূপান্তর ও নির্দেশনায় গোলাম জিলানী। রঙ্গপীঠ সম্মাননায় ভূষিত করা হয় দলের সহ-সভাপতি জাকারিয়া মুহিত টিপুকে। দলের নির্ভিক নাট্যপ্রাণ ও সৎ নিষ্ঠাবান নাট্যকর্মী হিসেবে দুইযুগ পূর্তিতে দলের এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
১৯৯৯ সালে ১৮ অক্টোবর রঙ্গপীঠ নাট্যদলের পথ চলা শুরু করে, চলার পথে বাঁকে বাঁকে অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে দলটি ২৪ বছর পূর্ণ করে ২৫ বছরে পদার্পণ। দলের এযাবৎ মঞ্চ ও পথনাটকের শুদ্ধ প্রযোজনার সংখ্যা ১৬টি যার মঞ্চায়ন ও প্রদর্শন সংখ্যা চারশতাধিক। বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে দলের নাট্যচর্চা করতে হয়, তবুও সৃজনশীল আর নতুন ভাবনা নিয়ে দলটি কাজ করে যাচ্ছে।
দেশব্যাপী গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ ও শ্রমিক হত্যা এবং তীব্র আন্দোলনের নামে হত্যা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির নিন্দা জানিয়ে গতকাল ১৪টি জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশন যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ ১৪টি জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনের যৌথ স্বাক্ষরে এক বিবৃতিতে গত শনিবার(২৮ অক্টোবর) আন্দোলনের নামে বিএনপি -জামাত কর্তৃক নৃশংসভাবে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিক নির্যাতন, হাসপাতালে আগুন, এ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দেয়া, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা এবং দেশব্যাপী গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ ও শ্রমিক হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণভাবে সভা, সমাবেশ এবং আন্দোলন করার অধিকার সবার থাকলেও সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের জীবন সংহার এবং দেশব্যাপী অচলাবস্থা সৃষ্টির অধিকার কারো নেই। বিবৃতিতে গনতন্ত্র এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিদানকারী সংগঠনগুলো হলো-
১. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ২. বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ৩. জাতীয় কবিতা পরিষদ ৪. বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ ৫. বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ ৬. বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ ৭. বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা ৮. বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ ৯. বাংলাদেশ যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদ ১০. অভিনয় শিল্পী সংঘ ১১. বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার ১২. বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ১৩. বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ ১৪. বাংলাদেশ শিশু সংগঠন ঐক্যজোট।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৫২তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১টায় উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই সীমান্তে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিল করেছে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ড।
১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর ভোরে কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে তৎকালীন সীমান্তরক্ষী ইপিআরের ক্যাম্পে শক্তিশালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি আস্তায় গ্র্যানেড হামলা করে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন বীরশ্রেষ্ঠী সিপাহী হামিদুর রহমান। সেখান থেকে ফেরার পথে সঙ্গে পাকবাহিনীর একটি দলের ছোড়া গুলিতে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন তিনি।
হামিদুর রহমান ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামে ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রæয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আক্কাস আলী মÐল এবং মায়ের নাম কায়মুন্নেসা। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শহীদ হওয়া সিপাহি হামিদুর রহমান ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। হামিদুরের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের খোরদা খালিশপুর গ্রামে।
বিএনপি সরকার আমলে ধলই সীমান্তে ঘটনাস্থল এলাকায় চিরসবুজ চা-বাগানের মাঝে স্থাপন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ। বর্তমান সরকার এ স্মৃতিসৌধ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে তথ্য ও চিত্র সমন্বয়ে এখানে গড়েছে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান জাদুঘর। দেশের মুক্তির জন্য জীবনদানকারী এই বীরের গল্প নতুন প্রজন্মরা জানতে পাচ্ছে কমলগঞ্জের ধলই চা-বাগানে প্রতিষ্ঠিত বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান জাদুঘরের মাধ্যমে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আদমপুর, শমশেরনগর ও শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, খলিল মিয়া (৩২), শাহিন মিয়া (৪২), আজিম উদ্দিন (৩৪) ও প্রণব বৈদ্য (৪০)। বিষয়টি নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আটকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নইনারপার বাজারে ছাত্রদলের নেতা ফয়সাল আহমেদের বাসায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের এক বৈঠকে ধাওয়া করে পুলিশ। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়েন বলে অভিযোগ পুলিশের। এতে পুলিশের চারজন সদস্য আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার পুলিশ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে ও অজ্ঞাত ৩৪-৪০ জন আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।