মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। চাঁদে মানুষের পা পড়েছিল সেই ১৯৬৯সনে। নেইল আর্মষ্ট্রংগকে মানুষ আজো ভুলেনি। তিনিই প্রথম মানব যিনি চাঁদের বুকে মানবের পায়ের ছাপ এঁকেদিয়েছিলেন। তারপর থেকে বেশ অনেক বিজ্ঞানীরই চাঁদে যাবার সুযোগ হয়েছে। এখনও হচ্ছে। মানুষ চাঁদে যাচ্ছে। শুনলে ভালই লাগবে যে চাঁদের মাটিতে ফসল হয়। যা আগে মানুষের ভালভাবে জানা হয়নি। চীনের মহাকাশ সংস্থা অকল্পনীয় আনন্দের সে খবর দিয়েছে। চাঁদের মাটিতে পাঠানো তাদের যন্ত্রযানে একটি পাত্রে তুলোর বীজ রূপন করে পাঠানো হয়েছিল। সে বীজে চারা গজিয়েছে বলে তারা জানিয়েছে। অবশ্য চাঁদের মাটিতে তারা চারা রূপন করেননি। তাদের পাত্রে রাখা বীজে চারা গঁজিয়েছে। তবে আশার বিষয় যে চাঁদের আবহাওয়া চারা গঁজানোর পক্ষে বলেই চারা গঁজাতে পেরেছে। আবহাওয়া যদি পক্ষে না থাকতো তা’হলে চারা গঁজাতে পারতো না।
চাঁদের বুকে এই প্রথম কোন জৈব পদার্থের জন্ম হলো। চাঁদের যে পিঠ পৃথিবী থেকে দেখা যায় না, সেখানেই রয়েছে চীনা যন্ত্রযান চ্যাং’অ-৪। এই চ্যাং’অ-৪ থেকে পাঠানো এক ছবিতে এই চারা গঁজানোর দৃশ্য দেখা গেছে।
গত ৩রা জানুয়ারি চ্যাংঅ-৪ চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করে। চাঁদের অন্য পিঠে কোন মহাকাশযানের অবতরণ এই প্রথম। এই মহাকাশ যাত্রীগন তাদের সাথে করে নিয়েছিলেন মাটি, তুলা এবং আলুর বীজ এবং ফ্রুট ফ্লাই নামে এক ধরণের মাছির ডিম। পাউরুটি তৈরির খামি বা ইষ্ট নামের ছত্রাকও তাদের সাথে নিয়েছিলেন। চাঁদের ভূতাত্ত্বিক গঠন বিশ্লেষণ করার যন্ত্রপাতিও তাদের সাথে ছিল।
জানাগেছে যে তুলোবীজ থেকে গজানো গাছের চারা রাখা হয়েছে চন্দ্রযানের ভেতর একটি মুখবন্ধ ধারনকলসীতে। সেখানে এমন এক কৃত্রিম পরিবেশ তৈরী করা হবে যা’তে একটি গাছ নিজেই নিজের খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকতে পারবে। এর আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গাছ গজানো হয়েছে। কিন্তু চাঁদের বুকে থাকা মহাকাশযানে কখনো করা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাঁদের বুকে তাপমাত্রা অত্যন্ত পরিবর্তনশীল – কখনো চরম ঠান্ডা কখনো তীব্র গরম। এই পরিবেশে একটা আবদ্ধ জায়গাতেও গাছপালা গজানোর মতো স্বাভাবিক তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, এবং মাটির পুষ্টিগুণ ধরে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। চাঁদের বুকে গাছের চারা গজানোর বিষয়টা দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানের কাজে সহায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মঙ্গলগ্রহে যেতে সময় লাগবে প্রায় আড়াই বছর।
চাঁদে যদি গাছপালা গজানো সম্ভব হয় তাহলে, নভোচারীরা হয়তো সেখানে তাদের নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপন্ন করতে পারবেন। তার রসদপত্র সংগ্রহের জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসতে হবে না।
এসব পরীক্ষানিরীক্ষার ফলে কি চাঁদের কোন ক্ষতি হবে না জানিয়েছেন বিজ্ঞানীগন। বিজ্ঞানীগন আরো জানিয়েছেন যে এ্যাপোলোর নভোচারীদের ফেলে আসা মলমূত্র ভর্তি পাত্র এখনও চাঁদের বুকে রয়ে গেছে। অনুমান করা হচ্ছে যে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। খবর চীনের মহাকাশ সংস্থার।