একজন প্রেমানন্দ দেব। বয়স ৬৫ ছাড়িয়ে গেছে। পেশায় কর্মকার। দাও কাঁচি নিয়েই তার ব্যবসা। মৌলভীবাজার শহরের পুরাতন হাসপাতালের পাশেই ভাড়া ঘরে তার দাও-খুন্তি-কুড়াল আর কাঁচি তৈরীর কারখানা। ৩৫বছর ধরে এ কাজ করছেন। এ কথা বলার কোন প্রয়োজন হয় না যে দাও-কাঁচি-কুড়াল এগুলো তৈরীতে তিনি একজন দক্ষ কারিগর। একনজর দেখেই চিনতে পারেন লোহা না ইস্পাত!
যদিও পৈত্রিক পেশা ছিল সোনার। সবই সময়! সময় অনেক কিছুই বদলে দিতে পারে। কালের অমোঘ চক্র তাই প্রেমানন্দের জীবন চাকাও ঘুরিয়ে দিয়েছে। সংসারে টানা-পোড়েন থাকায় লেখা-পড়ায় অগ্রসর হতে পারেননি প্রেমানন্দ। ফলে জীবন জীবিকার তাগিদে অবশেষে তাকে বেঁচে নিতে হয় কর্মকারের জীবন। প্রথম প্রথম খুবই কষ্টের কাজ মনে হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে সবকিছু কেমন অভ্যেসে পরিণত হয়ে যায়। এখন দা-কুড়াল-কাঁচি বানানো তার কাছে অনেকটা নস্যি। কোন সহযোগী ছাড়াই একা একা নিজে ঘন্টায় ৩খানা দাও বানাতে পারেন প্রেমানন্দ।
বর্তমানে দৈনিক তার রোজগার ৫০০টাকা। স্ত্রী ও ৩ ছেলে নিয়ে সংসার কোন মতে চলে যায়। প্রেমানন্দের গ্রামের বাড়ী মৌলভীবাজার উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের জাকান্দি গ্রামে।