1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
"চৌপদি" ভয়ঙ্কর এক ধর্মীয় অনুশাসন নেপালে - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন

“চৌপদি” ভয়ঙ্কর এক ধর্মীয় অনুশাসন নেপালে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ৮২২ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

মাটির তৈরী কুটুরিতে বসা মেয়েটি একজন ঋতুবতী মেয়ে। ঋতুর সময় সব মেয়েকেই এভাবে ৪/৫দিন একাকী বাইরে এভাবে কাটাতে হয়।

আজব দুনিয়ার আজব মানুষ, আজব তাদের জীবন ধারা। সত্যই মানুষের জীবনধারার বিভিন্নতা বেহিসেব। কোন কোন সমাজে এমনসব জীবনধারা বা জীবনযাপনের নিয়মনীতি দেখা যায়, যা আধুনিক সভ্যজগতের মানুষ কল্পনাও করতে পারেনা। জীবনচর্চ্চার সেসব বিধান কোন কোনটা খুবই আকর্ষনীয় বা উপভোগ্য, কোনটা হাস্যকর আবার বহু আছে খুবই ভয়ঙ্কর। তেমনি এক ভয়ঙ্কর আজনবি জীবনযাপনের খবর মিলেছে প্রকৃতিকন্যা নেপালের জীবনধারায়।
নেপালের হিন্দুসমাজে প্রচলিত ঋতুবতী মেয়েদের পালনীয় “চৌপদি প্রথা”। এসময় গরীব গ্রামীণ মেয়েদের গরুঘরে গরুর সাথে থেকে রাত কাটাতে হয়। এভাবে থাকতে গিয়ে অনেক মেয়েকে জীব-জন্তু কিংবা সাপের কামড়ে জীবনও দিতে হয়। 
২০১১সালের মানুষ গণনায় নেপালে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল শতকরা ৮১.৩ জন। নেপালের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জীবনধারায় মেয়েদের ঋতুকালীন রক্তস্রাবের সময় বসত ঘরের বাইরে একাকী থাকতে হয়। এ সময় স্রাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ তার কাছে যাবে না। মেয়েটি বাইরের কোন খুপড়ীঘরে একাকী রাত কাটাবে। তাকে নিজের খাবার নিজেই তৈরী করে নিতে হবে অথবা উপবাসে থাকবে।
তাদের ধারনা, এ অবস্থায় ঘরে রাখলে দেবতা অসন্তুষ্ট হন। এ ছাড়াও তাদের আদিম ভয়, মেয়েদের এ রক্তপাত একটি দৈববিষয়। এ সময় সকলের সাথে ঘরে থাকলে যেকোন অশুভ ঘটনা ঘটতে পারে। রোগবালাইয়ে অন্য মানুষের ও গৃহপালিত পশু-পাখীর ভীষণ ক্ষতি হতে পারে। প্রানহানীও হতে পারে। কিছু হলেও হাসির বিষয় যে, মেয়েটি যখন খুপড়ীঘরে কয়েকদিন থাকে তখন সারা পরিবারের মানুষ সপ্তাহখানেকের জন্য নির্বাসিতের মত অনেক দূরে গিয়ে থাকে।
শীতকালে নেপালের তাপমাত্রা শূণ্যের কোটায় নেমে আসে। কিন্তু ওই তাপমাত্রায়ও ঋতুবতী মেয়েকে বাইরের কুটুরিতে থাকতে হয়। 
অদ্ভুত জীবনধারার এই নিয়ম মানতে গিয়ে নেপালে ২১ বছর বয়সের একটি মেয়ে আগুনের ধূঁয়ায় শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে। মেয়েটি প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচার জন্য খুপড়ীতে কিছু লতা-পাতায় আগুন ধরিয়েছিল। 
নেপাল সরকারের একজন প্রশাসক তুল বাহাদুর কওচা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন মেয়েটি ধূয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে তার ধারণা। তিনি আরো বলেন, অতি সম্প্রতি নেপালে এ প্রথার বিরুদ্ধে আইন পাশ হয়েছে। যে ব্যক্তি মেয়েদের এ প্রথা পালনে বাধ্য করাবে তাদের কমপক্ষে ৩মাস জেল অথবা নেপালি টাকায় ৩হাজার টাকা($29) জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু উচ্চ আদালতের এই আইন পাশের পরও কোন কাজ হচ্ছে না। এখনও নেপালের গভীর গ্রামে এ প্রথা মানা একটি অতীব সাধারণ ধর্মীয় অনুশাসন হিসেবে চলে আসছে।
শুধু এই একটি মেয়ে নয়, ২০১৬সালের নভেম্বরে ডাম্বারা উপাধ্যায় নামের অপর একটি মেয়ে এই প্রথায় বাইরের কুটুরিতে থাকতে গিয়ে মারা যায়। ২১বছরের ডাম্বারাকে মৃত অবস্থায় তার বোনের জামাই প্রথম দেখে। তখন তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তার মৃত্যুর বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ অনুমান করেছে সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে। যদিও ময়না তদন্তে মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। 
এসব মৃত্যুতে পাওয়া শরীরের অন্যান্য ছোট খাটো ক্ষতের বিষয়ে পাহাড়ী পশুর আক্রমণকে দায়ী করা হয়। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আগুনের ধোয়াকে দায়ী করা হয়ে থাকে। শীতের কারণে খুপড়ীঘরের ভেতর গরম রাখার জন্য যে আগুন জ্বালানো হয় সে আগুন থেকে সৃষ্ট ধোয়াই না-কি এসব মৃত্যুর জন্য দায়ী।
ঋতুবতী মেয়েদের জীবনঘাতী এ প্রথার সংস্কারে নেপালে কাজ করছে বহু আন্তর্জাতিক সাহায্য সেবক-সেবীরা। তাদের মতে, সংস্কারের কাজ খুব ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। ঋতুস্রাব নিয়ে নেপালের এই প্রথা গ্রামীণ সমাজের এতোটাই গভীরে প্রোতিত যে সংস্কারকে সারা দেশে পৌঁছে দিতে বহু সময়ের প্রয়োজন। তবে সংস্কার কাজ করছে।
লণ্ডন, রোববার
 ৯ই সেপ্টেম্বর ২০১৮সাল

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT