মুক্তকথা, লন্ডন: এমনভাবে তাঁর জনপ্রিয়তা নেমে যাবে এই কিছুদিন আগেও ভাবতে পারেননি তিনি! রাতপোহালই ভোট বৃটেনে। যদিও নির্বাচন গবেষকগন বলছেন তিনি এগিয়ে কিন্তু তাতেও স্বস্তি নেই তার। কারণ নির্বাচনের ঘোষণা যখন দিয়েছিলেন তখন বিরুধী প্রধান শ্রমিক দল অর্থাৎ নেতা করবিনের ‘লেবার পার্টি’ প্রথম প্রথম অনেক পেছনে ছিল। তখনের চেয়ে এখন অনেক ব্যবধান হয়ে গেছে। এখন মাত্র চার পয়েন্টের ব্যবধান করবিনের সাথে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন করবিন যদি সরকার গঠন করতে না-ও পারেন তবে বিপুল সংখ্যায় আসন পাবেন যাতে একটি ঝুলন্ত সংসদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
প্রথম প্রথম রক্ষনশীল দল শ্রমিক দলকেই কোন আমলে নেননি। আর হবারও কথা ছিল। তখন শ্রমিক দলের অবস্থা খুব বেসামাল ছিল। নেতা করবিনকে নিয়েই দলের ভেতরে ধুন্ধুমার অবস্থা বিরাজ করছিল। করবিন নিবেদিত প্রাণ কর্মী থেকে দলনেতা হয়েছেন। তার যাত্রাপথ তেরেশা মে’র মত লাল গালিচা বিছানো ছিলনা। তিনি সাইকেল চালিয়ে এখনও দলের কাজ করেন। এই সেই পরীক্ষিত নেতা। গেল মাসের ব্যবধানে দেশের ভোটের হাল বলতে গেলে পাল্টিয়ে দিয়েছেন। শ্রমিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের পর অবস্থা একেবারে পাল্টে যেতে শুরু করে। আর হবেনা কেনো? তার প্রতিশ্রুতি আছে তার দল পাশ করলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে পুরোপুরি সরকারের দায়িত্বে নিয়ে আসা হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি মওকুফ করা হবে, ২ থেকে ৪ বছরের বাচ্চাদের জন্য বিনামূল্যে শিশু পরিষেবা ইত্যাদি দেয়া হবে। আর নিছক প্রতিশ্রুতি নয়। পাশ করলে এমন হবেই। ইশতাহারে সুস্পষ্ট ভাষায় বলা আছে তাঁর দল জিতলে উচ্চবিত্ত ও কর্পোরেট সংস্থার উপরে আরও কর চাপিয়ে এই বিপুল বাড়তি খরচ জোগানর ব্যবস্থা করবেন তিনি।
এবারের মত অতীতে আর কোন সময় করবিন এতো বিরামহীন প্রচার চালানোর প্রয়োজনই বোধ করেননি। বিগত একমাসে করবিন নিজে এমনসব জায়গায় প্রচারে গিয়েছেন যেখানে রক্ষনশীলদের বাজার গরম। এসবের মধ্যে লন্ডন ব্রীজের ভয়ঙ্কর ঘটনা ক্ষমতাশীনদের ক্ষমতা বিষয়ে সাধারণ মানুষকে ঘাবরে দিয়েছে।
এর বিপরীতে তেরেশা মে’র রক্ষণশীল দল তাদের ইশতেহারে বলেছেন বিনামূল্যে স্কুলে খাবারের পরিবর্তে শুধু নিম্নবিত্ত পরিবারের বাচ্চাদের বিনা পয়সায় জলখাবার দেওয়া হোক। সব বয়স্ক মানুষকে আর বার্ধক্যভাতা না দিয়ে শুধু দরিদ্রদের জন্যই এই ভাতা চালু করার
ব্যবস্থা নেবেন তিনি। অবসরী মানুষদের শীতের ভর্তুকি একেবারেই প্রত্যাহার করা হবে… ইত্যাদি। ফলে সাধারণ মানুষের মন একেবারে বিগড়ে যায়। প্রচন্ড সমালোচনা হচ্ছে আজও।
এ অবস্থায় আজ কি হচ্ছে অপেক্ষা করতেই হবে।