ভারতে অ্যাপ্লের জিনিস তৈরি বন্ধ করার প্রস্তাবনা মার্কিণ প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ অ্যাপ্ল সামগ্রী বানাতে পারেনা? |
অধুনা ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার সাথে ভারতের বেশ দেন-দরবার চলছে বলে মনে হচ্ছে। আর এ দেন-দরবারে স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সরাসরি জড়িত হয়ে পড়েছেন বলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি খবর থেকে তা প্রতিয়মান হয়। বাংলাদেশ বিষয়ে এই কিছুদিন আগে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নরেন্দ্র মোদীকে বলেছিলেন যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীই বেশী জানেন অতএব তিনিই এ বিষয়টি দেখবেন। এমন কথায় ভারত-আমেরিকা সুসম্পর্কের গভীরতা ফুটে উঠেছিলো।
শুধু তাই নয়, এমন খবরে বাংলাদেশের বিশেষ একটি রাজনৈতিক মহলসহ বিপুল পরিমান মানুষ একটু স্বস্থিরভাবে শ্বাস নিতে পেরেছিলেন। মানুষের ধারণা হয়েছিল এতে করে বাংলাদেশ পরিস্থিতি কিছুটা হলেও শান্তি ও স্বস্থির দিকে যাবে। শিঘ্রই হয়তো একটি নির্বাচন হবে। কিন্তু ১৫মে দোহায় অ্যাপল কর্তা টিম কুককে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভারত বিষয়ক প্রস্তাবনা ভারতের সাথে বাণিজ্য বিষয়ে কিছুটা পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যায়। আর সত্যি সত্যিই এমন কোন পরিবর্তন হলে খুবই যুক্তিসংগত কারণেই বললে ভুল হবে না যে বাণিজ্য নিয়ে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক আগের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ থাকছে না। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদীর মধ্যে যদি তিক্ততার জন্ম হয় তা’হলে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ কি নতুন রূপ নেবে? যদি হয় তা’হলে কি হবে সে নতুন রূপ?
এই বৃহস্পতিবার ১৫মে ‘২৫ইং কাতারের দোহায় অ্যাপল কর্তা টিম কুককে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতে আপল’র দ্রব্যসামগ্রী না বানানোর কথা বলেছেন। আর এমন খবর প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার। ভারতে আর অ্যাপ্লের জিনিস উৎপাদন না-করার জন্য অ্যাপ্ল কর্তা টিম কুককে প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই বৃহস্পতিবার কাতারের রাজধানী দোহায় নিজেই এ কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।
![]() |
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সংবাদ মাধ্যমকে জানান তিনি অ্যাপ্ল কর্তাকে বলেছেন, “আমি শুনছি আপনি ভারতে জিনিস উৎপাদন করছেন। আমি চাই না আপনি ভারতে জিনিস উৎপাদন করুন।” ভারত নিজে নিজেরটা বুঝে নিতে পারবে এমন কথা বলে ট্রাম্প এ-ও জানান যে, ভারত বেশ ভাল ভাবেই চলছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিজের কথায়- বুধবারই কুকের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তিনি অ্যাপ্ল কর্তাকে বলেছেন, “আপনি যদি ভারতের দেখভাল করতে চান, তা হলে সে দেশে জিনিস বানাতে পারেন। কারণ, বিশ্বের সবচেয়ে চড়া হারে শুল্ক নেওয়া দেশগুলির মধ্যে একটি ভারত। তাই ভারতে জিনিসপত্র বিক্রি করা খুব কঠিন।” ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার এমন খবর প্রকাশ করেছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুক, ইয়ারপড ভারতে তৈরি হয়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মত অভিজ্ঞ প্রতিতযশাঃ ব্যবসায়ী-কূটনীতিক মানুষ অবশ্যই বুঝেন যে হঠাৎ করেই অ্যাপল্ এমন ব্যবস্থা নিতে পারবে না। কারণ নিশ্চয়ই তাদের ওখানে ভাল একটি অর্থ বিনিয়োগ রয়েছে এবং এ বিনিয়োগের নিশ্চয়ই একটা মেয়াদ আছে। সে মেয়াদ শেষ না হওয়া অবদি ব্যবসা গোটিয়ে নিয়ে আসা লাভজনক নয়। তা’হলে দোহায় অ্যাপল্ কর্তার কাছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবনার মূল উদ্দেশ্য কি? বাংলাদেশকে টোপ খাইয়ে নতুন কোন ফন্দি-ফিকির নয়তো! তবে টোপ গেলানো কিংবা ফন্দি-ফিকির যা-ই হয় না কেনো, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আপল্-এর সাথে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হলে অ্যাপল হয়তো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুশী রাখার জন্য ভারতে বানানোর কিছুটা সামগ্রী বাংলাদেশে প্রস্তুত করতে এগিয়ে আসতে পারে।