কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে
কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়িতে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য নিহতদের স্মরণে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ভানুগাছ বাজারস্থ কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়িতে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রদীপ দত্ত রেন্টুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন দে’র সঞ্চালনায় এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল চন্দ্র দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দেব, কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন দত্ত। আলোচনায় অংশ নেন কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি ধীরেন্দ্র ধর, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যুষ ধর, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিখিল চন্দ্র কর, শিক্ষক প্রদীপ দেবনাথ, সমাজকর্মী উপেন্দ্র কুমার সিংহ প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য নিহতদের স্মরণে তাদের আত্মার শান্তি কামনায় ১মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। পরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
শমশেরনগর সার্বজনীন মহাশ্মশান ঘাট মন্দিরে চুরি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর সার্বজনীন মহাশ্মশান ঘাট মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে শ্রী শ্রী কালী মন্দির ও ভৈরব মন্দিরে এ চুরির ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও মহাশ্মশান ঘাট পরিচালনা কমিটি সুত্রে জানা যায়, উপজেলার শমশেরনগর সার্বজনীন মহাশ্মশান ঘাট এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের শেষকৃত দাহের জন্য নির্মাণ করা হয়। এর পাশেই অবস্থিত কালী মাতার মন্দির ও ভৈরব মন্দির। মঙ্গলবার ভোর রাতে দুর্বৃত্তরা মহাশ্মশান ঘাটে প্রবেশ করে প্রথমেই বৈদ্যুতিক লাইন ও সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কালী মাতার মন্দির ও ভৈরব মন্দিরের তালা ভেঙ্গে মন্দিরে রক্ষিত স্বর্ণালংকার, ক্যাশবাক্সসহ ২ লক্ষাধিক টাকার পূজার মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার ভোরে শমশেরনগর সার্বজনীন মহাশ্মশান ঘাট মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজিত পাল এ ঘটনা দেখতে পেয়ে কমিটির পুলিশ, কমিটির সদস্য ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল চন্দ্র দাশ, সাধারণ সম্পাদক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর লাল সাহা, সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দেব, শমশেরনগর ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিমুল চন্দ্র পাল, আলীনগর ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমরেন্দু সেনগুপ্ত বুলবুল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ চুরি যাওয়া মহাশ্মশান ঘাট মন্দির পরিদর্শন করেন। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মন্দির চুরির সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
শমশেরনগর সার্বজনীন মহাশ্মশান ঘাট মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজিত পাল জানান, এর আগেও এই মন্দিরে একাধিকবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো: জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দায়ীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে।
বেপরোয়া গতিতে মোটর সাইকেল চালানোর প্রতিবাদ করায়
পুলিশের উপর হামলা; গ্রেফতার ২
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এক কনেষ্টেবকে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে থাপ্পড় মারলেন এক যুবক। গত রোববার(২৮ জুলাই) রাত সোয়া ৮ ঘটিকার সময় ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। রেগ্রফতারকৃতরা হলেন-কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামের আব্দুল মুমিনের ছেলে জাকির আহমেদ(২৫) ও তার আপন ছোট ভাই শাকিল আহমেদ (২০)ভ।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত রোববার(২৮ জুলাই) সোয়া ৮টার সময় টিএসআই দীপক রায় এর নেতৃত্বে পুলিশ কনষ্টেবল হাবিুর রহমান, হুমায়ুন কবির ও শংকর সিনহা শমশেরনগর বাজারে দায়ীত্বপালন করছিলেন। এ সময়ে থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া গতিতে সহযোগিসহ এক যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে কুলাউড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় শমশেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমানকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পুলিশ এরূপ আচরণের কারণ জানতে চাইলে মোটরসাইকেলের চালক জাকির আহমেদ পুলিশের উপর হামলা চালায়।
এ সময় স্থানীয় জনতাসহ পুলিশ নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলসহ ২ যুবককে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। পুলিশ ফাঁড়িতে আসার পর এই যুবক মোটর সাইাকেলের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে পুলিশ ফাঁড়ির আরেক কনষ্টেবল হুমায়ুন আহমদকে সজোরে থাপ্পড় মারেন মোটর সাইকেল চালক জাকির আহমদ। পরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার পর এ ঘটনায় টিএসআই দীপক রায় বাদী হয়ে ২ যুবকের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এবং মোটরসাইকেলটি জব্দ করেন।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। আটক ২ যুবককে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার সকালে মৌলভীবাজার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।