মুখ দেখে নয়, আঙুলের ছাপ দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের পর্দানশীন নারীরা। এসময় তারা তিনটি দাবিও জানিয়েছেন ।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১টা থেকে এক ঘন্টা ব্যাপী জেলার শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সামনে ‘পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদে’র আয়োজনে ঘণ্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এদিকে মানববন্ধনে পর্দানশীন নারীরা বলেন, শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীন নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। গত ১৬ বছর ধরে শুধুমাত্র মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে অসংখ্য পর্দানশীন নারীরা ভোটার হতে না পারায় নাগরিকত্ব আটকে রয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বঞ্চিত। পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা এসব হেনস্তার অবসান চান। এতে পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্টে পতিত হয়েছেন।
পর্দানশীন নারীরা বলেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিলো বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। গত ১৬ বছর শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে নারীদের সাথে যে বৈষম্য হয়েছে, আমরা এ বৈষম্যের পরিসমাপ্তি চাই। অবিলম্বে পর্দানশীন নারীদের দ্বীনি অধিকার ও প্রাইভেসীর অধিকার অক্ষুন্ন রেখে এনআইডি প্রদান করা হোক। পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও পর্দানশীন নারীদের দ্বীনি ও প্রাইভেসীর অধিকার অক্ষুন্ন রেখে পরিচয় যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হোক।
পর্দানশীন নারীরা বলেন, মানুষের মুখের ছবি পরিবর্তনশীল। সময়ের ও অবস্থার সাথে মানুষের চেহারার দৃশ্য পরিবর্তন হয়। এ থেকে প্রমাণিত হয়, মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। অথচ সেই মুখচ্ছবির অজুহাতেই পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে, শিক্ষাক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বেপর্দা। এছাড়া ছবি ও চেহারা মিলিয়ে সনাক্তকরণ একটি দুর্নীতিবান্ধব পদ্ধতি, অপরদিকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে সনাক্তকরণ দুর্নীতিরোধক পদ্ধতি। যেমন- আগে ব্যাংকগুলোতে ছবি ও চেহারা মিলিয়ে পরিচয় যাচাই হতো, তখন চেহারা পাল্টে এক ব্যক্তির একাধিক পরিচয়ে ঋণ উত্তোলন মত প্রতারণার ঘটনা ঘটে। |