1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী বিদেশী শিশু-কিশোরকে আমেরিকা আটকে রেখেছে
 - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন

বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী বিদেশী শিশু-কিশোরকে আমেরিকা আটকে রেখেছে


সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯
  • ১৩০৩ পড়া হয়েছে

আশ্রয়প্রার্থী বিদেশী শিশু-কিশোর বা কিশোরীরা ‘ফস্টার কেয়ার’ এ আছে। ছবি: এপি

ফস্টারের নামে শিশু-কিশোরদের জৈবিক মাতা-পিতা থেকে সরিয়ে রাখার আসল উদ্দেশ্য কি জঙ্গী তৈরী করা?

মুক্তকথা নিবন্ধ।। মাত্র ৩বছর বয়সে দেশান্তরী হয়ে এই কিশোরী এসেছিল আমেরিকায় বসবাস করতে। ৩বছরের শিশু একাতো আর আসতে পারে নাই। এসেছিল বাবার কোলে বসে আদরে দুলতে দুলতে। বাবার উদ্দেশ্য একটিই ছিল উন্নত জীবনের জন্য আমেরিকায় বসবাস। কিন্তু মানুষ সব জায়গায় সমান নয় এ সত্য তার জানা ছিল না। হারে হারে শয়তান আর বদলোক যে আমেরিকার প্রশাসনের বিভিন্ন কোনায় আছে সে অভিজ্ঞতাও তার ছিল না। দুধের শিশু মেয়েকে নিয়ে আমেরিকার মাটিতে পা দিতেই আমেরিকার সীমান্ত আইন বাবা থেকে দুধের শিশুকে ছিনিয়ে নেয়। তার পরের কাহিনী বিষাদে ভরা। 
বাবার উদ্দেশ্য ছিল কচি মেয়েকে নিয়ে সপ্তাহখানেক ঘুরাফেরার পর দেশান্তরী মানুষ হিসেবে মেয়েকে নিয়ে থাকার জন্য আশ্রয় চাইবেন। অবশেষে করলেনও তাই। কিন্তু এই আশ্রয় চাওয়ার বিপরীতে যে তার প্রানপ্রিয় সন্তানের জন্য সর্বনাশী এক বিষধর সাপ ফনা তুলে অপেক্ষা করছে তাও ছিল তার জানার বাইরে। বাবা আশ্রয় প্রার্থনা করেন আমেরিকায় বসবাসের। দেশান্তরী হিসেবে আশ্রয় চাওয়ার কারণে, হন্ডুরাস থেকে আসা ৩বছরের এই শিশুকন্যাকে আমেরিকার আইনানুসারে সীমান্তরক্ষীরা বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ‘ফস্টার কেয়ার’-এ পাঠায়।
অত্যন্ত হৃদয়বিদারক হলেও সত্য যে, যেখানে তাকে আদরে গড়ে তোলা হবে সেই ‘ফস্টার কেয়ার’ নামের দানবীয় আটক কেন্দ্রে ৩ বছর বয়সের ওই মেয়েটির উপর চলে বলাৎকার। ‘ফস্টার কেয়ার’এর লিখিত সরকারী দলিলে এপি উদ্ধার করে যে ঘটনা তা অবাক করে দেয়ার মত ঘটনা। এই কিশোরীর সাথে কেয়ারহুমে আরেকটি মেয়ে থাকতো যে কি-না প্রতিনিয়ত তাকে উত্ত্যক্ত ও যৌন নিপীড়ণ করতো।
বাবা জানেনা তার মেয়ে কোথায় কিভাবে আছে। মেয়ে জানতো না প্রানের চেয়ে অধিক প্রিয় বাবা কোথায়! ৩বছরের মেয়ে কি-ই বা বুঝে! ভয়, শঙ্কা আর অশ্রুধারায় কেঁদে কেঁদে সময় কেটেছে তার।
 
কোন ধরনের মানসিকতা থেকে আমেরিকায় এমন আইন চালু আছে তা এক বিস্ময়ের বিষয়। কোন নীতিবলে একটি শিশুসন্তানকে তার বাবা থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়, তার পেছনের রহস্য কি? এমন প্রশ্ন রাখা মোটেও অযৌক্তিক নয়।

আটক শিশু-কিশোরের কয়েকজনকে একজন ‘ফস্টার কেয়ারার’এর সাথে খেলতে দেখা যাচ্ছে। ছবি: এপি

এই কাহিনী ‘এসোসিয়েটেড প্রেস এবং পিবিএস সিরিজের চলমান একটি তদন্তধর্মী সংবাদ-এর অংশ। আমেরিকায় আশ্রয়প্রার্থী শিশু-কিশোরদের রাখা আটক কেন্দ্রগুলোতে অবস্থা কেমন “কিডস কট ইন দি ক্র্যাকডাউন” নামের তদন্তমূলক গবেষণাধর্মী ছবির কাহিনী থেকে নেয়া। 

