লন্ডন: বুধবার, ২৫শে মাঘ ১৪২৩।। “মৌলভীবাজারের সুশীল সমাজ একজন সত্যিকারের সমাজহিতৈষী শিক্ষক ও পরোপকারী একজন সমাজসেবককে হারালো। তাদের স্থান কোনকালেই পূরণ হবার নয় মন্তব্য করে বক্তাগন তাদের স্মরণে কোন ভবন, সড়ক, উদ্যান, হাসপাতাল কক্ষ কিংবা অনুরূপধর্মী কোন স্থানে স্মৃতি রক্ষার ব্যবস্থা করার দাবী মৌলভীবাজার পৌর প্রশাসনের উদ্দেশ্যে উত্থাপন করেন।”
মৌলভীবাজারের অধ্যাপক করুণাময় রায় ও কম্যুনিস্ট পার্টির নেতা ইয়াহিয়া মুজাহিদের পরলোক গমনে গতকাল মঙ্গলবার ৭ই ফেব্রুয়ারী লন্ডনের ১০১ খৃষ্টান সড়কস্ত ‘ডার্কনেস হাউস কম্যুনিটি সেন্টার’এ মৌলভীবাজারের কয়েকজন প্রবাসী রাজনীতিক ও সমাজকর্মীর উদ্যোগে এক শোক সভার আয়োজন করা হয়। শোকসভায় বিশিষ্ট বক্তাগন উপরোক্ত আবেদন রাখেন।
সভায় সর্বজন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক করুণাময় রায়ের কর্মবহুল জীবনের উপর আলোকপাত করে সকলেই বক্তব্য রাখেন। সকলেই তাদের বক্তব্যে অধ্যাপক শ্রী রায়ের সহজ সরল জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। বক্তাগন, শ্রী রায়ের ‘করুণাময়’ নামাকরণের স্বার্থকতা তুলে ধরে বলেন-“সত্যি স্রষ্টার করুণাধারায় সিক্ত ছিল তার মন ও হৃদয়। তার জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে তিনি নাম, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই সহায়তা দিয়ে গেছেন। শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি তার আচরণ সহানুভুতিশীল অনুকরণীয় এক ব্যতিক্রমি পাঠ।
শিক্ষক হিসেবে তার সহায়তার হাত ছিল সব সময়ই খোলা। নির্দ্বিধায় অকাতরে তিনি জ্ঞানের মশাল হাতে ঘুরে বেরিয়েছেন এ ঘর থেকে ও ঘরে প্রতিটি ছাত্রের সহায়তায়। একজন শিক্ষকের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন খাঁটী অভিভাবকও। মহাবিদ্যালয়ে তিনি যেমন ছিলেন একজন দক্ষ শিক্ষক ঠিক তেমনি মাঠে ছিলেন তিনি একজন নিপুণ ক্রীড়াবিদ।”
ইয়াহিয়া মুজাহিদ সম্পর্কে বক্তাগনের অভিমত- “প্রয়াত ইয়াহিয়া মুজাহিদ ছিলেন আমৃত্যু একজন সাম্যবাদী কর্মী, নেতা ও অনুশীলনকারী। মুজাহিদ শুধুই একজন রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা ছিলেন না,
ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক উদারনীতির সমাজসেবক। মুজাহিদ তার জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত অকাতরে সময় দিয়ে গেছেন নিরীহ সাধারণ মানুষের কল্যাণে। তাদের মৃত্যু মৌলভীবাজার তথা সমগ্র দেশের অস্থির সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি। বিশেষ করে মৌলভীবাজারের সুশীল সমাজের জন্য তাদের তীরোধান কোনদিনই পূরণ হবার নয়।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘গ্রেটার সিলেট উন্নয়ন ও কল্যাণ কাউন্সিল’ এর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মৌলভীবাজারের প্রাক্তন ছাত্রইউনিয়ন নেতা ও এক সময়ের নীতিনিষ্ঠ সাংবাদিক রাজনগরের জনাব আব্দুল মন্নান।
সভায় বক্তব্য রাখেন-
সাংবাদিক হারুনূর রশীদ, কবি গোলাম কবির, রাজনীতিক মসুদ আহমদ, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল কয়ছর, সমাজকর্মি আব্দুল হান্নান তরপদার, রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী মৃণাল সেনগুপ্ত, কম্যুনিটি নেতা আব্দুল ওয়াহেদ মোশাহেদ, রাজনীতিক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, ব্যবসায়ী রাজনীতিক মুজিবুর রহমান জসিম, সলিসিটার সৈয়দ আবু আকবর ইকবাল, সলিসিটার সুভাগত দে সুভ, বিজন ভট্টাচার্য্য, সলিসিটার এহসানুল হক সুমন, ইফতেখারুল হক, নজরুল ইসলাম ওকিব, বিভা রায় ও গোলাম আকবর মুক্তা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।