মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। গতকাল শনিবার ৩১শে আগষ্ট ছিল সারা বৃটেন জুড়ে প্রতিবাদের দিন। বৃটেনের শক্তিশালী বিরুধী দল ও ট্রেড ইউনিয়ন সম্মিলিতভাবে রক্ষণশীল বরিস জনসন সরকারের ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল এই সমাবেশের আয়োজন করে। এ আয়োজনকে সফল করে তোলার উদ্দেশ্যে কেমডেনের শ্রমিকদল একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের রাসেল স্কোয়ারে এক জমায়েতের আয়োজন করে। জমায়েত শেষে এখান থেকে সংসদ ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সকলেই যোগ দেয়।
কেমডেন কাউন্সিলের শ্রমিকদলীয় নেতা জর্জিয়া গোল্ডের পরিচালনায় আয়োজিত জমায়েতে বক্তব্য রাখেন কেমডেন শ্রমিকদলের এমপি স্যার কেয়ার স্টারমার, এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, বিরুধী লিবারেল ডেমোক্রেট, গ্রীন পার্টি ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। বক্তাগন সকলেই সংসদের অবসরকালীন বন্ধের সময়ে মন্ত্রীপরিষদের সভা ডেকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে নিঃশর্তভাবে বেরিয়ে আসার সরকারদলীয় পদক্ষেপকে ‘ক্যু’ বলে অভিহিত করেন এবং কোন অবস্থায়ই এমন হতে দেবেন না বলে তাদের দৃঢ়তার কথা তুলে ধরেন।
এদিকে নব্য প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে স্বাভাবিক নিয়মের সংসদীয় অবসরকালীন ছুটির জন্য মহামান্য রাণীর কাছে আবেদন করেছেন। রাণী প্রথাসিদ্ধ নিয়মে তা অনুমোদন করেছেন। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা সরকার এ সময়ে জাতীয় সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে সরকারীভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পায়তারা করছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগেভাগেই ঘোষণা দিয়েছেন প্রয়োজনে সংসদের অবকাশকালীন বন্ধের সময় তিনি সরকার ডেকে ব্রেক্সিট বিষয়ে বেরিয়ে আসার পক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন। প্রধান মন্ত্রীর এমন ঘোষনায় দেশের সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সকলেরই অভিমত, এ কেমন গণতন্ত্রের অনুশীলন(?)। গণতন্ত্রের জন্ম যেখানে সেখানেই কি গণতন্ত্রের কবর রচনা হবে। রক্ষণশীল দলের প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী জনমেজর প্রকাশ্যে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বক্তব্য রেখেছেন। এ ছাড়াও সরকার দলের অনেক এম পি বরিস সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জোড় মত প্রকাশ করেছেন।
সরকারের এমন লেজেগোবরে অবস্থায় দেশের বৃহৎ বিরুধী শ্রমিকদলের নেতৃত্বে আগামী ৪ঠা সেপ্টেম্বর হোম অফিসের সামনে বিকেল ৬টায় বিক্ষোভ দেখানো হবে। শ্রমিক দলের এ কর্মসূচীতে সমর্থন জানিয়েছে গ্রীন পার্টি, গ্লোবেল জাস্টিজ নাও, পোলিশ রেইনবো, ফারসা(পোলিশ ফেমিনিস্টস) এবং শ্রমিকদলীয় ‘হোমলেসনেস কেম্পেইন’সহ আরো বহু ছোট ছোট দল ও গুষ্ঠী।
তাদের বক্তব্য, সরকার ইতিমধ্যেই মানুষের অবাধ স্বাধীন যাতায়াতকে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছ। আগামী ১লা নভেম্বর ‘নো ব্রেক্সিট ডিল’ এর মূহুর্ত থেকে তা কার্যকরী করতে সরকার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের এ পদক্ষেপে পলমাত্র সময়ের ব্যবধানে দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের আইনি অবস্থা বদলে যাবে। নাজুক অবস্থায় থাকা বহু অভিবাসী দেশ থেকে বহিস্কৃত হবার বিপদে পড়বেন।
অবাধ যাতায়াত পদ্ধতির সুবিধা একজন কর্মজীবী মানুষকে কর্মক্ষেত্রে তার স্বাধীনতা ও অন্যান্য স্বার্থ রক্ষায় রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। এতে করে একজন শ্রমজীবী মানুষ আইনের ভেতরে থেকেই কাজ করার সুযোগ পায়। ফলে সে তার ইচ্ছাস্বাধীন ইউনিয়নে যোগ দিতে পারে এবং কর্মক্ষেত্রে উর্ধতম কর্মকর্তার হুমকি থেকে(বিশেষ করে দেশ থেকে বের করে দেয়ার হুমকি) নিরাপদ থাকতে পারে।
|