মুক্তকথা সংবাদ।। কাক কাকের মাংস খায় না। সাংবাদিক কিন্তু খায়! কাক কাকের মাংস খায়না, এমন কথার তাৎপর্য হলো স্বগোত্রীয়দের ক্ষতির চিন্তা করা সঠিক নয়। কাক পক্ষী হলেও এমন বোধ তার প্রকৃতিগত। কাক কখনও নিজ গোত্রীয়দের কোন ক্ষতি করেনা। কিন্তু মানুষের মধ্যে এমন বোধ থাকলেও বস্তুত মানুষ স্বার্থপর। নিজের সুবিধার জন্য সামান্য বিরোধে অন্যের ক্ষতি করতে একটুও দ্বিধাবোধ করেনা।
মৌলভীবাজারে ‘অনলাইন প্রেসক্লাব’ সংগঠিত হয়ে আসছে বেশ কিছুকাল যাবৎ। সংগঠিত হওয়ার পথে সামান্য কিছুদূর যেতে না যেতেই শুরু হয়েছে দ্বিধাবিভক্তি। মানুষে মানুষে কিংবা সংগঠনে সংগঠনে বিবাদ-বিসংবাদ, মতের অমিল থাকতেই পারে এবং থাকবে। মতের অমিলের সেই পথ ধরেই আসে সংস্কার আর শুদ্ধি। যার অন্য নাম প্রগতি বা এগিয়ে যাওয়া। মতের এই অমিল নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়া কোন ভাবেই শুভ বুদ্ধির পরিচয় বহন করে না। মতের অমিলকে পরস্পর সম্মানের চোখে দেখে এগিয়ে যেতে হয়। এর নামই গণতন্ত্র।
জানা গেছে, গত ৯ই মার্চ শনিবার, মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের এক জরুরী সভায় ৭সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। সেই তলবী সভায় সভাপতি ছিলেন সাংবাদিক শ, ই, সরকার জবলু। ওই সভায়, অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মশাহিদ আহমদকে বিভিন্ন অনিয়মের জন্য দায়ী করা হয় এবং দুরুদ আহমদকে আহ্বায়ক ও তাজুদুর রহমানকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করে সংগঠনের হিসেব-নিকাশ ঠিক করা, সংবিধান প্রনয়ন করা প্রভৃতি দায়ীত্ব দিয়ে ৭সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই সভায় মোট ১৪জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
এই কমিটি ঘোষনার পর পরই মশাহিদ আহমদ তার ফেইচবুকে অন্যদের দ্বারা ৭সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে অপপ্রচার ও কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা বলে আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা জানান। ফেইচবুকে তার প্রতিবাদ থেকে আরো জানা যায় যে, প্রথম গঠিত কমিটির সভাপতি মশাহিদ আহমদ ও সংগঠনের বিরুদ্ধে কুলাউড়া ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মঞ্জুরুল হক সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা করেন। মশাহিদ তার ফেইচবুকে ওই মামলাকে মিথ্যা মামলা উল্লেখ করে লিখেন- “…সাইবার ট্রাইবুনালে মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের নামমাত্র উপদেষ্টা শ,ই,সরকার জবলু’র ফেসবুকে অপপ্রচার ও সভাপতি -সাংগঠনিকের বিরুদ্বে কুলাউড়া ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মঞ্জুরুল হক কর্তৃক সাইবার ট্রাইবুনালে মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।” এখানেই তিনি শেষ করেননি। তারও কয়েক ছত্র আগে তিনি লিখেন- “আজ ৮ মার্চ শুক্রবার রাত ৮টায় মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক জরুরী সভার আহবান করা হয়। উক্ত সভায় মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের নামমাত্র উপদেষ্টা শ,ই,সরকার জবলু ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। শ.ই সরকার জবলু নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা ইত্যাদি পদ-পদবী দাবি করেছেন তা আসলে সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট। তার এই সংগঠনের লিখিতভাবে কোনো জায়গাতে পদ পদবি নেই। শুধু নামে মাত্র উপদেষ্টা। আর সেটাকে পুঁজি করে একটি মহল শ.ই সরকার জবলুকে সামনে রেখে অনলাইন প্রেসক্লাব কে ধ্বংস করার একটা বিশাল ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।”
এ ঘটনার পরেই গত ১৯শে মার্চ মঙ্গলবার অপর একটি সভায় এম এ মোহিতকে সভাপতি ও মশাহিদ আহমদকে সম্পাদক নির্বাচিত করে ২১সদস্য বিশিষ্ট ভিন্ন একটি কমিটি গঠন করা হয়।
আমরা আশা করবো এমন কাদা ছোড়াছুড়ি ও দুই ভাগ হওয়া বাদ দিয়ে উভয় পক্ষ সংগঠনের সাংগঠনিক মজবুত রূপ নেয়ার স্বার্থে মতভেদকে সম্মানের চোখে দেখে ঘরোয়া বৈঠকী আলোচনা সাপেক্ষ বিষয়টির নিষ্পত্তি করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথকে পুষ্পিত করতে এগিয়ে আসবেন।