1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ জলাশয় হাকালুকি হাওর - মুক্তকথা
রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন

এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ জলাশয় হাকালুকি হাওর

হারুনূর রশীদ॥
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৫১২ পড়া হয়েছে

হাওর হাকালুকি

হাওর অর্থাৎ বিশাল এলাকা জুড়ে জলাভূমি। সে জলের কোথায়ও গভীরতা আছে আবার বেশীর ভাগ অঙ্গেই তার অগভীর জল। সে অগভীর জলের উপর দিয়ে বড় জাহাজ চলতে পারে না তবে বিশাল আকারের সওদাগরী নৌকা চলতে পারে নির্বিগ্নে। হাওর সাধারণতঃ প্রাকৃতিক জলাধার। এ বিশ্ব ভূখণ্ড সৃষ্টির সময় থেকেই এসকল হাওরের সৃষ্টি বলে জ্ঞানী-গুণীদের ধারনা। আবার বহু হাওর, ভূকম্পনের কারণে সৃষ্ট বলেও অনেকেই মনে করেন। বইপুস্তক ঘেঁটেঘুটে যতদূর জানা যায় হাকালুকি হাওর সে নমুনায় এক ভূকম্পনের কারণে সৃষ্ট বলে প্রাচীন মত পাওয়া যায়।

অচ্যুত চরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি কর্তৃক ১৯১০ ইংরেজী সনে প্রকাশিত তার পুস্তক ‘শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত’এর দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রাকৃতিক বিবরণে হাকালুকি হাওর নিয়ে জনশ্রুতির উল্লেখ করে লিখেছেন- “অতি প্রাচীনকালে ঐ স্থান সমভূমি ছিল…”। এর পর ধর্মকে জড়িয়ে জনশ্রুতির নামে তিনি যা লিখেছেন তা আমার কাছে যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়নি বরং মনে হয়েছে গবেষণায় না গিয়ে তিনি ধর্মাশ্রয়ী জনশ্রুতিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তবে তার শেষের দিকের কথাগুলি আমার কাছে গ্রহনযোগ্য বলেই মনে হয়েছে। আর তা হলো- “…হঠাৎ দৈব উৎপাত উপস্থিত হইল, এক সঙ্গে ঝড় ও ভূকম্প ভীমবেগে প্রলয়কাণ্ড উপস্থিত করিল, দেখিতে দেখিতে সেই স্থান অদৃশ্য হইয়া গেল। প্রবাদানুসারে সেই স্থানেই হাকালুকি হাওর হইয়াছে।” পরে তিনি তার পাদটিকায় লিখেছেন- “হাকালুকি খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দীর বৈদিক তাম্রফলকোক্ত “হাঙ্কলা কৌকিকাং পুরীং” দ্বারা নির্দেশিত ভূভাগ।” কিন্তু ৭ম শতাব্দীর সেই বৈদিক তাম্রফলকে উক্ত “হাঙ্কলা কৌকিকাং পুরীং” যে হাওর হাকালুকি তার যুক্তিযোগ্য কোন তথ্য তিনি দেননি।

হাকালুকির জন্মবৃত্তান্ত বলতে গিয়ে অচ্যুৎ চরণ ৭ম শতাব্দীর একখানা তাম্রফলকের উদৃতি দিয়েছেন। ৭ম শতাব্দীর তাম্রলিপিতে যে ‘হাঙ্কলা’ শব্দের উল্লেখ তাই যে ‘হাকালুকি’ আগেই বলেছি তারও যৌক্তিক কোন তর্ক উপস্থিত করেননি। তবুও ৭ম শতাব্দী ধরে নিলে এতটুকু জানা যায় যে ৭ম শতাব্দীর বহু আগেই হাকালুকির অবস্থান ছিল। ফলে কেউ কেউ অনুমানে লিখেছেন প্রায় দুই হাজার বছর আগে এই এলাকায় মানব বসতি ছিল। কে একজন জংলিদের বসতি লিখেছেন। আকা নামে এক রাজা ও তার একটি রাজ্য ছিল তাও লিখেছেন। কিন্তু তথ্য প্রাপ্তীর কোন সূত্র উল্লেখ করেননি কেউই।
এই লেখক আরো লিখেছেন যে ঐ সময় এক প্রচন্ড ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পে আকা নামের এক রাজা ও তার রাজ্য মাটির নীচে তলিয়ে যায়। যারা বেচে ছিল তারা ঐ রাজার তলিয়ে যাওয়া বা লুকিয়ে যাওয়া নিম্ন ভূমির নাম দেয় আকা লুকি। সময়ের পরিবর্তনে এই নাম এখন হাকালুকিতে রূপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ফলে বুঝা যায়, সূত্র সমর্থনহীন এগুলো থেকেই হাকালুকির প্রাচীন নামকরন হয়েছিল।

হাকালুকি নামের বিষয়ে ওই লেখক আরো উল্লেখ করেছেন যে, উপরের কাহিনীর অনেক পরে, ত্রিপুরার মহারাজা ওমর মাণিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে এই এলাকার কুকি সর্দার হাঙ্গর সিং এখানের জঙ্গল ও কর্দমাক্ত স্থানে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাচাঁয়। তাই এলাকার নাম হয় হাঙ্গর লুকি বা হাকালুকি। আরও লিখেছেন- বড়লেখার পশ্চিম অংশে হেংকেল নামে একদল উপজাতি বসবাস করতো। তাই এলাকার নাম ছিল হেংকেল লুকি, পরে তা হাকালুকি নাম ধারণ করে। কিন্তু হেংকেল-এর সাথে লুকি আসলো কোত্থেকে তার কোন জবাব নেই তার লিখায়।

হাকালুকি নামের আরও অনেক গল্প আছে শুনা যায়। তবে দুই হাজার বছর আগের যে নাম পাওয়া গেছে তাহাই ইতিহাস গবেষকদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণ যোগ্য। ছয়টি উপজেলায় এই হাওড় বিস্তৃত। ছোট বড় প্রায় দুইশত বিল নিয়ে এই হাওড়। এশিয়া মহা দেশের মধ্যে সব চেয়ে বড় এই হাকালুকি হাওড়। এই হাওড়ের পানির মূল প্রবাহ জুড়ি ও সোনাই বড়দল নদী। হাওড়ের উত্তর পশ্চিমে কুশিয়ারা নদী দিয়ে পানি বাহির হয়। ইদানিং হাকালুকি হাওর বিভিন্ন ভূমিখেকোদের নজরে পড়েছে বলে শুনা যায়।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT