মোঃ ফরহাদ হোসেন।। মৌলভীবাজার, বৃহস্পতিবার ১১ই ফাল্গুন ১৪২৩।। মৌলভীবাজারের রাজনগরে গত ৫ বছরে সরকারী ৭টি বালু মহাল ইজারা না হওয়ায় অবাদে চলছে বালু লুট। এসব মহাল থেকে প্রতিবছর স্থানীয় সরকারী দলের নেতাকর্মীরা বালু লুট করছে। রাজনগর উপজেলার ধামাইছড়া, কালামুহা, জমিলা ছড়া, হাড়ছড়া, পুরানলি ছড়া, উদনা ছড়াসহ ৭টি বালু মহাল ইজারা না হলেও সরকার দলীয় প্রভাবশালীরা প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এতে সরকার প্রতিবছর অর্ধ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
এদিকে বালু চোরদের ধরার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। চোরদের সোর্স থাকায় অভিযানের আগেই খবর পেয়ে প্রায়ই পালিয়ে যায় বালু লুটেরার দল। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকালে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম অভিযান চালান উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ধামাইছড়া বালু মহালে। সেখান থেকে বালু চুরির সময় দুটি ট্রাকসহ (সিলেট ড-১১-২১৮৫ ও মৌলভীবাজার মেট্রো-ড-১১-০৬১২) সহ ৪ জনকে আটক করেন তিনি। আটককৃতরা হলেন চানভাগ গ্রামের হামদু মিয়ার ছেলে জগলু মিয়া (২৮), মুটুকপুর গ্রামের মতাই মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২৩) ও চনু মিয়ার ছেলে আব্দুল আহাদ (২৩) এবং উত্তরভাগ চা বাগানের অপিন মিয়ার ছেলে সুমন (১৮)। এসব ট্রাক থেকে ১৩০ ঘনফুট বালু ১০০ ফুট মাটি জব্দ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ট্রাকচালক সোহেল মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড, আব্দুল আহাদ ও সুমনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ড এবং ট্রাক চালক জগলু মিয়াকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এসব মহাল ইজারা বন্দোবস্ত না দিতে পরিবেশবাদী আইনজীবিদের সংগঠন ‘বেলা’-র করা মামলা ৫ বছরেও নিষ্পত্তি না হওয়ায় সরকার হারাচ্ছে বিরাট অংকের রাজস্ব।প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালু লুটেরাদের ঠেকাতে প্রায়ই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হলেও এসব মহালে পরিবেশবাদী আইনজীবিদের সংগঠন ‘বেলা’-র করা মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, বালু চোরদের আটক করে ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আদালতের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় বালু মহালগুলো ইজারা বন্দোবস্ত দেয়া যাচ্ছেনা। এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে বালু চোরেরা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার বালু লুট করছে। তবে তাদের ঠেকাতে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে।