1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
"ওয়াট্স এপ" কিভাবে ৫টি খুনের কারণ হলো(?) - মুক্তকথা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

“ওয়াট্স এপ” কিভাবে ৫টি খুনের কারণ হলো(?)

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ১০৮৬ পড়া হয়েছে

(২)

ভারতের রাইনপদ গ্রাম কাউন্সিল অফিস।

গত জুলাই মাসে, রাইনপদ ঘটনার সপ্তাহদুই পর, কয়েকশত মানুষ এক তথ্য কারিগরী কর্মীর উপর পাথর ছুঁড়ে মারতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে তাকে মেরে ফেলা হয়! তিনি দক্ষিন ভারতের মুর্কি নামক গ্রাম ঘুরছিলেন। ওই সময়ের মে মাস পর্যন্ত, ওই এলাকায় কমপক্ষে ১৬টি মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়, কোন ধরনের বিচার ছাড়াই। আর অনুরূপ ঘটনায় সারা ভারতে ২৯জন মানুষ মারা যায়। মর্মান্তিক এ ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিভিন্ন সরকারী কর্মচারীগন বলেছেন “ওয়াট্স এপ”-এর ভূয়া তথ্যে মানুষ উত্তেজিত হয়ে এ নমুনার ঘটনা ঘটিয়েছে। ভারতের এ ঘটনা ছাড়া‌ও ২০১৬ সালের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ফেইচবুকের মিথ্যা প্রচারণার বিতর্কে, সাধারণ মানুষের আস্তার সংকটে পড়েছিল ফেইচবুক, কিন্তু ভারতের রাইনপদো গ্রামের হত্যাকাণ্ড এ সংবাদই দেয় যে, ফেইচবুকের মিথ্যা প্রচারণা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করতে শুরু করেছে।
সকল মানুষকে সংগঠিত করে সারা দুনিয়াকে কাছাকাছি নিয়ে আসার ফেইচবুকের অভিযানকে জোকার বার্গ ও তার সিলিকন ভেলির কর্মীদল, তাদের মারাত্মক ক্ষতিকর “এপ” এর ভুল তথ্য, অপপ্রচার ও গুজব এবং মারাত্মক ঘৃণা প্রচারের বিষয়টি গভীরে গিয়ে দেখতে ব্যর্থ হয়েছে। উন্নয়নশীল এ বিশ্বে ফেইচবুককে গড়ে উঠতে গিয়ে পরিণতিতে জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয়েছে এবং হচ্ছে মানুষকে। 
মায়ানমারে এই কোম্পানীর মেসেঞ্জার এপ-এ ঘৃণা ছড়ানোর কারণে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যার শিকার হতে হয়েছে। ফিলিপাইনে প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তের মাদক বিরোধী পাশবিক অভিযানে রাগ উৎপাদনে ও ভয় দেখাতে ইন্ধন যুগিয়েছিল ফেইচবুকের ব্যবহার। ব্রাজিলে, ওয়াট্স এপ-এর মাধ্যমে টীকাবিরোধীরা “ইয়েলো ফিবার টীকা”র বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও মিথ্যা ছড়ায়, ফলে চারদিকে রোগ ছড়াইয়া পড়েছিল। বাংলাদেশেও কম হয়নি এই ফেইচবুকের ব্যবহারে। আর এখন ভারতে যা হচ্ছে!
গ্রামের মানুষ জীবনের প্রথম ‘ইন্টারনেট’ ব্যবহার করছে। মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দেখে ও পড়ে পাগলপ্রায় হয়ে নিজেদের গায়ে চাবুক মেরে চলেছে। অথচ শিশু অপহরণ নিয়ে এসব অলিক ভিডিও মানুষকে এমনভাবে উস্কে দেয় যে, কে কোথা থেকে ফেইচবুকে এসব দিয়েছে তা দেখার প্রয়োজন অনুভব করেনা। 
ওয়াট্স এপ-এর শক্ত রক্ষাকবজের কারণে এসব ভূয়া আজগুবি তথ্যের মূল খুঁজে বের করা খুবই কঠিন। রাইনপদো গ্রামের ভয়াবহ দূর্ঘটনার ২দিন পর জুলাইমাসের ৩তারিখে ভারতের তথ্য ও কারিগরী মন্ত্রণালয় একটি সাধারণ ঘোষণায় জানালেন ওয়াট্স এপ-এর এসব তথ্য মিথ্যা, ভূঁয়া ও গুজবে ভরা উস্কানী মূলক। মন্ত্রণালয়ের, এই প্রচারের শেষের দিকে ওয়াট্স-এপ কোম্পানী ও তার পরিচালকদের প্রতি প্রবল তিরস্কার করে বলা ছিল, কোম্পানী কোন অবস্থায়ই এ দায় ও দায়ীত্ব এড়াতে পারবে না। 
পরের দিনই এক উত্তরে ওয়াট্স এপ, মন্ত্রণালয়কে জানায় যে তারা এই নমুনার ভয়ংকর তীব্র হিংস্রতা দেখে নিজেরাই ভয় পেয়ে গেছে। একই সাথে এসব মিথ্যা তথ্য সরবরাহকে প্রতিহত করতে বা এর সমাধানে তারা সরকারের সাহায্য সহায়তা চায়।
এ হত্যাকাণ্ডের পর, ওয়াট্স এপ ছোট্ট একটি পরিবর্তন আনে। “রি সেন্ট মেসেজেস”কে “ফরওয়ার্ডেড” লেভেল দিয়ে এবং যেকোন ব্যক্তি বা গ্রুপ ভারতে কোন মেসেজ মাত্র ৫জনের কাছে ফরওয়ার্ড করতে পারবে এই শর্ত জুড়ে দিয়ে। ৫জন মানুষের আত্মাহুতির বিনিময়ে ওয়াট্স এপ-এর “রিসেন্ট” বদলে “ফরওয়ার্ডেড” হলো। প্রশ্ন হলো যে ৫জনকে হত্যা করা হলো, এর দায়ীত্ব কে নেবে? ‌ওয়াট্স-এপ না সরকার? ‌ওয়াট্স-এপ অবশ্য সারা দেশে কমপক্ষে ৩০টি পত্রিকায় ৭টি ভাষায় পূর্ণপৃষ্ঠা বিজ্ঞাপন ছাপালেন এই বলে যে যারা ভুল তথ্য ধরতে পারবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে। অতি সম্প্রতি, ভুল তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার উপদেশ দিয়ে একটি রেডিও প্রচার‌ও চালু করেছে ‌ওয়াট্স-এপ নামের এই ইন্টারনেট দানব। 
ভারত সরকার অবশ্য কোম্পানীটির কাছে আরো বেশী কিছু আশা করছেন। তারা ওয়াট্স এপ-কে মিথ্যা সংবাদের উৎস খুঁজে বের করার কোন তত্ত্ব বা হাতিয়ার আবিষ্কারের পরামর্শ দিয়েছেন যাতে সরকারী কর্তৃপক্ষ মিথ্যাপ্রচারকারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরই প্রেক্ষিতে, ওয়াট্স এপ-এর একজন মুখপাত্র কার্ল উগ, “বাজফিডনিউজ” অনলাইনে এই বিবৃতি দেন যে, “আমরা বিশ্বাস করি ওয়াট্স এপ-এ কোন কিছু খুঁজে বের করার তত্ত্ব তৈরী বা আবিষ্কার করা কোন সংবাদ লেখকের বা তথ্য সরবরাহকারীর গোপনীয়তাকে লঙ্গন করা। তিনি আরো বলেন, ওয়াট্স এপ সমাজের অন্যান্যদের সাথে একযোগে কাজ করে যাবে, মিথ্যা তথ্য সরবরাহের প্রবণতাকে মোকাবেলা করে, তবে কারো গোপনীয়তার উপর হাত দিয়ে নয়। 
এখানেই ওয়াট্স এপ-এর একটি সমস্যা। ওয়াট্স এপ-এর মত আরো যারা ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট প্লেটফর্ম আছে তারা অনেকেই মনে করেন ওয়াট্স এপ-এর ব্যবহারকারীরা যেসব তথ্য সরবরাহ করেন, ওয়াট্স এপ তার জন্য দায়ী হবে কেনো?
জান কৌম এবং ব্রিয়ান একটন নামের দু’জন ব্যক্তি ২০০৯সালে এই “ওয়াট্স এপ” গড়ে তোলেন এবং ২০১৪সালে ফেইচবুক সেটি ক্রয় করে নেয়। জন্মলগ্নেই “ওয়াট্স এপ” এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল, মানুষ যাতে নিরাপদে এবং দ্রুততম সময়ে তাদের তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। সূচনা থেকেই খুব দৃঢ়ভাবে এ মত পোষণ করে আসছে যে, ব্যবহারকারীরা যে তথ্য প্রচার করবে সেখানে কোন মাত্রা স্থির করা যাবে না। যে যার মত করে তথ্য আদান-প্রদান করবে এবং ওয়াট্স-এপ সেকাজেই কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণবিহীন সহায়তা করে যাবে।
প্রশ্ন করতেই হয়, এই দিয়ে যে কোন এক তথ্য প্রচার করে, প্রচারকারী নিজেই বলছেন-“এই ভিডিও খানা আপনার সকল ওয়াট্স এপ গ্রুপে পাঠান। যদি কেউ না করেন তা’হলে তিনি তার মায়ের সন্তান নন।” এ ধরণের উস্কানী ও দায়ীত্বহীনভাবে অন্যের উপর এমন চাপ প্রয়োগের অধিকারতো কারো নেই। তিনি ওয়াট্স এপ ব্যবহারকারী হোন আর যা-ই হোন না কেনো। সেক্ষেত্রে “ওয়াট্স এপ”এর কি কোন দায়ীত্ব নেই? তথ্য সূত্র: বাজফিডনিউজ

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT