লণ্ডন।। রোহিঙ্গা বিষয়ে গেল বারের নভেম্বরে সই হওয়া প্রত্যাবাসন চুক্তির ১০ মাস পরেও প্রধান কোনো শর্তই মিয়ানমার বাস্তবায়ন করেনি। বাংলাদেশ সবসময় ইতিবাচক থাকার পরও মিয়ানমার কোন আগ্রহই দেখায়নি। দুটি অভ্যর্থনা ক্যাম্প আর একটি ট্রানজিট ক্যাম্প তৈরি করা ছাড়া কিছুই করেনি মিয়ানমার। এ অবস্থার মাঝে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সূ চি গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে এক বক্তৃতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকে থাকার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করেন।
সূ চি’র এমন বক্তব্যের বিপক্ষে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক কিছু না বললেও বিবিসির সাথে আলাপকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সু চির এমন বক্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক বলে তিনি মনে করেন। তিনি এতে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইত্তেফাক এ খবর প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সরকারের রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম সূ চি’র এ মন্তব্যকে বিস্ময়কর, খুবই হতাশাজনক উল্লেখ করে বিবিসিকে বলেছেন, মিয়ানমারের নেত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
২০১৭ সালের নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়। এরপর দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকদফা বৈঠক হয়। কিন্তু চুক্তি সইয়ের পর দশ মাসেও সেই চুক্তির প্রধান কোনো শর্তই মিয়ানমার বাস্তবায়ন করেনি বলে জানান আবুল কালাম।
কক্সবাজারে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একজন নেতা মো. নূর বলেছেন, আমাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে কিছুই করে নাই মিয়ানমার সরকার। ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনাই তারা করে নাই। বরং নাটক বানাচ্ছে মিয়ানমার সরকার।
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা। এখনো কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে আছেন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। এখনও আসা বন্ধ হয়নি।
রোহিঙ্গারা যাতে সব অধিকার নিয়ে স্বেচ্ছায় নেজের দেশে ফিরতে পারে, সেটা মিয়ানমারকেই নিশ্চিত করতে হবে এবং এটাই অভিজ্ঞদের অভিমত।