৬মাসের ব্যবধানে একই পরিবারের দু’ভাইকে প্রাণ হারাতে হলো নিষ্ঠুর চাকু আক্রমণে। এরও ৫বছর আগে ২০১৩ সালে তাদেরই আরেক চাচাতোভাইকে একইভাবে প্রাণ দিতে হয়েছিল চাকুর আঘাতে এই কেমডেনেই।
গত ২০শে ফেব্রুয়ারীর সেই হিমেল রাতে যে দু’যুবক চাকু আক্রমনে প্রাণ দিলেন তাদেরই একজন ২০ বছর বয়সের সাদিক আদম হলেন তাদের পরিবারের ৩য় সন্তান, এই নিষ্ঠুর চাকু আক্রমনে দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। মাত্র ৬মাস আগে এই সাদিক আদমের ভাই মোহামেদকে কেমডেনের ‘মর্নিংটন ক্রিসেন্ট’ এলাকায় চাকুমেরে হত্যা করা হয়। প্রাণঘাতী এই চাকু আক্রমনের কিছু বিবরণ একটু বিস্তারিত করে লিখেছে অনলাইন ‘কেমডেন জার্ণাল’।
জানা যায়, ২০১৩ সালে নিহত মোহামেদ আব্দুল্লাহি’র বাবা যিনি নিহত সাদিক আহমেদ এর চাচা হন, মিঃ আইদারুস আহমেদ, তার ছেলের মৃত্যুর পর থেকে ‘চাকুমারা অপরাধ’ এর বিরুদ্ধে প্রাচারাভিযান চালিয়ে আসছেন খুবই ইতিবাচকভাবে। তিনি কেমডেন জার্ণালকে বলেছেন, ‘আমি জঘন্য নিষ্ঠুর এই চাকুমারা অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্ছার থাকবো। কেমডেনকে এই চাকুমারা সংস্কৃতি থেকে বদলানোর জন্য আমি আমার কাজ চালিয়ে যাবোই।’ ওই সময়, ওই ২০১৩ সালে তার ছেলের মৃত্যুর পরই প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসামূলক প্রাণঘাতী চাকুদিয়ে আক্রমণের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার হওয়ায় খুব প্রশংসিত হয়েছিলেন।
কেমডেন জার্ণালকে এই আইদারুস আহমেদ আরো বলেছেন, “আমাদের সম্প্রদায়ের মাঝে এখন এটি একটি বিরাট প্রশ্ন যে কেনো আমাদের বাচ্চাদের সাথে এমন করা হচ্ছে। আমাদের সন্তানেরা এখন ঘর থেকে বের হয়ে গেলে মা-বাবাদের মন অস্থির হয়ে থাকে, মনে হয় যেনো বাচ্চাটি আর ফিরে আসবে না। কেনো এমন হবে? কি রয়েছে এর পেছনে? আমাদের অবশ্যই একটি কিছু করতেই হবে।”
অপরাধমূলক এই চাকুমারা অপঘটনার পর স্থানীয় ‘কুইন্সক্রিসেন্ট সেন্টার’এ অভিবাবকদের এক বৈঠক বসে গতকাল বুধবার রাতে। কেমডেন কাউন্সিলের লিডার জর্জিয়া গোল্ড, কেমডেনের ওই এলাকার এমপি স্যার কেয়ার স্টারমার এবং কেমডেনের পুলিশ প্রধান নিক ডেভিস ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। অভিবাবকেরা তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়টি শক্তভাবে তুলে ধরলে তার জবাবে পুলিশ প্রধান ও নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কেমডেনে দীর্ঘকালব্যাপী চলে আসা যুবঅপরাধ এবং আমাদের যুবকদের নিরাপত্তা বিধানই আমাদের এ সময়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রধান কর্তব্য।” এর আগে তারা নৃশংস এই চাকুমারা অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
এদিকে পুলিশ এ পর্যন্ত ৪জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের গাড়ীতে ঢেঁকি আকারের চঞ্চুবৎ চাকু(রাম্বো স্টাইল) পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ বলেছে, এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হবে এবং প্রতিশোধমূলক কিছু না ঘটে সে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সচ্চেস্ট থাকবে। আজ দুপুরের পর মল্ডেন রোড থেকে পুলিশের বেষ্টনী তুলে নেয়া হয়েছে।