1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
শুনুন আলাদিনের চেরাগের সন্ধান পেলেন কি করে! - মুক্তকথা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

শুনুন আলাদিনের চেরাগের সন্ধান পেলেন কি করে!

লিখছেন মৌলভীবাজার থেকে হোসাইন আহমদ॥
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩
  • ৯৮৫ পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস

অঢেল সম্পদের মালিক উচ্চমান সহকারী জাকির

জায়গা কিনে বানিয়েছেন বাসা

বিলাসিতার জন্য কিনেছেন গাড়ি

আলাদিনের চেরাগের সন্ধ্যান

মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদানের পরই আলাদিনের চেরাগের সন্ধ্যান পান উচ্চমান সহকারী মো: জাকির হোসেন। ইতিমধ্যে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। মৌলভীবাজারে জায়গা কিনে বাসা বানিয়েছেন। বিলাসিতার জন্য কিনেছেন দামি গাড়ি। বিয়েও করেছেন দুটি। দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে মৌলভীবাজার সোনালী ব্যাংকে এবং নিজের নামে পূবালী ব্যাংকে রয়েছে এফডিয়ার। যুগান্তরের ১ মাসের অনুসন্ধানে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

২০০৮ সালে মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করে ১৫ বছর যাবত একই অফিসেই কর্মরত উচ্চমান সহকারী মো: জাকির হোসেন। নানা অভিযোগে ২০১৪ সালে কর্তৃপক্ষ তাকে বদলি করেন। পরবর্তীতে তদবীর করে ফের ৬ মাসের মাথায়ই আবার আসেন মৌলভীবাজার।

শিক্ষকদের জিম্মি করে ঘুষ নেন

অনুসন্ধানে জানা যায়, নতুন নিয়োগকৃত শিক্ষকদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে পদায়ন, চাকুরিরত শিক্ষকদের চাহিদা সম্পন্ন বিদ্যালয়ে বদলি (অনলাইন বদলি চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত), শিক্ষকদের অবসর ও মৃত্যু জনিত কাজ সহ বিভিন্ন কাজে জেলায় কর্মরত শিক্ষকদের জিম্মি করে ঘুষ নেন জাকির। অনেক দিন অফিসের স্টাফ আসার আগে সকালে আবার কখনও কখনও সন্ধ্যায় নিরবে বাণিজ্য করেন জাকির। অফিসকে তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসায় পরিণত করেছেন। উপজেলা অফিস গুলোতেও রয়েছে তার শক্ত সিন্ডিকেট। কিন্তু শিক্ষকরা হয়রানির ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না। তবে শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

৩৫ লক্ষ টাকা দামের নিউ মডেলের গাড়ি

 

মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী মো: জাকির হোসেন ২০০৮ সালে মৌলভীবাজার যোগদান করেন। যোগদানের পরই ঘুষ গ্রহণে বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। বিলাসি জীবন যাপনের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা দামের নিউ মডেলের একটি গাড়ি কিনেছেন (ঢাকা মেট্টো-গ ৩৪-২৮৯৪)। কাজের মেয়ে হোসনে আরার প্রেমে পড়ে ২০১০ সালে তাকে বিয়ে করেন। মৌলভীবাজারের জগন্নাথপুর এলাকায় দ্বিতীয় বউ হোসনে আরার নামে ৬ শতক জায়গা কিনে ৩ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে একটি বাসা বানিয়েছেন। প্রতিবেদক তার বাসায় গিয়ে দেখতে পান হাতিল সহ দামি ফার্ণিচারে ড্রয়িং রুম সাজানো। ঘরে রয়েছে দামি দামি আসবাবপত্র। সম্প্রতি কুমিল্লায় তার গ্রামের বাড়িতে ছেলের রাজকীয় বিয়ের অনুষ্ঠান করেছেন। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লাতেও রয়েছে তার অনেক সম্পদ। গ্রামের বাড়িতে থাকেন প্রথম স্ত্রী।
নাম গোপন রাখার শর্তে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একজন শিক্ষক বলেন, ভোট তোলার দায়িত্বকালীন সময়ে জাকির আমাকে একাধিকবার অনুরোধ করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক একটা মেয়ের ভোট তোলান। পরবর্তীতে জানতে পারি ওই মেয়েকে তিনি বিয়ে করেছেন।

পাশের বিদ্যালয়ে পদায়নের জন্য ২০হাজার টাকা দাবী

সম্প্রতি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার এক শিক্ষিকা স্বইচ্ছায় অবসরে যান। নাম গোপন রাখার শর্তে তিনি বলেন, আমার অনেক পরিচয় থাকার পরেও জাকির ভাইকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এভাবে তিনি প্রতিটি কাজে শিক্ষকদের জিম্মি করে টাকা আদায় করেন। ২০২৩ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত কুলাউড়া উপজেলার একজন শিক্ষক বলেন, আমার বাড়ির পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে পদায়ন করে দিবেন বলে জাকির ভাই আমার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেয়ায় আমাকে ওই বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হয়নি। সদর উপজেলার এক শিক্ষিকা বলেন, আমার এক আত্মীয়কে চাহিদা সম্পন্ন বিদ্যালয়ে পদায়ন করতে না পেরে জাকির ভাই ঘুষের টাকা ফেরৎ দেন। অবসরে যাওয়া বড়লেখা উপজেলার এক শিক্ষক বলেন, জেলা অফিসে গেলে জাকির কাজ না করে আমাদের কাল অথবা কয়েক দিন পরে আসার কথা বলে বিদায় করে দেন। কয়েকদিন আসা যাওয়া করে বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দিয়ে কাজ করিয়েছি। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা হলে তারা জাকিরের ঘুষ গ্রহণের কথা স্বীকার করেন।

তাদের কাজ করে দিলে অনেকে খুশি হয়ে কিছু টাকা দেন

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি জহর তরফদার বলেন, অনেক শিক্ষকের মুখ থেকে আমিও এ অভিযোগ শুনি। এটা আমাকে পিড়া দেয়। কিন্তু শিক্ষকরা সরাসরি আমাদের কাছে বলেননি। যার কারণে আমরা অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে কিংবা আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে পারিনা। তবে অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা নয়।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী মো: জাকির হোসেন বলেন, প্রতিদিন নানা কাজে শিক্ষকরা আমার কাছে আসেন। তাদের কাজ করে দিলে অনেকে খুশি হয়ে কিছু টাকা দেন। কারো কাছ থেকে জোর করে কিংবা চুক্তি করে আমি টাকা নেইনি। ব্যাংকের টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান ডাকঘরে আমার স্ত্রীর নামে একটা সঞ্চয়পত্র ছিল। এটা ভেঁঙ্গে সোনালী ব্যাংকের কোর্ট শাখায় আমার স্ত্রীর নামে ৫ লক্ষ টাকার এফডিয়ার করে রেখেছি। পূবালী ব্যাংক ওয়াবদা শাখায় মাসিক ৫ হাজার টাকার একটা ডিপিএস রয়েছে। মৌলভীবাজারে বাড়ি এবং গাড়ির বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যাংক লোন এবং বন্ধু ও পরিচিত জনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এগুলো করেছি। আমি অনেক টাকা ঋণে আছি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামসুর রহমান বলেন, জাকিরের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় কোনো শিক্ষক আমার কাছে কখনও বলেনি। তবে আপনি যেহেতু অনুসন্ধান করে পেয়েছেন আমি উনাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করব।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT