শ্রীমঙ্গল পৌর মেয়র মহসিন মিয়া মধুকে গ্রেফতারের দাবীতে
কমলগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের হত্যাকারীদের আশ্রয়দাতা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধুকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কমলগঞ্জ উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সেসময় শিক্ষার্থীরা, “জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, দালালরা হুশিয়ার সাবধান, আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না” ইত্যাদি স্লোগানসহ পৌরসভার মেয়রের গ্রেফতারের দাবীতে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমলগঞ্জ উপজেলার সমন্বয়ক মোহাম্মদ মিলাদ আহমেদ ও তোহেল আহমদ। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজের সমন্বয়ক মোহাম্মদ মিলাদ আহমেদ বলেন, বিজয় শুধু ছাত্রদের একার নয়। এ বিজয় আপমর ছাত্র জনতার। এখনো পরাজিত শক্তিরা নতুন স্বাধীনতাকে ধূলিসাৎ করার পায়তারা করছে। আমাদের লড়াই সংগ্রাম এখনও থেমে যায়নি। এ লড়াই চলবে। এসময় তিনি শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধুকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানান।
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-চাতলা সড়ক;
ঝুঁকির মুখে শরীফপুরে মনু সেতু
রাতের আঁধারে ভারী যানবাহনে বালু পরিবহন;
মানা হচ্ছে না সওজের আপত্তি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মনু নদীর সেতু সংলগ্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও ভারী যানবাহনে পরিবহন হচ্ছে। বালু উত্তোলনে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আপত্তি উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে ভারী যানবাহনে বালু পরিবহন করা হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে মনু সেতু ও বাঁধ এবং চাতলা-শমশেরনগর ও শ্রীমঙ্গল সড়ক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মনু নদীর পাশর্^বর্তী স্থান থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন ও অধিক ভারী যানবহনে পরিবহন হচ্ছে। এতে নদীর বাঁধ, সেতু ও সড়ক হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীয়রাও বালু উত্তোলন বন্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জেলা সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলীও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিটি দিয়েছেন। তারপরও রোধ হচ্ছে অধিক ভারী যানবাহনে বালু পরিবহন।
সওজের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে সড়ক বিভাগ (সওজ) মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার হামিদ স্বাক্ষরিত একটি সচিত্রপত্রে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে ভারী যানবাহনে বালু পরিবহন বন্ধের অনুরোধ করেন। পত্রে বলা হয়, ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ (সিলেট জোন)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মৌলভীবাজার-শমশেরনগর-চাতলা চেকপোস্ট এবং কুলাউড়া-শমশেরনগর-শ্রীমঙ্গল সড়কের উন্নয়ন কাজ সদ্য শেষ হয়েছে। সড়কদ্বয়ের বালু মহালদারদের বালু বহনকারী ধারণ ক্ষমতার অধিক ভারী গাড়ি নিয়মিত চলাচলের কারণে সড়কদ্বয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ৪০-৫০ টন বালু বহনকারী ভারী ট্রাক নিয়মিত চলাচলের কারণে সড়কের ফাউন্ডেশন সহ সড়ক পেভমেন্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সড়কদ্বয়ের দেবে যাওয়া, পেভমেন্টের স্থায়ীত্বতা রক্ষা ও যান চলাচলের স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার নিমিত্তে ধারণ ক্ষমতার অধিক ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
জামাল আহমেদ, তাজুল ইসলাম, আশরাফুল হোসেনসহ শরীফপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালু উত্তোলনের নীতিমালায় সেতু এলাকার এক কি.মি. দূর থেকে বালু উত্তোলনের কথা থাকলেও মনু নদীর শরীফপুর সেতুর পাশর্^বর্তী স্থান থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এতে মনু সেতু ও নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় পরিবেশ, প্রতিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া অধিক ভারী ট্রাকে বালু বহনের কারণে সড়কও ধ্বসে পড়ছে। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী সম্প্রতি প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ করেছেন। তারপরও বালু উত্তোলন ও ভারী যানবাহনে পরিবহন বন্ধ হচ্ছে না।
এব্যাপারে বালু মহালের ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, লিজ নিয়ে আমরা বালু উত্তোলন করছি। আমাদের সবকিছু বৈধ আছে। বিজিবি ও প্রশাসন আমাদের কাগজপত্র খতিয়ে দেখেছেন। তবে কে বা কারা বাঁধা দিচ্ছে। রাস্তায় চলাচলের সুবিধার্থে আমরা ব্যবসা করছি। আমাদের কাছে অধিক ভারী যানবাহন বলে মনে হচ্ছে না।
এ ব্যপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবো।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে গত কয়েকদিনের কর্মবিরতি শেষে আগের মতোই কাজে ফিরেছে পুলিশ। এতে জনসাধারণের মনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। পুলিশকে সহায়তায় পরবর্তী নির্দেশনা না আসা অব্ধি মাঠে থাকবে সেনাবাহিনীও। বুধবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশি কার্যক্রমে যোগ দেয়া পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিয়ে মোটরসাইকেল মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়াটিচ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় তারা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুর্বের ন্যায় কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এবিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল আলম বলেন, সকলে কাজে ফিরেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগের মতোই কাজ করবে পুলিশ। পুলিশের কাজে ফেরত আসায় জনমনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। তবে পুলিশ-প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে মাঠে থাকার কথা জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াত সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটসহ পুলিশ সদস্য নিহত ও কয়েকশো আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বিভিন্ন দাবির কথা জানিয়ে নিরাপত্তাহীনতা দাবি করে কর্মবিরতিতে যায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। এতে ভেঙ্গে পরে দেশের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। বেড়ে যায় সহিংসতা, চুরি, ডাকাতির মত ঘটনা। অনেকেই ফিরে যায় অভিযোগ জানাতে এসে। বিষয়টি পুলিশ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নজরে আসে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং নতুন পুলিশ প্রধান বাহিনীর সব সদস্যদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসও দিয়ে নিজ কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে কমলগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তাগন মানবসেবার ব্রত নিয়ে থানার কার্যক্রম শুরু করে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল আলম আরো বলেন, বর্তমানে কমলগঞ্জা থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান আছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কমলগঞ্জ থানা পুলিশকে সবাত্মক সহযোগীতা করতে সর্বস্থরের জনসাধারনের প্রতি উদাত্ত্ব আহবান। মাানবিক পুলিশ হয়ে জনগনের জন্য কাজ করবে বলে আশাবাদী সুশীল সমাজ।