মুক্তকথা প্রতিবেদন॥ সুপরিচিত ফেইচবুকার প্রগতিশীল রাজনীতিক প্রিয়ভাজন ‘লিটন চৌধুরী’ তার ফেইচবুকে চমক লাগানো এ সংবাদটি পত্রস্ত করেছেন। তার সে সংবাদের কিঞ্চিৎ সম্পাদনা করে আমরা এখানে তুলে দিলাম। চিন্তা একটিই, যদি আমাদের শিখে নেয়ার কিছু থাকে।
মার্কিণ মুল্লুকের টেক্সাসের প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিপর্যস্ত একটি এলাকার চমক লাগানো একটি ঘটনা। একেতো দুনিয়ার ধনবাদের স্বর্গরাজ্য মার্কিন মুল্লুক। যেখানে হাজার হাজার পুলিশ পাহাড়া দিয়ে জনবসতির শান্তি রক্ষা করতে হয়। একটু ফাঁক পেলেই বিস্ময়কর সব রাহাজানিমূলক ঘটনা ঘটে যায়। তার উপর আবার প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিধ্বস্ত একটি এলাকা। আর সময়টা রাতের।
দুনিয়ার কিছু ভালো মানুষের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম অভিনন্দন জানিয়ে লিটন যেভাবে লিখেছেন-“সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই! স্বার্থপর এই দুনিয়াতে এখনো মানবতা নামের জিনিসটা কিছু মানুষের মধ্যে রয়ে গেছে। তাই হয়তো পৃথিবীটা এখনো টিকে আছে।” তিনি আরো একটু এগিয়ে গিয়ে সবুজ বাক্সে সাদা ঠিক চিহ্ন দিয়ে লিখেছেন- ✅ মানবতা ও সততার এক জলজ্যান্ত উদাহরণ ✅ এটা কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ছিটিয়ে থাকা টাকার ছবি নয়। ভুল করে পকেট থেকে পড়ে যাওয়া কারো টাকাও নয়। এটা হলো কতিপয় সাধারণ মানুষের মানবতা মিশ্রিত টাকা।” সে যাই হোক, এদের জন্য পৃথিবীটা টিকে আছে এ প্রতিপাদ্যে আমরা যদিও আস্তা আনতে চাই না, তবে যতদূর মনে হয়, লিটন এটি একটি কথার কথা বলেছেন।
আসল ঘটনা হলো, গত কয়েকদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বেশ কিছু এলাকা প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিদ্যুত নেই, পানি নেই। মি. বনি বালডেজ নামের এক ব্যবসায়ীর ছোট একটা দোকান আছে টেক্সাসের সান আন্তোনিও’তে। মি. বনি রাতের বেলা দোকান বন্ধ করে যাওয়ার সময় হঠাৎ তার চিন্তা আসলো- এই দুঃসময়ের রাতে কেউ যদি পানির জন্য পিপাসার্ত হয়- তাহলে কি করবে? কোথায় পানি পাবে? এটা মনে করে- তিনি দোকানের বাইরে বেশ কয়েক কেইস পানির বোতল রেখে গেলেন।
সকাল বেলা দোকান খুলতে এসে মি. বনি দেখেন- গত রাতে দোকানের সামনে রেখে যাওয়া পানির বোতল একটিও নেই। তিনি মনে মনে খুশি হলেন এই ভেবে যে, পিপাসার্ত মানুষদের নিশ্চয়ই পানির তৃষ্ণা মিটেছে। রাতে বুদ্ধি করে এগুলো এভাবে রেখে না গেলে অনেকেই পিপাসায় কষ্ট পেতেন।
এরপর তিনি স্টোর খুলে চমক জাগানো অবাক করা আরেক ঘটনার সন্মুখীন হলেন। শুধু চমৎকৃত নয়, নতুন এ দৃশ্য মি: বনিকে মানবতার গভীরে ডুব দিতে অনুপ্রেরণা জোগালো!
দোকানের ভিতরে পা দিতেই তার চোখ ধাঁধিয়ে দিল অবাক করা সে কাণ্ড! বেশ কিছু জায়গা নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে অসংখ্য ডলার আর তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ কার্ড। বনি বুঝতে পারলেন দরোজার ফাঁক দিয়ে সবাই এগুলো দিয়ে গেছেন। গুনে দেখলেন ৬২০ ডলার আছে। যা বাহিরে রেখে যাওয়া সবগুলো পানির মুল্যের চেয়ে অনেক অনেক বেশী। অর্থ দাঁড়ায়, সবাই পানির বোতলের চেয়ে বেশি মূল্যই দিয়েছেন। আর অমূল্যে পেয়েছে বলে- কেউ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি একটা পানির বোতল নিয়েও যায়নি। দিব্য চোখ নয়, বনি- বাস্তব চোখেই দেখে বুঝতে পারলেন যে, যত কঠিণ অবস্থাই আসে না কেনো সকল মানুষ একসাথে মানবিক গুণ হারায় না, অমানবিক হয়না। সত্যিকার অর্থে এটাই মানবতা, আর ধর্ম তো এটাই! মানুষের প্রতি মানুষের যে অকৃত্তিম ভালোবাসা, এতো তারই স্বরূপ!
লিটন লিখেছেন- আর, এই ভালোবাসাই মানুষের সাথে মানুষের বিশ্বাসের সেতুবন্ধন তৈরি করে। এই বিশ্বাস আর ভালোবাসার আস্থাতেই উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকে সুন্দর করে রেখেছে। আমরাও কি এমন হতে পারি না। আর কতো ঘরের পকেট চুরি করে বাইরে দোকান দেবো? গতি সম্পাদনায়: হারুনূর রশীদ
|