হন্ডুরাসের ওই বাবা আশ্রয় পাননি। তাকে আমেরিকা থেকে বের করে দেয়া হয়। ৩ সপ্তাহ তিনি জানতেই পারেননি তার অন্তরের ধন প্রিয় কন্যা কোথায় আছে কেমন আছে। মাসতিনেক পরে ‘ফস্টার কেয়ার’ থেকে তার সাথে কথা বলার জন্য তার মেয়েকে দেয়া হয়। ততদিনে ‘ফস্টার কেয়ার’-এ থেকে মেয়েটি ৪বছরে পা দিয়েছে। ফোনের ওই প্রান্ত থেকে মেয়েটি অজোর ধারায় কাঁদছিল আর হৃদয়ভাঙ্গাস্বরে বাবাকে বলছিল, “বাবা আমাকে একা ফেলে তুমি কোথায় গিয়েছিলে। কতদিন হয় আমি তোমাকে পাইনি বাবা। কেনো আমাকে ফেলে গেলে? আমি তোমাকে ভালবাসিনা বাবা!” 
‘ফস্টার কেয়ার’ নামের ওই জাহান্নমে রেখে ইতিমধ্যেই তার জীবনকে যে তার কাছে বিষময় করে তোলা হয়েছে তার কি হবে? কে দেবে এর উত্তর। কঁচি ৩ বছরের শিশু কিই-বা বুঝে আশ্রয়ের। দেশান্তরী হয়ে বাবার সাথে আশ্রয় চাওয়া অবশ্যই আইন কিংবা নীতি বিরুদ্ধ কোন কাজ ছিল না তার। কিন্তু এখন…!
সে যখন বাবার সাথে ফোনে কথা বলছিলো তখন তাকে মনে হয়েছে উদ্ভ্রান্ত, উন্মাদ, দিশেহারা রাগে কট মট করছে। কাঁদতে কাঁদতে সে বাবাকে বলেছে তুমি কোথায় ফেলে এসেছিলে বাবা! এপি ও ফ্রন্ট লাইনের কাছে ওই শিশুর বাবা এমন সব তথ্য দিয়েছেন। এপি’র কাছে শিশু মেয়ের বাবা রাজী হয়েছেন তার মেয়ের মামলার বিষয়ে কথা বলতে। তবে তিনি তার নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ করতে চাননি।
এবছর প্রায় ৭০ হাজার শিশু-কিশোর আমেরিকা সরকারের দায়ীত্বে আছে যার পরিমান গতবছরের চেয়ে ৪২ভাগ বেশী। এসকল শিশু-কিশোররা তাদের পরিবার-পরিজন থেকে সম্পূর্ণ অপরিচিত মানুষের সাথে, অনেক সময় তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধেও থাকতে হচ্ছে। নিজেদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে দীর্ঘসময় আটক কেন্দ্রে থাকা শিশু-কিশোরদের জন্য খুবই ভয়ানক নিষ্ঠুরধর্মী এক ক্ষতিকর ব্যবস্থা বলে সরকারের স্বীকৃতি থাকলেও ট্রাম্প প্রশাসনের শক্ত আবাসন কৌশল এভাবে আটক রাখার সময় মেয়াদ অনৈতিকভাবে আরো বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। 
২০১৩ সালে একইভাবে ২হাজার শিশু-কিশোরকে অষ্ট্রেলিয়া আটক করে রাখে। 
ক্যানাডায়ও অনুরূপভাবে শিশু-কিশোরদের তাদের জৈবিক মা-বাবার কাছে থেকে সরিয়ে নেয়া হয় ‘ফস্টার’ কথার সুবাদ দেখিয়ে! ১৫৫জন শিশু-কিশোরকে ২০১৮সালে ক্যানাডা আটক করে রাখে। ২০১৭সালে যুক্তরাজ্যেও ৪২টি শিশু-কিশোরকে অনৈতিকভাবে ‘ফস্টার’ নামক দৈত্যের বরাতে আটক রাখা হয়েছিল। এপি এসব তথ্য সরকারী সূত্র থেকে সংগ্রহ করেছে।
শিশু বয়সের অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান আমাদের মগজ ও শরীরে গড়ে উঠে। বলেছেন ড. জেক সনকফ্ফ। এই ড. সনকফ্ফ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিচালনা করেন। এ বছরের শুরুতেই এই শিক্ষক আমেরিকার কংগ্রেসে বলেছেন, শিশু-কিশোরদের মা-বাবা বা প্রাথমিক যত্ন-আত্তি যারা করে থাকেন তাদের থেকে শিশুদের সরিয়ে আটক কেন্দ্রে রাখা শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। কয়েক দশক ধরে বহুবিদ গবেষনায় তাই পাওয়া গেছে। এ সময়ই শিশু-কিশোরদের মগজ সেজেগুজে গজিয়ে উঠে। এককথায় মন-মনন গড়ে উঠার সময় এটি। তিনি আরও বলেছেন, প্রতিবেদনশীল ও সুস্থিত সম্পর্ক সুস্থ মস্তিস্ক নির্মাণকৌশল গড়ে উঠায় সহায়তা করে। সুস্থভাবে গড়ে উঠার এই সম্পর্ক যদি বাধাগ্রস্ত হয় তা’হলে শিশু-কিশোরদের মন ও মনন প্রয়োজনীয় ইতিবাচক পুষ্টতা থেকে বঞ্চিত হয় এবং এই বঞ্চনার স্থান দখল করে পীড়ন-নিষ্পেষণ বেদনশীলতা। ফলে, মন-মননের গড়ে উঠার কোষ বাধাগ্রস্থ হয়। পুরাতন ক্ষতি ও মা-বাবা থেকে পৃথক থাকার কারণে অনেক সময় অপ্রীতিকর মানসিক আঘাতপ্রাপ্তের অবস্থা প্রাপ্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। সূত্র: এপি ও পিবিএস থেকে (পরের সংখ্যায় সমাপ্ত হবে।)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT