পাকিস্তান সরকার তাকে শিখিয়ে পড়িয়ে এসব বলাচ্ছে বলে অভিযোগ আফগানিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর এক উচ্চকর্তার মতে, ‘বরাবরই দেশের মাটিতে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় দেয় পাকিস্তান। তাদের মাধ্যমে পড়শি দেশে নাশকতা চালায়। হাক্কানি নেটওয়ার্ককে নির্মূল করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন চাপ দিচ্ছে তখনই আন্তর্জাতিক মহলে মুখ পুড়ছে বুঝেই এখন স্বর পাল্টিয়ে এসব করে নিরীহ সাজতে চাইছে ইসলামাবাদ।’
বিষয়টি এহসান উল্লাহ এহসান, অন্য নাম লিয়াকৎ আলী নামের এক তালিবান নেতাকে নিয়ে। তিনি এহসান নামে তালেবান সন্ত্রাসী মহলে সুপরিচিত। একাধিক নাশকতা হামলায় যুক্ত এই এহসানউল্লা এহসান ওরপে লিয়াকৎ গত সপ্তাহে পাকিস্তানে আত্মসমর্পণ করেছে। সম্প্রতি তার বয়ানের ছ’মিনিটের একটি ভিডিও সামনে এনেছে ইসলামাবাদ। তাতে ভারতের বিরুদ্ধে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অভিযোগ তুলেছে সে।
কাবুলে অবাধে ঘোরাফেরা করতে আফগান সরকার তাদের বিশেষ পরিচয়পত্র তৈরি করে দিয়েছিল বলেও দাবি করেছে লিয়াকৎ। তার আরো দাবি, ‘উত্তর ওয়াজিরিস্থান থেকে তালিবানদের হটাতে ২০১৪ সালে বিশেষ সেনা অভিযান শুরু করে পাকিস্তান সরকার। তখন থেকেই তেহরিক–ই–তালিবান পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এবং আফগান গুপ্তচর সংস্থা এনডিএস–এর দহরম মহরম শুরু হয়। কোথায়, কখন নাশকতা চালাতে হবে তা দুই পড়শি দেশের গুপ্তচর সংস্থাই ঠিক করে দিত। প্রতিটি হামলার জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকাও মিলত।’
তালিবান নেতার এমন অভিযোগ মানতে রাজী নয় দিল্লি ও কাবুল। তাদের মতে, এতদিন এইসলামাবাদের মদতে পড়শি দেশগুলিতে একের পর এক হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। কাশ্মীরের পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে তারা। পাকিস্তান সরকার তাকে শিখিয়ে পড়িয়ে এসব বলাচ্ছে বলে অভিযোগ আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের।
আজকালের খবরে জানা যায়, কলেজে পড়ার সময়, ২০০৮ সালে তেহরিক–ই–তালিবান পাকিস্তানে যোগ দিয়েছিল লিয়াকৎ। সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছে সে। পরে তালিবান ভেঙে গিয়ে ‘জামাত–উল–আহরার’ তৈরি হলে তাতে নেতৃত্ব দিতে শুরু করে। অল্পদিনের মধ্যেই সন্ত্রাস মহলে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠে সে। পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে সে। তার নির্দেশেই ২০১২ সালে স্কুল পড়ুয়া মালালা ইউসফজাইয়ের ওপর হামলা করে একদল জঙ্গি।