পরিবেশকর্মী ও কবি জাবেদ ভূঁইয়া এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘এই এলাকায় আমি নানা ধরনের পাখি দেখেছি। নাম জানি না, এ রকম অনেক ধরনের পাখি আছে। এভাবে জালের ফাঁদে শুধু পরিযায়ী পাখিই নয়। ফিঙে, প্যাঁচা, বকসহ স্থানীয় অনেক পাখি আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। শীতের শুরুতেই মানুষের মধ্যে পাখি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে প্রচারণামূলক বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া দরকার।’
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শীতের শুরুতেই মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওরের বাইক্কা বিলসহ ছোট ছোট হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিলে পরিযায়ী পাখি আসা শুরু হয়। সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে তুলনামূলক উষ্ণ অঞ্চলে খাদ্যের খোঁজে এসব পাখি আসে। বিভিন্ন জাতের হাঁসসহ অনেক ধরনের পাখির কলকাকলিতে সরব হয়ে ওঠে হাওরের বুক। সারা দিন বিলে বিলে পাখির ওড়াউড়ি চলে। পাখির এই আগমন শুরু হলেই তৎপর হয়ে ওঠেন শৌখিন ও পেশাদার পাখিশিকারিরা। শুরু হয় হাওরসংলগ্ন জলাভূমিতে জালের ফাঁদ পেতে ও বিষটোপ দিয়ে পাখি শিকার। এরই মধ্যে হাইল হাওরের বাইক্কা বিল ও বাইক্কা বিলসংলগ্ন এলাকা, কাউয়াদীঘি ও হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন পাশে পাখিশিকারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন্য প্রাণী(সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী পরিযায়ীসহ কোনো পাখি হত্যা করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘শীত শুরু হচ্ছে। পাখিশিকারিরা তৎপর হয়ে উঠছেন। আমরা এটা টের পাচ্ছি। এরই মধ্যে রাত জেগে বাইক্কা বিলে পাখিশিকারিকে ধরেছি। সাজাও হয়েছে। জাল উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।’
|