প্রথম বারের মতো চা বোর্ড নির্ধারিত দরে নিলাম,
মূল্য সর্বোচ্চ ৮৫০ টাকা
দেশে এই প্রথম বারের মতো চা বোর্ড নির্ধারিত বিক্রয় দরে(ফ্লোরপ্রাইস) চা বিক্রয় হলো। চায়ের নতুন মৌসুমের সাপ্তাহিক এ নিলাম চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে।
এই প্রথম বারের মত বাংলাদেশ চা বোর্ডের নির্দেশিত রেটিং অনুযায়ী চা বিক্রি করা হয়। এতে আশাতীত দর হাকান চা ব্যবসায়ীরা। এর ফলে চা বাগান সংশ্লিষ্ট সবাই মহাখুশি। সর্বোচ্চ ৮৫০ টাকা দরে মধুপুর চা বাগানের জিবিওপি পাতা বিক্রয় হয়। বাজারে বিক্রি হওয়া ভালো মানের চা পাতা বিক্রি হয় ২২৭ থেকে ২৪৫ টাকা পর্যন্ত।
গতকাল সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে চায়ের নতুন মৌসুমের সাপ্তাহিক নিলামের প্রথম দিন ছিল। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের প্রগ্রেসিভ টাওয়ারে প্রথম নিলামে ১৪ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা তোলা হয়েছে।
চা ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হওয়া নতুন মৌসুমের প্রথম নিলামে ক্রেতাদের ভালো উপস্থিতি ছিল। এবার প্রথম নিলাম ঘিরে উৎপাদক ও ক্রেতাদের বিশেষ আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। কারণ, প্রথম নিলামে ন্যূনতম মূল্য বা ফ্লোরপ্রাইস অনুযায়ী চা বেচাকেনায় ক্রেতা–বিক্রেতারা একমত হওয়ার পর এই প্রথম রেটিং(ফ্লোরপ্রাইস) অনুযায়ী চা বিক্রি হলো। তবে নিলামে সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়, সকল পক্ষের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা সময়ই বলে দিবে।
উল্লেখ্য, সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে চায়ের লিকার রেটিংয়ের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষামূলক চায়ের ন্যূনতম নিলাম মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ২০২৪-২৫ নিলাম বর্ষের ১ম নিলাম হতে দেশের সকল চা নিলাম কেন্দ্রের জন্য সকল চা বাগান ও বটলীফ ফ্যাক্টরির চায়ের ন্যূনতম নিলাম মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
এছাড়াও, নিলামে লিকার রেটিং ‘২’ এর নিম্নমানের কোনও চা অফার না করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
কোন চা বাগান বা বটলীফ ফ্যাক্টরিতে লিকার রেটিং ‘২’ এর নিম্নমানের চা প্রস্তুত না করার জন্য বাংলাদেশ চা বোর্ড হতে আলাদা নির্দেশনা জারী করা হয়।
চা বাগান মালিকদের সুরক্ষা দিতে নির্ধারিত ফ্লোরপ্রাইস দিয়েই শুরু হতে যাচ্ছে নতুন মৌসুমের চা নিলাম। এরপর ধারাবাহিকভাবে ২০টি নিলামে বেঁধে দেওয়া ফ্লোরপ্রাইস অনুসরণ করা হবে। বাগান মালিক ও নিলাম-সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন নিলামে চায়ের দরপতন নিয়ন্ত্রণে এ পদক্ষেপ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
দেশের চা বাগানগুলো উৎপাদনে রেকর্ড করলেও নিলামে ব্যাপক দরপতনের কারণে বাগান মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন চা বাগান মালিকরা। গত মাসে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। গত ১ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে চায়ের বাজারদর নির্ধারণের জন্য চা বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চায়ের উৎপাদন খরচ ও নিলাম মূল্যের সামঞ্জস্যতা আনার বিষয়ে বাগান মালিক ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান ও ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ চা বোর্ড।
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এবার ২০২৪–২৫ মৌসুমে(২৯ এপ্রিল ২০২৪ থেকে ২৩ এপ্রিল ২০২৫) মোট ১০০টি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৫০টি, সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ২৬টি এবং পঞ্চগড়ে ২৪টি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে।