আহনাফ তাওহীদ রশীদ।।
বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র আহনাফ তাওহীদ রশীদ আসন্ন ডিসেম্বরে চতুর্দশ বর্ষে পা রাখবে। ‘কম্পিউটার এনিমেশন কার্টুন’সহ প্রযুক্তিগত বিভিন্ন খেলা তার খুব প্রিয়। আরো অনেকের মত ফুটবল তার খুব প্রিয় খেলা। একজন সুশিক্ষিত রুচিশীল পরিবেশবান্ধব কারিগরী প্রকৌশলী হতে চায় সে। দূর্গাপূজা নিয়ে তার এ লিখা জীবনের প্রথম রচনা। ইন্টারনেট ঘেটে অতি অল্প সময়ের মাঝে সে এই রচনাটি প্রস্তুত করেছে। এ প্রকাশনা তাকেই উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে।
বারো মাসে তেরো পার্বণ কথাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য প্রচলিত থাকলেও শারদীয় বা দূর্গা পূজাই বেশি আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে পালন করা হয়। দেবী দূর্গা হলেন শক্তির রূপ, তিনি পরমব্রহ্ম। অন্যান্য দেব দেবী, মানুষের মঙ্গলার্থে তার বিভিন্ন রূপের প্রকাশ মাত্র।
হিন্দু ধর্ম শাস্ত্র অনুসারে দেবী দুর্গা ‘দূর্গতি বিনাশিনী’ বা সকল দুঃখ দুর্দশার বিনাশকারিনী। পুরাকালে দেবতারা মহিষাসুরের অত্যাচারে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের শরীর থেকে আগুনের মত তেজোরশ্মি একত্রিত হয়ে বিশাল এক আলোক পুঞ্জে পরিণত হয়। ঐ আলোকপুঞ্জ থেকে আবির্ভূত হয় এক দেবী মূর্তি। এই দেবীই হলেন দূর্গা। দিব্য অস্ত্রে সজ্জিত আদ্যাশক্তি মহামায়া অসুর কুলকে একে একে বিনাশ করে স্বর্গ তথা বিশ্বলোকে শান্তি স্থাপন করেন।
শাস্ত্রে আরো আছে, দেবী দূর্গা ত্রি-নয়না বলে তাঁকে ‘ত্রৈম্বক্যে’ বলা হয়। তাঁর বাম চোখ হলো বাসনা(চন্দ্র), ডান চোখ কর্ম(সূর্য) ও কেন্দ্রিয় চোখ হলো জ্ঞান। দূর্গার দশ বাহুতে যে দশটি অস্ত্র রয়েছে, সেই অস্ত্রসমূহ বিভিন্ন প্রতীকের ইঙ্গিতবাহী। শঙ্খ, ‘প্রণব’ বা ‘ওঙ্কার’ ধ্বনির অর্থবহতা নির্দেশ করে। তীর ধনুক দেবীর শক্তিমত্তার প্রতীক। মায়ের হস্তে ধৃত বজ্রাগ্নি হলো ভক্তের সংকল্পের দৃঢ়তা। দূর্গার হাতের পদ্ম বা ‘পঙ্কজ’ অর্থ হলো পদ্ম যেমন কাদামাটির ভেতর হতে অনাবিল হয়ে ফোটে, তেমনি দেবীর উপাসকরাও যেন লোভ-লালসার জাগতিক কাদার ভেতর হতে আত্মার বিকাশ ঘটাতে পারে। দেবীর তর্জনীতে ধরা সুদর্শন চক্র তার শুভতার লালন ও অশুভের বিনাশের ইচ্ছার প্রকাশ। দূর্গার হাতে ধরা তলোয়ার জ্ঞানের ইঙ্গিত ও ত্রিশূল হলো সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ গুনের প্রকাশ।
শাস্ত্র মতে- দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও ভয়-শত্রুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা।