হারুনূর রশীদ
লন্ডনের মেয়র পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত সাদেক খান ‘জিউশ লেবার মুভমেন্ট’ সংগঠনের তালিকাভুক্ত সদস্য হয়েছেন। অন্য ভাষায় মেয়র সাদেক খান ‘জিউশ লেবার মুভমেন্ট’-এ যোগ দিয়েছেন। ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ এ খবর প্রকাশ করেছে। বৃটেনে ইহুদিবিদ্বেষ নিপাত করতে তার দল শ্রমিকদল খুব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে না বলে তিনি দলের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভাষায় কথা বলেছেন। তিনি মনে করেন এর ফলে দল ও ইহুদী ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে একটি ফাঁক সৃষ্টি হয়েছে। মেয়র সাদেক খান পূর্বলন্ডনে এক বক্তৃতায় বলেছেন যে, রক্ষণশীল দলের গর্ডন ব্রাউনের রাজনৈতিক অবস্থানকে তিনি সঠিক বলে মনে করেন।
হামলার শিকার যেকোন মানুষের পাশে দাড়ানো দুনিয়াজোড়া রাজনীতিকদের প্রধান দায়ীত্ব। এটি সকল কালের, সকল দেশের জন্য প্রযোজ্য। বৃটেনের শ্রমিক দল কেনো সারা বিশ্বের এমন কোন দেশ ও কোন রাজনৈতিক দল পাওয়া যাবেনা যেখানে সাম্প্রদায়ীকতা নেই! দুনিয়ার সকল দেশের সকল রাজনৈতিক দলেই কম-বেশী সাম্প্রদায়িকতা রয়েছে। এবং থাকাটাই স্বাভাবিক। না থাকাটা অস্বাভাবিক। এ বিদ্বেষের মূল কারণ ধর্ম। ধর্মীয় বিভাজন যতদিন পৃথিবীতে কাজ করবে ততদিন কম-বেশী সাম্প্রদায়ীকতা থাকবেই।
সেই জাতিগত বা সম্প্রদায়গত বিদ্বেষ যাতে মারমুখো হয়ে খুন-খারাবির দিকে না যায় কিংবা সমাজে অশান্ত অবস্থার সৃষ্টি করতে না পারে, যে কোন রাষ্ট্র যন্ত্রের দায়ীত্ব হলো সে দিকে কঠোরভাবে নজর রাখা। এ ধরনের কোন বিদ্বেষী আচরণকে কোন অবস্থাতেই কোনরূপ ছাড় না দেয়া। হত্যা-খুনোখুনির আগেই তাকে আইনীভাবে দমন করা। এ কারণ দেখিয়ে নির্দিষ্ট কোন সাম্প্রদায়ীক সংগঠনে যোগ দেয়া কোনভাবেই কোন সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে নিয়মতান্ত্রিকভাবে জড়িত কোন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বের দ্বারা এ ধরনের পদক্ষেপ বহুমাত্রিক প্রশ্নের সৃষ্টি করে। একই সাথে এ পদক্ষেপকে শ্রমিকদলের রাজনীতির সাথে হঠকারীতার সামিল বললে ভুল হবেনা।
সাদেক খান সম্ভবতঃ নিজেও বুঝেন আর শ্রমিকদলের সাধারণ কর্মীগনও বুঝেন যে গর্ডন ব্রাউনের সাথে রাজনৈতিক প্রতিযোগীতা করতেই হয়তো তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেবলমাত্র ভোট পাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ ধর্মাবলম্বী মানুষের সাম্প্রদায়িক সংগঠনে যোগদানের ভেতর দিয়ে যে ওই বিশেষ সাম্প্রদায়ীক গুষ্ঠী ছাড়া বাকী সকল সাম্প্রদায়ীক গুষ্ঠীকে অসহায় ও দোষী প্রতিপন্ন করা হলো সে ক্ষত সারাবে কে?
শুধু ইহুদী কেনো এদেশে বহু সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে অনেক বিরুধীতা বর্তমান আছে। এ থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আছে বলেইতো এ দেশে অলিখিত আইন রয়েছে সাম্প্রদায়ীকতা ও বর্ণবাদ বিরুধী। সেই আইনের প্রয়োগ করতে হবে সৎ ও শক্তভাবে। এ সাম্প্রদায়ীকতাকে দমন করার জন্য কোন বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের কোন সংগঠনে যোগ দিতে হবে, এমন নয়। ‘জিউশ লেবার মুভমেন্ট’ নামক সংগঠনে-এ যোগ দেয়া জনিত তার এ সিদ্ধান্ত দলীয় রাজনীতি বিরুধী পদক্ষেপ এবং গোটা শ্রমিকদলের রাজনীতিকেই বরং প্রশ্নবিদ্ধ করে।