1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
গভীর সমুদ্রের ৯০টি প্রাণীকে পরীক্ষা করে এদের পেটের ভেতরে প্লাষ্টিকের নোংরা পাওয়া গেছে। জলজপ্রাণীর জন্য যা ভয়ঙ্কর অশনি সংকেত
 - মুক্তকথা
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩৭ অপরাহ্ন

গভীর সমুদ্রের ৯০টি প্রাণীকে পরীক্ষা করে এদের পেটের ভেতরে প্লাষ্টিকের নোংরা পাওয়া গেছে। জলজপ্রাণীর জন্য যা ভয়ঙ্কর অশনি সংকেত


সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭
  • ৭৬১ পড়া হয়েছে

বিগত ৬৭ বছরে মানুষ সারা বিশ্বব্যাপী ৮.৩ বিলিয়ন প্লাষ্টিক উৎপাদন করেছে। 
সাগর গভীরে প্লাষ্টিক বর্জ্যের নোংরা।
এ বছরের শুরুর দিকে গবেষকগন বৈশ্বিক ‘টেপওয়াটার সেম্পল’-এ ৮৩% প্লাষ্টিক ফাইবার পেয়েছেন। সাগরে প্লাষ্টিকের এই বর্জ্য নোংরা বিষময় এক ভয়াবহতা ডেকে আনতে পারে

হারুনূর রশীদ।।

প্লাষ্টিক, পলিথিন এখন শুধু বিশেষ একটি দেশের সমস্যা নয়। সারা দুনিয়া ব্যাপী এ বিশেষ দ্রব্য থেকে তৈরী সামগ্রী এখন দুঃখজনকভাবে মহাক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সামগ্রীর চাহিদা বা প্রয়োজন যেমন বিশাল অন্যদিকে এর বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহারের উত্তম ও ব্যাপক ভিত্তিক ব্যবস্থা না থাকায় খুবই ক্ষতিকর ভাবে দুনিয়ার মানুষের প্রতি হুমকির কারণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে জলজপ্রাণীর জীবননাশক এক মহা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
প্লাষ্টিকের তৈরী বোতলজাতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী একদিকে যেমন অতীব প্রয়োজনীয় অন্যদিকে এর বর্জ্য অবস্থা বিশ্বময় জলজপ্রাণীর প্রান সংহারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যা প্রকারান্তরে মানব সভ্যতার প্রতিই এক মহা হুমকির ইঙ্গিত বহন করে।
এ বিষয়টির উপর বৃটেন সরকার ইদানিং বিশেষ নজর দিয়েছেন। প্রভাবশালী দৈনিক “দি গার্ডিয়ান”এর রাজনৈতিক বিভাগীয় লেখক পিটার ওয়াকার গত নভেম্বরে বিষয়টির উপর তথ্যবহুল একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। সে নিবন্ধে, এ লক্ষ্যে বৃটেন সরকারের উৎকন্ঠা ও ব্যবস্থা নেয়া বিষয়ে তিনি লিখেছেন।
গার্ডিয়ানের ওই তথ্যে দেখা যায়, প্রতি বছর ১২ মিলিয়ন টন বর্জ্য সাগরজলে মিশে। নিচের ছবির ‘সিনথেটিক ফাইভার’ গভীর সমুদ্রের একটি প্রানীর পেটে পাওয়া যায়। যা সাগরের প্রায় ১১কিলোমিটার গভীরে পাওয়া যায়। ফলে দেখা যাচ্ছে কত গভীরে গিয়ে ‘সিনথেটিক’এর এই সংমিশ্রন হচ্ছে যা খুবই ভয়াবহ।

এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ক্রিমি জাতীয় প্রাণীটি প্লাষ্টিকের সূতা গিলেছে। যা তার পেটে দেখা যাচ্ছে। প্লাষ্টিকের এই সূতা তার অন্ত্রনালী প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। ছবি: রিচার্ড কির্বি।

নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞগন দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া যায়। তারা দেখতে পান প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর অঞ্চলে যেখানে সাধারণতঃ জলজ প্রাণী ছাড়া কোন কিছু যাওয়ার সুযোগ খুবই কম। অথচ এই মানব তৈরী ‘ফাইবার’ এই গ্রহের দূর্গম সে স্থানে পৌছে প্রাণীদেহে সংক্রমন করেছে। গবেষকদের ধারণা সংক্রমিত এই ‘ফাইবার’ ‘প্লাষ্টিক বোতল’, ‘পেকেজিং’ এবং ‘সিনথেটিক কাপড়’ থেকে উৎপন্ন। 
এই গবেষণার পরিচালক ডঃ এলান জেমিসন উৎকন্ঠিত হয়ে বলেছেন, এই গ্রহের কোন জায়গাই মনে হয়  প্লাষ্টিক দ্বারা নোংরা বা সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে রেহাই পায়নি। 
ভীত হবার মত বিষয় হলো, এ বছরের শুরুর দিকে গবেষকগন বৈশ্বিক ‘টেপওয়াটার সেম্পল’-এ ৮৩% প্লাষ্টিক ফাইবার পেয়েছেন। যখন অন্যান্য গবেষণায় পাথর লবন ও মাছের মাঝেও প্লাষ্টিকের সংক্রমন পাওয়া গেছে।
গবেষণায় আরো পাওয়া গেছে যে ১৯৫০ সাল থেকে এ পর্যন্ত দুনিয়ার মানুষ কম করে হলেও প্রায় ৮.৩বিলিয়ন টন প্লাষ্টিক উৎপাদন করেছে। ফলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এ অবস্থা এই গ্রহের জন্য বলতে গেলে এক স্থায়ী সংক্রমন অবস্থার পর্যায়ে চলে গেছে। 
ডঃ জেমিসন মনে করেন গবেষণা থেকে পাওয়া এ তথ্য এই বিষয়টিই পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কি ভয়ঙ্কর প্লাষ্টিক সংক্রমন হয়ে চলেছে গভীর সমুদ্রে। যে বর্জ্যসংক্রমন থেকে জলজপ্রাণীকে রক্ষার আর কোন পরিবেশগত পদ্বতি সেখানে থাকেনি। তার ভাষায়, “এটি ভীষণ ভয়ঙ্কর তথ্য।” গভীর সমুদ্রের ১১কিলোমিটার যা প্রায় ৭মাইল গভীরে অবস্থানের সমান। সেখানে এ নমুনার প্লাষ্টিক সংক্রমন, এ যে আমাদের জন্য এক ভীষণ দুঃসংবাদ এটি তারই প্রমাণ। শুধু তাই নয়, প্লাষ্টিকের এই ‘ফাইবার সংক্রমন’ যে সব জায়গায় গবেষকরা পেয়েছেন তাতে বিষয়টি পরিষ্কার যে বিষয়টি কোন নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ নয়, স্পষ্টতঃই এটি বৈশ্বিক বিষয়। কারণ তারা পরীক্ষা করেছেন সারাটা প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা। সেই মারিয়ানা থেকে জাপান, ইজু-বনিন, পেরু-চিলি, নিউহেব্রিডস এবং কার্মাডেক সমুদ্র খাদ অবদি। এসব সমুদ্রখাদ ৭ থেকে ১০ কিলোমিটার সমুদ্রগভীরে অবস্থিত।

সাগর নদীতে ফেলে দেয়া প্লাষ্টিকের বর্জ্য নোংরা করছে পানি সহ তীরের মাটি। ছবি: গার্ডিয়ান

এ ছাড়াও বিজ্ঞানীরা গভীর সমদ্রের ৯০টি প্রানীকে পরীক্ষা করে এদের পেটের ভেতর প্লাষ্টিকের অংশ পেয়েছেন শতকরা ৫০ভাগ থেকে ১০০ভাগ। প্লাষ্টিক রূপের এসব পদার্থ পরীক্ষা করে দেখা গেছে এগুলো ‘সেমি-সিন্থেটিক সেলুলসিক ফাইবারস’ যেমন ‘রেয়ন’, ‘লিওসেল’ এবং ‘রেমি’, যার সবগুলোই হল ক্ষদ্রাতিক্ষুদ্র ‘ফাইবার’ যেগুলো ‘টেক্সটাইল’ জাতীয় পদার্থে ব্যবহার করা হয়। আর যেসব ‘প্লাষ্টিক’ ফাইবার পাওয়া গেছে সেগুলো এসেছে ‘প্লাষ্টিক বোতল, মাছধরার সরঞ্জাম অথবা প্রতিদিনের মালামাল বাক্সবন্ধী করতে যাকিছু ব্যবহার করা হয় সেসব থেকে।
বিজ্ঞানী জেমিসন বলেন যেসব দ্রব্য-সামগ্রী সাগরে ফেলে দেয়া হয় সেসব সাগরে ভেসে ভেসে এক পর্যায়ে সাগরের বিভিন্ন অংশে ডুবে যায়। তার হিসেবে প্রতি বছর প্রায় ৮মিলিয়ন টন প্লাষ্টিক সাগর জলে প্রবেশ করছে। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন যে বর্তমানে প্রায় ৩০০মিলিয়ন টন পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক আবর্জনা সাগরে ভাসছে সেইসাথে রয়েছে প্রায় ৫ট্রিলিয়ন প্লাষ্টিকের টুকরা ওজনে যার পরিমান হবে ২৫০,০০০ টন।
প্লাষ্টিক বর্জ্য বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে গিয়ে বৃটেন সরকারের ট্রেজারী পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছে যে প্রতিবছর কমপক্ষে ১০লাখ পাখি এবং ১লাখ সাগর ‘মেমলস’ এবং কচ্ছপ এসব প্লাষ্টিক বর্জ্য খেয়ে কিংবা এসব বর্জ্যের মধ্যে আটকা পড়ে মারা যায়।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT